চুল ঝরে পড়া, কিভাবে প্রতিরোধ করবেন?
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মাথা থেকে রোজই
কিছু-না-কিছু চুল ঝরে। আবার স্বাভাবিক নিয়মে তা পূরণ হয়ে যায়। কিন্তু সেটা একটু বাড়তি
হলেই দুশ্চিন্তা ও হতাশার দিকে নিয়ে যেতে পারে। ক্লিনিকগুলোতে ত্বক বিশেষজ্ঞরা দেখছেন,
মানুষের নিয়মিত উদ্বেগগুলোর একটি হচ্ছে এই অতিরিক্ত চুল পড়া।
চুলের প্রধান
সমস্যা অকালে চুল পড়ে যাওয়া। তরুণ-তরুণীরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। যুবক বয়সে এর প্রধান
কারণ অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বা টাক।
এটি জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে।
এছাড়া অ্যান্ড্রোজেন
হরমোনের কারণেও চুল পড়ে। বয়সকালেও চুল পড়ে
যায়। গর্ভাবস্থায় ও স্তন দানকালে হরমোনের একটিভিটি বেড়ে যায় বলে এ সময়ও চুল পড়ে যায়। আবার অনেক সময় ক্রাশ ডায়েটের কারণেও চুল ঝরে পড়তে
পারে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত
জানিয়েছেন আল-রাজী হাসপাতালের ত্বক ও যৌনব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. দিদারুল আহসান।
চুল পড়ার আরেকটি
কারণ অটো ইমিউন ডিজিজ। এন্টিজেন অ্যান্টিবডির
রিঅ্যাকশনে চুল পড়ে যায়। মেয়েদের জরায়ুতে টিউমার বা সিস্ট হলে চুল পড়ে।
চুলের মাথার
ত্বকে ফাংগাস ইনফেকশন থেকে চুল পড়ে যায়। খুশকির জন্য এন্ট্রি ড্রেনড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার
করা যায়। শীতে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা কমে যাওয়ার জন্য ও আবহাওয়া শুষ্ক থাকার জন্য চুল
রুক্ষ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সপ্তাহে দুই-তিনবার শ্যাম্পু করা যায়।
চুলে প্রসাধনী
ব্যবহার সারা বিশ্বেই বাড়ছে। চুলে কালার করা,
হেয়ার বন্ড্রিং, হেয়ার স্ট্রেইটনিংয়ের জন্য চুল পড়তে পারে। প্যাটার্ন অ্যালোপেসিয়ায়
হেয়ার লাইন নিচে নেমে যাবে বা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় চুল পড়ে হাল্কা বা পাতলা হয়ে যাবে।
কন্ডিশনারসহ শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভালো। চুলপড়ার ৮০-৯০ ভাগ কারণ অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া। এফডিএ অনুমোদিত মিনোক্সিডিল লোশন প্রতিদিন ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
পিআরপি থেরাপি
চুল পড়া রোধে কিংবা নতুন চুল গজানোর আধুনিক কার্যকরী পদ্ধতি। এতে রোগীর কাজ না হলে
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন করা হয়।
চুল পড়ার চিকিৎসা
শুরু করার আগে জানা দরকার ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতি আছে কি না। অনেকে কষ্টকর বা ক্রাশ
ডায়েট করেন, তারপর চুল পড়তে শুরু করে। স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য সঠিক পুষ্টি দরকার। প্রয়োজন
হলে রক্তের আয়রন, ভিটামিন ডি প্রভৃতি পরীক্ষা করে নেওয়া যায়।
ঘাটতি থাকলে
চিকিৎসক সাপ্লিমেন্ট দিয়ে তা পূরণ করার চেষ্টা করতে পারেন। চুল পড়ার অন্তর্নিহিত কারণ
আছে কিনা, সে ইতিহাস জানা জরুরি। কারণটি দূর
করার চেষ্টা করতে হবে আগে। যেমন থাইরয়েডের
সমস্যা থাকলে তার সমাধান করা জরুরি। কোনো
গুরুতর সংক্রমণের পর হয়ে থাকলে বা কেমো বা রেডিওথেরাপি দেওয়া হলে অপেক্ষা করাই বাঞ্ছনীয়। খুশকি বা ছত্রাকের সংক্রমণ থাকলে তার চিকিৎসা নিন
আগে।
চুলের সমস্যায়
যে ওষুধই ব্যবহার করুন না কেন, তা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট মেয়াদে
ব্যবহার করতে হবে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তো আছেই, তাছাড়া এগুলো তখনই ব্যবহার করতে হবে,
যখন হেয়ার ফলিকল বা চুলের গোড়ায় চুল গজানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলে নিশ্চিত হওয়া
যায়। আর চুল গজানোর জন্য সঠিক পরিবেশ (পুষ্টি, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ, সংক্রমণহীনতা,
হরমোনের ভারসাম্য প্রভৃতি) যখন তৈরি হয়।
জি আই/