কাজের প্রলোভনে রোহিঙ্গা শিশু অপহরণ, আটক ৯


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৫৩ অপরাহ্ন, ৮ই জুলাই ২০২৩


কাজের প্রলোভনে রোহিঙ্গা শিশু অপহরণ, আটক ৯
ছবি: দৈনিক জনবাণী

কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা শিশু অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় ও মানবপাচারকারি চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করেছে এপিবিএন। একই সঙ্গে অপহৃত রোহিঙ্গা ৩ শিশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে। এপিবিএন জানিয়েছে; অপহৃত অপর ৬ শিশুকে উদ্ধার ও চক্রের অন্যান্য সদস্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


শনিবার (৮ জুলাই) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়াস্থ ৮ এপিবিএনের সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ।


উদ্ধার রোহিঙ্গারা শিশুরা হল ক্যাম্প-১৩ এর ইলিয়াসের ছেলে সৈয়দ নুর (১২),  একই ক্যাম্পের সোনা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৪) ও মো: তাহেরের ছেলে আনিসুর রহমান (১৩)।


আটকরা হল নুরুল আমিন (৩২), মো. ফয়সাল (১৮), শফিকুল (১৮), সাইফুল ইসলাম (২২), মিজানুর রহমান (১৮), আব্দুর রহমান (১৭), মোহাম্মদ পারভেজ (১৪)। তারা সবাই টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দা। আর মো. মোবারক (১৭) ও মো: আমিন (১৭)। তারা উখিয়া ক্যাম্পের বাসিন্দা।


আর এখনো হদিস মিলেনি নুর আলম (১৫), সৈয়দুল মোস্তফা (১১), ওসমান (১৩), রিমন (১৫), কামাল মোস্তফা (১৪) ও হারেছ (১২)।


আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৭ খুনের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি: জড়িত সন্দেহে আটক ৬


উখিয়াস্থ ৮ এপিবিএনের সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, গত ২ জুলাই বেলা ১১টার দিকে একটি অপরাধী চক্র টেকনাফে সুপারি পাড়া ও গাড়িতে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ক্যাম্প-১৩ থেকে মোহাম্মদ হাসান (১৪), আনিসুর রহমান (১৩ ও নুর আলম (১৫) কের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাদেরকে আটকে রেখে তাদের স্বজনদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়। এরপর গত ৬ জুলাই বেলা ১২টার দিকে একই অপরাধী চক্র একই কায়দায় ক্যাম্প-১৩ ও আশপাশের এলাকা থেকে সৈয়দ নূর (১২), সৈয়দুল মোস্তফা (১১), ওসমান (১৩), রিমন (১৫), কামাল মোস্তফা (১৪) ও হারেছ (১২) কে অপহরণ করে টেকনাফ নিয়ে যায়।


মো. ফারুক আহমেদ বলেন, অপহরণের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর ৮ এপিবিএন বিভিন্ন উৎস ও স্থান গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে বের করা হয়। এরপর শুক্রবার অভিযান চালিয়ে টেকনাফের দক্ষিণ লম্বরি পাড়া দুর্গম স্থানের সুপারি বাগানের ভেতর থেকে অপহৃত রোহিঙ্গা ৩ শিশুকে উদ্ধার করা হয়। একইসাথে উখিয়ার কুতুপালং এবং টেকনাফ থানাধীন দক্ষিণ লম্বরি এলাকার বিভিন্ন দুর্গম স্থানে অভিযান চালিয়ে এই অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে আটক করা হয়। এই ৯ জনের স্থানীয় বাসিন্দা ৭ জন ও রোহিঙ্গা রয়েছে ২ জন।


আরও পড়ুন: বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ঢুকে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


“জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এ চক্রের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা হতে সুপারির কাজ/অন্য কোন কাজের প্রলোভনে টেকনাফ এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ লম্বরি এলাকায় সুপারি বাগানের ভিতরে নির্জন স্থানে বিশেষ কৌশলে আটক রাখে। অত:পর ভিকটিমদের চোরাপথে নৌকাযোগে মিয়ানমারের শামিলা এলাকায় পাঠিয়ে আটক রাখে। তারপর অপহৃতদের স্বজনদের কাছে বড় অংকের টাকা আদায় করে মুক্তি দেয়। অনেক সময় এই অপরাধ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে।”


আটকদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও বিস্তৃত তদন্তের মাধ্যমে অপহৃত অন্যান্য ভিকটিমদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানায় এপিবিএন কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ।


জেবি/এসবি