বিশ্ব অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


বিশ্ব অর্থনীতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব

সভ্যতার বিকশিত সময় ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগেও মনুষ্য সমাজে সহিংসতা, রক্তপাত, হানাহানি, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসাপরায়ণতা আর উন্মাদনার যে চিত্র প্রায় নিত্য ফুটে উঠছে, এতে মানবতা আজ বিপন্ন। পৃথিবীতে মানুষের যা কিছু উদ্যোগ-উদ্যম, সবকিছুই শান্তিতে বেঁচে থাকার লক্ষ্যকে ঘিরে আবর্তিত হয়। পৃথিবী সুখময় না দুঃখময় এ নিয়ে তাত্ত্বিক বিতর্ক হতে পারে কিন্তু এ কথা সন্দেহাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত যে বিশ্বে নিরাপদে বেঁচে থাকার সাধনাতেই মানুষ নিজেকে ব্যস্ত রাখে। জানমালের নিরাপত্তা সহকারে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার দুর্নিবার আকাক্সক্ষা মানুষের মধ্যে থাকাটাই স্বাভাবিক। শান্তির পূর্বশর্ত সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও ঐক্য-মৈত্রী মানবতার সৌন্দর্য। অথচ শান্তি শব্দটি যত সহজে উচ্চারণ করা যায়, বাস্তবে এর প্রতিষ্ঠা শতসহস্র গুণ কঠিন। তাই মানুষকেও অবতীর্ণ হতে হচ্ছে কঠিন পরীক্ষায়।এমনিতেই করোনা বিধিনিষেধের অর্থ, অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব। ২০২২ সালে কি তেমন পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে, সম্ভবত এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, বছরের শেষ প্রান্তে আমেরিকার মূল্যস্ফীতির হার থাকবে ২ শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে সেই হার গিয়ে ঠেকেছে ৭ শতাংশে।কোভিড মহামারির দুই বছর পূর্ণ হতে চলেছে, কিন্তু এখনো এই মহামারি থেকে পাকাপাকিভাবে মুক্তির আভাস মিলছে না। এর মধ্যেই আবার শুরু হয়েছে ভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রনের প্রকোপ। চীনসহ বিশ্বের বড় অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গতিপথই-বা কেমন হবে এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কি আরও নিম্নমুখী হবে, মূল্যস্ফীতি কি আকাশ ছোঁবে-আপাতত এসব প্রশ্ন নিয়েই ঘুরপাক খাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি।সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, গত দুই বছর মহামারির দাপটে ম্রিয়মাণ থাকার পর ২০২২ সালে বিশ্ব অর্থনীতি মাথা তুলে দাঁড়াবে কি না।অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে এই তিন বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনের অর্থনীতির ভালোমন্দ।

এদিকে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রন নিয়ে বিশ্বে তোলপাড় চলছে। আগের ধরনগুলোর তুলনায় অমিক্রন যে আরও বেশি ছোঁয়াচে, তা প্রাথমিকভাবে বোঝা গেছে। কিন্তু তার ধ্বংসকারী ক্ষমতা কি করোনা ভাইরাসের ডেলটা ধরনের চেয়ে বেশি? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হয়তো আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।অমিক্রন মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। করোনা বিধিনিষেধের অর্থ, অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব। ২০২২ সালে কি তেমন পরিস্থিতি আবার ফিরে আসবে, এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তার উপর ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান যেমন জানমালের ক্ষতি হবে, তেমনি প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমান সংকট যদি সংঘাতের দিকে মোড় নেয়, তাহলে গম থেকে শুরু করে জ্বালানির দামে এর প্রভাব পড়বে। অস্থিরতা দেখা দেবে অর্থনীতির অন্যান্য খাতেও। কিন্ত ইউক্রেন ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার লড়াই শুরু হলে বিশ্ববাজারে যে প্রভাব পড়তে পারে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে।খাদ্যশস্য ও গম: ইউক্রেনে হামলা হলে বাধার মুখে পড়তে পারে কৃষ্ণ সাগর দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজের চলাচল। এর প্রভাব হবে মারাত্মক। এতে এ পথ দিয়ে আমদানি-রপ্তানি করা খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। করোনা মহামারির কারণে এর মধ্যেই বিশ্বের অনেক অঞ্চলের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। ফলে নতুন করে খাদ্যের দাম বাড়লে তা সংকট বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।খাদ্যশস্যের অন্যতম চার রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেন, রাশিয়া, কাজাখস্তান ও রোমানিয়া। এই দেশগুলোর পণ্য রপ্তানি হয় কৃষ্ণ সাগরের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে। গম রপ্তানির দিকে দিয়ে বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া।প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেল: রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করবে, এ আশঙ্কা সত্যি হলে সংকটে পড়বে জ্বালানির বাজার। অথচ ইউরোপের ৩৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা মেটে রাশিয়া থেকে। 

