মজুরি বাড়াতে চা-শ্রমিকদের স্মারকলিপি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫২ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৩


মজুরি বাড়াতে চা-শ্রমিকদের স্মারকলিপি
চা বাগান। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে চা শিল্পের জন্য নিন্মতম মজরী বোর্ডের প্রকাশিত গেজেটটি পুণঃবিবেচন ও শ্রমিক বান্ধব গেজেট করার দাবিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর মনু-দলই ভ্যালী কার্যকরী পরিষদ (বাচাশ্রই) উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শ্রম প্রতিমন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি পেশ করেছে।


বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালী কার্যকরী পরিষদ (বাচাশ্রই)এর সভাপতি ধনা বাউরির নেতৃত্বে চা শ্রমিকরা কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিনের নিকট তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে স্মারক লিপির কপি হস্তান্তর করেন।


এসময় আরো উপস্থিত সংগঠনের সহ-সভাপতি গায়েত্রি রাজভর, সাধারন সম্পাদক নিরর্মল দাস পাইনকা, শ্রমিক নেতা বাবুল মাদ্রাজি, নূরজাহান চা বাগান সভাপতি বিকস কানু,ডেবল ছড়া চা-বাগান সভাপতি সঞ্জু তাঁতি, ফুলবাড়ি চা বাগান সভাপতি মনোরঞ্জন,মদন মহনপুর চা বাগান সভাপতি উমা সংকর গোয়ালী, সাধারন সম্পাদক শ্রীকান্ত কানু মাঠ কর্মী চা নেতা সংকর তাঁতি, ভ্যালির অফিস সহকারী রাজীব কৈরী সহ উপজেলার ২৩ চা বাগানের নেতৃবৃন্দ ও শতাধিক চা শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।


স্মারকলিপিতে তারা, চা শিল্পের রীতি অনুযায়ী টি গার্ডেন শিল্প সেক্টরের চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিত্বকারী বাংলাদেশ চা সংসদ প্রতি ২ বছর অন্তর অন্তর মজুরী ছাড়াও উৎপাদনশীলতাসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতে সিন্ধান্ত গ্রহন করার আহবান জানান।


মনু-দলই ভ্যালী কার্যকরী পরিষদ এর সাধারন সম্পাদক নিরমল দাস পাইনকা বলেন,‘বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের ২১ টি উপজেলায় গত ১০আগষ্ট নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশে প্রকাশিত চা শ্রমিক ও ট্রেড ইউনিয়ন বিরোধী গেজেট বাতিল ও চা শ্রমিক বান্ধব গেজেট প্রকাশের দাবিতে (বাচাশ্রই)এর পক্ষে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।


বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালী কার্যকরী পরিষদ (বাচাশ্রই) এর সভাপতি ধনা বাউরির বলেন, ‘গত ১০ আগস্ট চা শিল্পের জন্য সরকারের নিন্মতম মজুরি বোর্ড একটি গেজেট প্রকাশ করে। গেজেটে বছরে মাত্র ৫ শতাংশ হারে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কথা বলা হয়। কিন্তু বর্তমান বাজারে বছরে দ্রব্যমূল্যের দাম ৪০-৫০ শতাংশ বাড়ে। সেখানে শ্রমিকরা কিভাবে খেয়ে পরে বেচে থাকবে। মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তিনটি শ্রেনীতে শ্রমিকদের জন্য ১৭০ টাকা, ১৬৯ টাকা, ১৬৮ টাকা ঘোষনা করেছে। যেখানে কিছুদিন আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ১৭০ টাকা নির্ধারণ হয় সেখানে ১৬৯ ও ১৬৮ টাকায় নামিয়ে আনার বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।


তিনি আরোও বলেন,গেজেটে বলা হয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ও পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা চলমান থাকবে। বাস্তবে দেখা যায় ৭০০ শ্রমিকের জন্য একজন এমবিবিএস ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও প্রায় চা বাগানে ডাক্তারই নেই। ৫ থেকে ৭টি চা বাগান মিলিয়ে একজন ডাক্তার থাকে যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়। 


তিনি বলেন, দেশে চায়ের উৎপাদন এখন প্রায় তিন গুন বেড়েছে। কিন্তু চা বাগানে স্থায়ী শ্রমিক ও অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি। মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি হয় নি। এসব বিষয় বিবেচনা করে গেজেট প্রকাশ করা উচিৎ। আমরা বিষয়গুলো পুনঃবিবেচনা করে শ্রমিকবান্ধব গেজেট করার দাবী জানাই।


আরএক্স/