খাগড়াছড়িতে দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয়


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৩২ অপরাহ্ন, ১৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৩


খাগড়াছড়িতে দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয়
খাগড়াছড়িতে দ্বাদশ নির্বাচন প্রার্থীরা

অবাদ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হওয়ার প্রত্যাশায় খাগড়াছড়িতে দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ১টি আসন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৯টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভার বিশাল এলাকাজুড়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। কোন্দলে জর্জরিত আওয়ামী লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এগুচ্ছে একক প্রার্থী নিয়ে। তবে বিএনপি নির্বাচনে যাবে কিনা এই নিয়ে রয়েছে সন্ধেহ।


জানা যায়, আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কংজরী চৌধুরী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা জেলা সদর ও উপজেলাগুলোতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরছেন। নিজেদের প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বক্তব্যও দিচ্ছেন। সম্ভাব্য আওয়ামী প্রার্থীদের এসব তৎপরতায় দলীয় কোন্দলের চাপ সুস্পষ্ট এবং রাজনৈতিক উত্তাপ রয়েছে। এদিকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার  সাবেক মেয়র রফিকুল আলম আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারে বলে জানা যায়।


স্বাধীনতার পর থেকে বিগত ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে সর্বাধিক নির্বাচিত হয়েছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। সে হিসাবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আসনটি জয়ে ভালো অবস্থানে থাকলেও যদি বিএনপি ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করে তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য বুমেরাং হতে পারে নির্বাচনের ফল।


জানা যায়, জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এর জেলা পর্যায়ে দলটির সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ মনোনয়ন পান খাগড়াছড়ি আসনে। তখন থেকেই পাল্টে যেতে থাকে জাতীয় পার্টির তৎপরতাও। আগামী নির্বাচনেও সোলায়মান আলম শেঠই দলের মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করেন সাধারণ নেতাকর্মীরা।


খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ এর আঞ্চলিক রাজনীতিকে বেশ শক্তিশালী বলে ধরা হত। তবে তাদের এই শক্তিশালী বাহুতে সম্প্রতি ঘুণ ধরেছে বলে অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন। রাষ্ট্রদ্রোহ, স্বৈরচার, চাঁদাবাজি, দুর্নীতিসহ অসংখ্য অভিযোগ এনে গত বছরে ইউপিডিএফ'র মূল দল ভেঙে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে অন্য একটি আঞ্চলিক দলের সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে সংগঠনটি। এছাড়াও জেএসএস থেকেও প্রার্থী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপরীতে এই দলের প্রধান প্রসিত বিকাশ খীসা অংশ নিয়ে জেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি ইউপিডিএফ থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।


আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, ‘সংগঠন ও এলাকার জনগণ যে লক্ষ্য নিয়ে আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছে, সেই লক্ষ্য তথা এলাকার উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনবান্ধবই বলেন, আর দলবান্ধবই বলেন, আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকেই মনোনীত করবেন, তাঁর পক্ষেই আমি অতীতের মতো সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করবো।’


মাঠ পর্যায়ে জরিপে বুজা যাচ্ছে, ‘বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ভালো অবস্থায় আছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকেই। তবে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন না হলে বিএনপি অংশ গ্রহন করবে না বলে সভা সমাবেশে ও কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূেিত তাই বলা হচ্ছে।

 

জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বলেন, ‘এরশাদের শাসনামলেই পাহাড়ে বিদ্যুৎ, সড়ক, উপজেলা পরিষদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণসহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনে এসব বিষয়কে সামনে রেখেই মেনোফেস্টো প্রণয়নের কাজ চলছে।’ আগামী দ্বাদশ নির্বাচনে বড়ো দুই দলের ধাক্কাধাক্কি এবং আঞ্চলিক দলের চাপাচাপির ফলে লাঙ্গল-ই জয়ী হবে।’


এছাড়াও খাগড়াছড়িতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), জাসদ ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আরএক্স/