তাই রাশিয়া থেকে বেলারুশ ও পোল্যান্ডের মধ্য দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। নর্ড স্ট্রিম ১-এর মাধ্যমে সরাসরি রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস যায়। অন্যদিকে ইউক্রেনের ভেতর দিয়েও ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করে মস্কো।এদিকে নর্ড স্ট্রিম ১-এর পর এবার নর্ড স্ট্রিম-২ পাইপলাইন নির্মাণের পথে হাঁটছে রাশিয়া ও জার্মানি। নতুন এই প্রকল্প চালু হলে ইউরোপে যেমন রাশিয়ার গ্যাসের আমদানি বাড়বে, তেমনি জ্বালানির ক্ষেত্রে মস্কোর ওপর আরও নির্ভরশীল হয়ে পড়বে এ অঞ্চল। তবে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে এই প্রকল্প আর সামনের দিকে এগোবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বার্লিন।২০২০ সালে করোনার ধাক্কায় ইউরোপে গ্যাসের চাহিদা পড়ে যায়। এতে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ে রাশিয়া। গত বছর চাহিদা বাড়লেও, ক্ষতি পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি। ক্ষতি কাটাতে গ্যাসের দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়ানো হয়।বিশ্লেষকেরা বলছেন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এলে গ্যাসের দাম আরও বাড়তে পারে। কারণ, এমনটি হলে ইউক্রেন ও বেলারুশের মধ্য দিয়ে পশ্চিম ইউরোপে গ্যাসের সরবরাহ কমে আসবে।আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান বলছে, সংঘাত শুরু হলে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১৫০ মার্কিন ডলারে দাঁড়াতে পারে। ফলে বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াতে পারে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশে। একই সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৭ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে।ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের ঘোষণার পরই টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি। রুশ অভিযান শুরুর খবরে বুধবার আন্তর্জাতিক বাজারে ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম। বড় দর পতন হয়েছে এশিয়া, ইউরোপ এবং মার্কিন শেয়ারবাজারে। বিশ্বব্যাপী বেড়েছে স্বর্ণ, ডলার এবং ডিজিটাল মুদ্রার দামও।রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার এতদিনের উত্তেজনা এবারে পরিণত হয়েছে যুদ্ধে। 

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়ে সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের উপর কয়েক দফা হামলা চালায় রাশিয়া। ইউরোপের দুই দেশের এই যুদ্ধে বিশ্ব অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর খবরে ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো ১০০ ডলার ছাড়িয়েছে জ্বালানি তেলের দাম।আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে সকাল পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুডের দাম সাড়ে ৪ ভাগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০১ ডলার ৩৪ সেন্টে। আর যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হয়েছে ৯৬ ডলার ৩২ সেন্টে।সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বেশি জ্বালানি তেল রপ্তানি করে রাশিয়া। প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনেও এগিয়ে এই দেশ।ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ এবং রাশিয়ার উপর বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বব্যাপী তেল ও গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।এদিকে, জ্বালানি তেলের বাজারের এ পরিস্থিতিতে আস্থাহীনতায় এই খাতের বিনিয়োগকারীরা। লোকসান থেকে বাঁচতে এখন নিরাপদ বিনিয়োগ করছেন তারা।ফলে বাড়তি চাহিদায় বিশ্ব বাজারে বেড়েছে স্বর্ণের দাম। ২ ভাগ বেড়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯৪৪ ডলারে। একই সাথে বেড়েছে রুপার দামও।রাশিয়ার অভিযানের ঘোষণায় বড় দরপতনের কবলে এশিয়ার পুঁজিবাজার। দুপুর নাগাদ হংকংয়ে সূচক কমেছে ৩.২ ভাগ, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২.৭, জাপানে ২.৪, চীনে দশমিক ৯ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় সূচক কমেছে ৩.২ ভাগ। এদিকে মার্কিন শেয়ারবাজারে ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল সূচক কমেছে ৭৮০ পয়েন্ট। এস এন্ড পি ৫০০ কমেছে ২.৩ এবং নাসডাক সূচক কমেছে ২.৮ ভাগ। বিশ্ব অর্থনীতির চলমান সংকটে বেড়েছে ডলারের দামও। রাশিয়ার মুদ্রা রুবল মার্কিন ডলারের বিপরীতে দর হারিয়েছে ১০ ভাগ। অন্যদিকে, এক মাসে প্রথমবারের মতো বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৩৫ হাজার ডলারের নিচে।বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে কোন দেশ কার সঙ্গে ব্যবসা করছে, সেটাই যে শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ তা নয়। 

