পঞ্চগড়ে পেঁয়ারার চাষ অর্থনীতিতে বাড়তি মুনাফা প্রায় ছয় শত কোটি টাকা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:০৯ অপরাহ্ন, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৩


পঞ্চগড়ে পেঁয়ারার চাষ অর্থনীতিতে বাড়তি মুনাফা প্রায় ছয় শত কোটি টাকা
পেঁয়ারা। ছবি: জনবাণী

পঞ্চগড়ে পেঁয়ারা চাষে সূচিত হয়েছে নতুন মাত্রা। স্থানীয় অর্থনীতিতে যোগান বেড়েছে প্রায় ছয়শত কোটি টাকা। আমদানীকৃত ফলে চাপ কমেছে। চাহিদা পূরণে সফলতা ও এসেছে।তবে এখন বানিজ্যিক ভাবেই উৎপাদিত হচ্ছে এই পেঁয়ারা।


পঞ্চগড় জেলার এসব চাষ করা জমিতে গিয়ে দেখা যায়, ফলন বেশ ভালো। দেশি পেঁয়ারা চাষ একেবারে কমে যাওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে এই পেয়াঁরার চাষ। 


এজেলার কর্মরত কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় লাভজনক ও ফলন ভালো হওয়ায় সারা বছর চাষ হচ্ছে পেঁয়ারা।দোয়াশ মাটিতে এ ফলটির ভালো ফলন হয়। আর পঞ্চগড়ের মাটিও দোঁয়াশ এতে চাষীদের মাঝে উৎসাহ বেড়েছে পেঁয়ারা চাষে।পরিমিত মাত্রায় সার,কীটনাশকের পাশাপাশি জৈব সার দিলে ফলন আরো বেশি হয়।


পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বীরপাড়ায় সাতাইশ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষ করা হচ্ছে এই পেয়ারার চাষ। বর্গা চাষী বিপ্লব সর্দার বলেন আমরা কয়েজন মিলে পাঁচ বছরের জন্য এই জমি বর্গা নিয়েছি। তারা নাটোর থেকে এসেছেন।গাছ লাগানোর ছয় মাস পর পেঁয়ারার ফলন আসে। 


ফলের কলি ফাটলে ফলন আসে‘তবে ছয় মাস পর গাছ শক্ত হয় তখন ফল তোলা সবচেয়ে ভালো। পরির্চ্যার ক্ষেত্রে সার,কীটনাশক(স্প্রে) ব্যবহার করতে হয় সময় মতো। জমির মালিককে বছলে বিঘা প্রতি তেরো হাজার টাকা দিতে হয়।


তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফলন ভালো হলে প্রতিদিন ত্রিশ মন থেকে ষাট মন পেঁয়ারা তোলেন বাগান থেকে। শুরুর দিকে ত্রিশ ,কুড়ি টাকা কেজি দরে পেয়াঁরা বিক্রি করেছেন। তবে বাজারে চাহিদা বেশী হওয়ায় প্রতিকেজি পেঁয়ারা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে পঞ্চাশ টাকা।


চাষী বিপ্লব সর্দার জানান, ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ এককোটি টাকার পেঁয়ারা। আর যদি তেমন ফলন না হয় তা কমে আসবে ষাট থেকে পঞ্চাশ লাখ টাকা। তারা থাই জাতের পেঁয়ারা যেমন; এসডি, ফাইভ, থাই থ্রিও গোল্ডেন এইট চাষ করেছেন। তবে প্রায় ক্ষেতে দুই তিনটি পেঁয়ারা এককেজি হয়।এছাড়া এককেজি ও আটশত গ্রামএর পেঁয়ারাও ফলন হয়। পেকা মাকড় তেমন না লাগলেও মাছি পোকা লাগে এই পেয়াঁরায়। সে কারনে পলিথিন দিয়ে পেঁয়ারা গাছেই মুড়িয়ে রাখা হয়। তাদের পেঁয়ারা বাগানে কাজে নিয়োজিত রয়েছেন দশ থেকে বারো জন শ্রমিক। 


এদিকে আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দেলওয়ার হোসেন জানান, তিনি ইউনিয়নের চুচুলি এলাকায় সতের বিঘা জমিতে পেঁয়ারা চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে তেইশ লাখ টাকা। তবে তার ব্যস্ততার কারনে সেটি এখন লীজ দিয়েছেন। তিনি বলেন , ফলন ভালো হয় লাভও বেশ ভালো।


এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় এবারে একশত দুই হেক্টর জমিতে পেঁয়ারার চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন হয়েছে তেরো শত মেট্রিক টন। প্রতি কেজি পঞ্চাশ টাকা হলে যার মূল্য দাঁড়ায় ছয় কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা।কেজিতে উৎপাদন হয়েছে তেরো লাখ কেজি।


জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দীন বলেন ‘পেঁয়ারা সাইজ পরিচর্য্যার উপড় নির্ভর করে।পেঁয়ারা লাভজনক ফসল যা সারা বছর চাষ হয়।শীত ও গরম সহ বারো মাসেই এর চাষ হয়।দোঁয়াশ মাটিতে পেয়াঁরার ফলন বেশী হয়। আর পঞ্চগড়ের মাটিও দোঁয়াশ।ফলন ও ভালো এতে স্থানীয় চাহিদা পূরণ হচ্ছে। তবে এই কর্মকর্তা জানান মাটি ব্যবস্থাপনা ওজমিতে পরিমিত সার কীটনাশক ব্যবহারে পাশাপাশি জৈব সারও ব্যবহার করতে  হবে।


আরএক্স/