শাহজাদপুরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, ১৬ই জুন ২০২৩


শাহজাদপুরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
ছবি: জনবাণী

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কাশিপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে শুরু হয়েছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। সংবাদ প্রকাশের ১৫ দিন পর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলে গত ৩ দিন যাবত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। 


প্রশাসনের দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার কামনা গ্রুপ জিও ব্যাগে বালু  ভর্তি করার জন্য নদী থেকে শ্যালো মেশিন চালিত ট্যাংকি নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। 


স্থানীয়দের দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগের কাজ ১২ জুন শেষ হয়েছে। ১৩ জুন থেকে শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র পুত্র বিএনপি নেতা সজীব ও পৌরজনা ইউনিয়নের আনিছের নেতৃত্বে গালা ইউনিয়নের কাশিপুর মৌজার মারজান ফকির গ্রামের যমুনার পূর্বপাড় থেকে অনামিকা, তায়িম ও আন্নাফী লোড ড্রেজার বসিয়ে বাল্কহেডের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। 


প্রায় ২০ টি বাল্কহেডে মাধ্যমে অবৈধ বালু চলে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ, আরিচা, চাঁদপুরে বিভিন্ন পয়েন্টে। 


অনুসন্ধানে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার কাশিপুর মৌজায় নেই কোন সরকারি ইজারা। তবু দেদারছে ৩টি ড্রেজার দিয়ে দিনরাত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। একদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, অন্যদিকে শাহজাদপুরের যমুনা নদীর তীরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। 


বালু উত্তোলনের ফলে গত কয়েক দিনে শাহজাদপুরের বেনুটিয়া, কাশিপুর, ব্রাহ্মনগ্রাম, আরকান্দি, বাঐখোলা এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনের মুখে অনেকে সরিয়ে নিচ্ছে বসতঘর।


গত ২২মে সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল ও গণমাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে সংবাদ প্রচারিত হয়। শাহজাদপুরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন। 


সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীতে সরকারিভাবে কোন বালুমহল ইজারা না হওয়া স্বত্বেও কিছু চিহ্নিত বালু দস্যূ সাবেক মেয়র পুত্র সজীব, আনিছ, মান্নান, হিরক, নাসির ড্রেজার বসিয়ে বাল্কহেডের মাধ্যমে দিনে ও রাতে কাশিপুর মৌজার মারজান ফকিরপাড়া গ্রামের যমুনা নদীর পূর্বপাড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। 


অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বেনুটিয়া ও কাশিপুর গ্রামের ফসলী জমি, বসতবাড়ী, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, পাকা রাস্তা ও সরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলমান থাকলে এলাকাবাসী সর্বশান্ত হয়ে পথে বসিবে।


আরও পড়ুন: বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা


অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী আনিছকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি শাহজাদপুরে চা খাওয়ার দাওয়াত দেন। এই বলে মোবাইল ফোন কেটে দেন।


শাহজাদপুরের সহকারি কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান বলেন, শাহজাদপুরের যমুনা নদীতে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। অভিযোগের আলোকে কাশিপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছি। আবারোও যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন জানান, মে মাসের শেষের দিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছিল। আবারোও যদি বালু উত্তোলন শুরু করলে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


জেবি/ আরএইচ/