সখীপুরে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণে ১ জনের স্বীকারোক্তি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, ৫ই আগস্ট ২০২৩


সখীপুরে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণে ১ জনের স্বীকারোক্তি
ছবি: জনবাণী

টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া পাঁচজনই বিবাহিত ও বাউন্ডুল ধরনের ও একজন ছাত্র। 


শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। 


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মোজাম্মেলের (৩০) নামে থানায় রয়েছে দুটি মামলা। ২০১৯ সালের ৫ মার্চ ইলেকট্রনিক শো-রোমে একটি চুরির ঘটনা এবং ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বরে কচুয়া হাজী চৌরাস্তায় মারামারির ঘটনায় অপর মামলা হয়। 


বর্তমানে তিনি মাঝেমধ্যে স্থানীয় একটি স-মিলের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়া অধিকাংশ সময় তাঁর নেতৃত্বেই স্থানীয় কয়েকজন যুবক বাউন্ডলেভাবে ঘোরাফেরা করেন। অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক কচুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের সমেশ আলীর ছেলে। 


একই দিন সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া বুলবুল (২৪) তেমন কাজকর্ম করেনা, বাবা হজরত আলী অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ও বোন প্রবাসী। মূলত বাবা ও বোনের দেওয়া অর্থেই চলে তাঁর সংসার।গ্রেফতার হওয়া লাবু (২৬) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। কোথাও ডাক পেলে কাজ করেন, না পেলে ঘুরে ফিরে দিন কাটায়। ফরহাদ আলীর ছেলে মুহাম্মদ বাবুলও (৩০) স-মিলের খন্ডকালীন শ্রমিক। অপর আসামি শফিক আহমেদ (২৫) প্রবাস থেকে ফিরে একটি কোম্পানির আঞ্চলিক ডিলারশিপ নিয়েছেন। শফিক আহমেদ রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত সে নিজেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও যুবলীগের সমর্থক বলে ইতিপূর্বে পোস্টারও ছেড়েছেন। 


তবে কালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহ আলম মিয়া এ বিষয়ে বলেন,শফিক যুবলীগের সঙ্গে জড়িত নয়। 


অপরদিকে এই মামলার সর্বকনিষ্ঠ আসামি আসিফ (২৩) স্থানীয় সরকারি মুজিব কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আগামী ১৭ আগস্ট থেকে তাঁর পরীক্ষা শুরু। প্রতিবেশীরা জানান, আসিফ এই কাজের সঙ্গে জড়িত আমরা তা বিশ্বাস করতে পারছি না। সম্ভবত সে সঙ্গদোষের শিকার হয়েছে। 


এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন , গ্রেফতার হওয়া যুবকদের মধ্যে অধিকাংশই কাজকর্ম ফেলে এলাকায় এলোমেলো ভাবে ঘোরাফেরা করে। এদের কেউ কেউ চুরি ও মাদকের সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। 


এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর থানার ওসি (তদন্ত) ও ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন বলেন, গ্রেফতার করা ছয়জনের মধ্যে আসামি মোজাম্মেল হক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। 


সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম বলেছেন। অন্য আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে পুলিশ।


উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সন্ধ্যার পরে এক গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হন। উপজেলার কচুয়া গ্রামের চাঁদেরহাট নামক স্থানীয় একটি বিদ্যাপীঠের ২-৩ শত মিটার উত্তরে আজগরের জঙ্গল নামে পরিচিত একটি গজারি বনে এ ঘটনা ঘটে। 


ঘটনার রাতেই গৃহবধূর স্বামী সখীপুর থানায় মামলা করলে পুলিশ স্থানীয় ৬ যুবককে গ্রেফতার করে।


আরএক্স/