মন্দির নির্মাণের দাবিতে হাবিপ্রবিতে গণস্বাক্ষর
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, ১৩ই জুন ২০২৩
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) গণস্বাক্ষর কর্মসূবি পালন করছেন হাবিপ্রবি সনাতন ধর্মালম্বী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মূলত ২০১৩ সালে রিজেন্ট বোর্ডের ৩০ তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত (মন্দির নির্মাণ) বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এই আয়োজন।
সোমবার (১২ জুন) দুপুর ১ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামের সামনে তিনদিন ব্যাপী এই কার্যক্রম শুরু হয়।
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারিতে মন্দির মন্দির নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন হাবিপ্রবির সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। সেদিন (২২ জানুয়ারি, রোববার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে তারা মানববন্ধন করেন। পরে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন আশ্বাস দেয়, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে হাবিপ্রবিতে কেন্দ্রীয় মন্দির নির্মাণের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট জায়গা নির্ধারণ করা হবে। এই আশ্বাসকে কেন্দ্র করে মাঠ ছাড়েন হাবিপ্রবির সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।
এমতাবস্থায়, চলতি মাসের ২৩ তারিখ থেকে জুলাই মাসের ৪ তারিখ পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আগামী ৩০ জুনকে কেন্দ্র করে আজ থেকে তিনদিন ব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
সনাতনী শিক্ষার্থীদের দাবি, যেখানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মসজিদ, মন্দিরসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য উপাসনালয় রয়েছে। সেখানে আমাদের না থাকাটা দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় একটা আদর্শে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়। কিন্তু প্রশাসনের এবিষয়ে দীর্ঘসূত্রতা আমাদের অনেক কষ্ট দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে হাবিপ্রবিতে ও দোয়া ও মিষ্টি বিতরণ
তারা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা, দীপাবলিসহ বিভিন্ন উৎসব হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় অস্থায়ী ভাবে বিভিন্ন জায়গায় এসব ধর্মীয় পূজাঅর্চনা এবং উৎসব পালনের আয়োজন করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী দিপু রায় বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে, সনাতনী শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিকতা বিকাশের জন্য কেন্দ্রীয় মন্দির স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বাংলাদেশের ২য় সংখ্যাগরিষ্ঠ সনাতনী শিক্ষার্থী অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কেন্দ্রীয় মন্দির স্থাপিত হয়নি, এমনকি সনাতনী শিক্ষার্থীদের জোড়ালো দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের ৩০ তম সভায় মন্দির নির্মাণের জন্য “সিদ্ধান্ত বিবিধ-১” গৃহীত হলেও তা ৮ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সকল ধর্মের ধর্মীয় চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম তাই আমি মনে করি, হাবিপ্রবিতে কেন্দ্রীয় মন্দির এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হাবিপ্রবি প্রশাসন সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে হাবিপ্রবিতে অতিদ্রুত একটি কেন্দ্রীয় মন্দির বাস্তবায়ন করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী অনুকূল প্রসাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর সরস্বতী পূজা এবং দীপাবলি উৎসব হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ আবেদন করা সত্ত্বেও আমাদের একটা নির্দিষ্ট প্রার্থনার জায়গা না দেওয়ায় সুন্দরভাবে উৎসবগুলো পালন করতে পারি না।
জেবি/ আরএইচ/