বিশ্বে যদি কোন পণ্যের দাম বেড়ে যায়, তাহলে সেটা ব্যবহারকারী সব দেশের ওপরেই তার প্রভাব পড়ে।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকেই তার সাথে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এর মতো বড় প্রকল্পের কাজ চলছে রাশিয়ার সহায়তায়। তবে রাশিয়ার ওপরের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে এসব প্রকল্পে কোন প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন না বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। রাশিয়া থেকে সামরিক সরঞ্জামও কেনে বাংলাদেশ।কূটনীতিকরা বলছেন, বৈশ্বিক একটি পরাশক্তি হিসাবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বিশ্বের দেশগুলোর ওপর নানাভাবে পড়বে।একটা যুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন বহুমুখী সমস্যার সৃষ্টি করে। সেটা শুধু সেই দুইটা দেশ বা জোটের মধ্যে থাকে না, প্রত্যেকেই অ্যাফেক্টেড হয়। বাংলাদেশের ওপর কি বা কতটা প্রভাব পড়তে যাচ্ছে, তা হয়তো এখনো পরিষ্কার নয়। কিন্তু বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর বিরোধে বাংলাদেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য এখনই সতর্ক হতে হবে। অর্থনীতিবিদ এবং কূটনীতিকরা বলছেন, খুব তাড়াতাড়ি হয়তো রাশিয়া সংকটের বড় প্রভাব বাংলাদেশে দৃশ্যমান হবে না। কিন্তু এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার আওতা আরও বাড়লে বাংলাদেশ কী করবে, বাংলাদেশকে সেই আগাম পরিকল্পনা নিয়ে রাখতে হবে।এছাড়া এই যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বাড়ছে, সেটারও একটা প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপরে পড়বে।যুদ্ধের কারণে পণ্যবাহী জাহাজগুলো এখন কৃষ্ণসাগরে যেতে চাইছে না। ফলে রপ্তানিকারকরাও চিন্তার মধ্যে পড়েছেন।ইউক্রেনের ওপর হামলার জের ধরে এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপানসহ একাধিক দেশ রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যার বেশিরভাগই অর্থনৈতিক। এই যুদ্ধের প্রভাবে এর মধ্যেই বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম।সূর্যমুখী তেল, ভুট্টা, গম ইত্যাদি খাদ্য পণ্যের বাইরে প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। ফলে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।
এই যুদ্ধের দ্রুত সমাধান না হলে এই সংকটের বড় প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরেও। 

আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তো চিন্তার কারণ আছেই, কারণ জ্বালানি তেলের মূল্য এর মধ্যেই বাড়ছে। সেটা বাড়লে যানবাহন, কৃষি-সবকিছুর ওপর প্রভাব পড়ে।প্রভাবটা কতো ব্যাপক হবে, সেটা নির্ভর করবে এই সংকট কতদিন ধরে চলে, তার ওপরে। যদি নিষেধাজ্ঞা দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে সেটার মাত্রা বাড়তেই থাকবে। পক্ষ-বিপক্ষের প্রশ্ন আসবে। তখন তা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে উঠবে।২০২০ সালের প্রথমার্ধে কোভিড-১৯ মহামারির বিশ্বব্যাপী বিস্তারের ফলে যে শঙ্কার সৃষ্টি হয়, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সেটি বহুলাংশেই স্তিমিত হয়ে আসে। কার্যত ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন অনেক জটিল অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে এবং এর ফলে বর্তমান বিশ্ব জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। অপর দিকে জলবায়ু পরিবর্তনের নিয়ামক শক্তি হচ্ছে ফসিল জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, কৃষিব্যবস্থা, শিল্পায়ণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বনভূমি, পাহাড়, নদী সংরক্ষণ ও নগরায়ণের পরিবেশগত বিষয়গুলোকে অগ্রাহ্য করা। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে বিশ্বের উষ্ণায়ন ও ক্লাইমেট চেঞ্জের বিপদ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা সতর্ক সংকেত দিলেও ধনী দেশগুলোর বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রতিযোগিতার কারণে জাতিসংঘের মতো