কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা, হাজারো মানুষের ভীড়


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৪৮ অপরাহ্ন, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩


কালীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা, হাজারো মানুষের ভীড়
ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের উপজেলার বড়ধোপাদি গ্রামে, ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা শুরু হয়েছে । চলবে ৭ দিন  পর্যন্ত।


মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন জানান,ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলা কেবল মাত্র এ জনপদের মানুষের মেলা নয়। দেশ ও দেশের বাইরে এ মেলার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার এ মেলা শুরু হয়। মেলা শুরুর  আগে থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাবসায়ীরা আসতে শুরু করেন।


কোন রকম প্রচার বা মাইকিং ছাড়াই ৭/৮ দিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় মেলা। চলে ৭/১০ দিন। বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার কারণে গত দুই বছর মেলা বসেনি।এবছর জাকজমকপূর্ণভাবে মেলা বসবে বলে এলাকাবাসির প্রত্যাশা।


উপজেলার রাখাল গাছী ইউনিয়নের বড়ধোপাদি গ্রামে, গ্রামে এ এলাকার বিখ্যাত পীর বলু দেওয়ানের মাজারশরীফকে ঘিরে বসে এ মেলা।


বিখ্যাত পীর বলুহ দেওয়ান (রঃ) এই পীরের রওজা শরীফ। এ রওজা শরীফকে ঘিরে প্রতি বছর বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার শুরু হয় ওরশ ও মেলা। মেলাতে ঢল নামে দেশের বিভিন্ন জেলার সাধারণ ব্যবসায়ীদের।


রাখাল গাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মনটু বলেন, পীর বলুহ কেবল মাত্র আমাদের এলাকার ঐতিহ্য নয় তিনি আমাদের দেশের গৌরব। বংশ পরম্পরায় যুগযুগ ধরে এই পীরের রওজা শরীফকে ঘিরে ওরশ ও মেলা চলে আসছে।


নিদিষ্ট কোন জায়গা না থাকায় রওজা থেকে শুরু করে গ্রামের মধ্যে পড়ে থাকা মালিকানা জমি ও রাস্তার দু ধারে বসে মেলার দোকানের শারি।  পীরের রওজাকে ঘিরে ওরশ ও মেলা বসে। এই মেলার পরিচিতি দেশের গন্ডিপেরিয়ে বিদেশেও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।


যাকে ঘিরে এতো কিছু সেই পীর বলুহ দেওয়ান (রঃ) সম্পর্কে এলাকায় ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে। বয়ষ্করা জানান, পীর বলুহ দেওয়ান (রঃ) এর জন্ম সাল বা তারিখ কারো জানা নেই। তবে তার জন্ম  কালিগঞ্জ উপজেলার বড় ধোপাদি গ্রামে, তার পিতার নাম ছুটি বিশ্বাস।


 চরম দারিদ্রতার সংসারে জন্ম নেয়া বলুহ খুব ছোট বেলায় হাজরাখানা গ্রামে মামার বাড়িতে চলে যান।


বলুহর মামারাও গরীব ছিলেন। তাই বলুহ মামার বাড়ীতে থেকে অন্যের বাড়িতে ও ক্ষেত খামারে কাজ করতেন। একদিন বাড়ি ওয়ালা বলুহকে বেদন বিলের মাঠে গরু চরাতে বলেন, বলুহ গরু মাঠে নিয়ে অন্যের ফসলের ক্ষেতে ছেড়ে গাছের নিচে বিশ্রাম করছিলো। ক্ষেত মালিক এসে গরুগুলো খোয়াড়ে নেয়ার জন্য রওনা হয়।


বলুহ তখন গরু গুলো বক বানিয়ে গাছের উপর বসিয়ে রাখেন। একদিন খেজুরের গুড় জ্বালাতে বললে তিনি জলন্ত চুলায় খড়ি না দিয়ে নিজের একটি পা ঢুকিয়ে দেন, এক দিন তাকে শরীষা মাড়ায় করতে বললে শরীষার গাদায় আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ছায় করে দেন। পরে তাকে বকা-ঝকা করলে তিনি ছায় বাতাসে উড়িয়ে শরীষা বের করে দেন।


এ ধরনের অসংখ্য অলৌকিক কিংবদন্তি রয়েছে তাকে ঘিরে। যে কারণে তিনি পীর উপাধি পান।


এ বিষয়ে বলুহ মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তি যুধদা সুলতান বলেন মেলায় কোন ধরনের অশ্লীলতা আমরা হতে দেব না।


আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।


আরএক্স/