মোংলায় আশার আলো ছড়াচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:১০ অপরাহ্ন, ৯ই জুলাই ২০২৩


মোংলায় আশার আলো ছড়াচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
৪ জন নবজাতক

সরকারী হাসপাতালের সেবা মান নিয়ে রোগীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে একটা বিরুপ প্রতিক্রিয়া থাকলেও মুলত মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন আশার আলো ছড়াচ্ছে। সেবার দিক দিয়ে রোগীদের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে সরকারী এ হাসপাতালটি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকপূর্ণ নিরলস সেবায় শুধু স্থানীয়রাই নয়, দুরদুরান্ত থেকে এখন রোগীরা সেবা প্রত্যাশী হয়ে ছুটে আসছেন এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে।


৫০শয্যার এ উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে ডাঃ মোঃ শাহীন যোগদানের পর থেকে পাল্টে যেতে শুরু করে হাসপাতালের বেহাল দশার। চলমান চিকিৎসক-কর্মচারী সংকটের মধ্যেও তিনি চালু করেছেন দীর্ঘ এক যুগ ধরে বন্ধ থাকা অপারেশন থিয়েটারটি। দীর্ঘ এক যুগ পর গত ১লা জুন অপারেশন থিয়েটার চালুর প্রথম দিনেই দুইজন প্রস্তুতির নিরাপদ সিজার  সম্পন্ন হয়। তারপর থেকে নিয়মিত প্রতি সোমবার হাসপাতালে চলছে ডেলিভারি সিজারসহ অ্যাপেনডিকস, হার্নিয়া ও হাইড্রোসিল অপারেশনও।

 

এদিকে গত শুক্রবার ছুটির দিনেও পরপর ৪জন প্রসুতির নরমাল ডেলিভারি করিয়েছেন হাসপাতালের মিডওয়াইভস ও সিনিয়র ষ্টাফ নার্সেরা। এদিন নরমাল ডেলিভারি করানো হয় উপজেলার বাঁশতলা এলাকার আয়েশা বেগম, বাজিকরের খন্ডের লিমা বেগম, মালগাজীর ফাতেমা বেগম ও পৌরসভার বালুরমাঠের তানজিলা বেগমের।  


হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার চালুর আগে এখানকার প্রসুতিদেরকে স্থানীয় অনভিজ্ঞ প্যাথলজি কাম ক্লিনিকগুলোতে সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তী পোহাতে হতো। সেখানে নরমাল প্রসুতি রোগীরা গেলেও সিজার করতে বাধ্য করা হতো। আর সিজার করাতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ ও আর্থিক কষ্টে পড়তেন দরিদ্র শ্রেণীর পরিবারগুলো। কখনও কখনও তাদেরকে নরমাল ডেলিভারি ও সিজার করাতে নিতে হতো খুলনা ও বাগেরহাটে। ফলে ভোগান্তী ও অর্থ ব্যয়ে পড়তেন রোগীরা। 


কিন্তু হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার চালুর পর থেকে রোগীদের কাছে এখন আস্থা ও আশার আলোতে পরিণত হয়েছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নামমাত্র স্বল্প খরচে শুধু সিজারই নয় নানা অপারেশন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, রোগী দেখা ও ওষুধ সরবাহের পর্যাপ্ততায় স্থানীয় রোগীদেরকে এখন আর খুলনা-বাগেরহাট যেতে হচ্ছেনা। ফলে হাসপাতালটিতে বাড়ছে রোগীর চাপও। চাহিদানুযায়ী জনবল না থাকার পরও স্বপ্ল সংখ্যক চিকিৎসক-কর্মচারী দিয়ে আন্তরিকপূর্ণ নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 


উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শাহীন বলেন, হাসপাতালে ২৮জন চিকিৎসকের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৭জন। ৭জনের মধ্যে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নেই। তারপরও কম সংখ্যক জনবল নিয়ে আমরা দিন-রাত সমানে সেবা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের নিয়মিত ও নিরলস সেবায় রোগীরা এ হাসপাতালের প্রতি আস্থা ফিরে পেয়েছেন। এ উপকূলের বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে আমাদের ষ্টাফেরা ডিউটির বাহিরেও কাজ করছেন। হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স, মিডওয়াইভসসহ অন্যান্য কর্মচারীরা আন্তরিক হওয়াতেই আমরা কম জনবল দিয়েও প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যেতে পারছি। 


আরএক্স/