কুষ্টিয়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, ৮ই অক্টোবর ২০২৩


কুষ্টিয়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু
ছবি: জনবাণী

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মঙ্গলবাড়িয়া এলাকায় স্বামীর ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনে  আখিঁ খাতুন (২৩) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহত আখির পরিবারের দাবি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে আখিঁকে। 


শনিবার (৭ অক্টোবর)  আনুমানিক দুপুর ২ টার সময় মঙ্গলবাড়িয়া মধ্যপাড়া এলাকায় নিহত আখিঁর শ্বশুর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই নিহত আখির স্বামী বাপ্পি (২৮) পলাতক রয়েছেন। নিহত আখিঁ মঙ্গলবারিয়া এলাকার প্রবাসী মোঃ আক্কাস আলীর মেয়ে ও বাপ্পি একই  এলাকার মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে। 


নিহতের মা পারভিন আক্তার বলেন,গত ৪ বছর আগে বাপ্পির সাথে পারিবারিকভাব আমার মেয়ে আখিঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের উপর তার স্বামী ও শ্বাশুরী।আমরা কয়েকবার বসে সমাধান করে দিয়েছিলাম। আমার জামাই বাপ্পি নেশাগ্রস্ত ছেলে যেটা আমরা আগে জানতাম না। প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করতো। আমার স্বামী প্রবাসে থাকে৷ তাই আমার মেয়ের স্বামীকেও বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। এক  মাস থেকেই সে দেশে চলে এসেছিলো নেশার কারনে। গত কয়েকদিন আগে আমার মেয়ের গলা থেকে একটি স্বর্ণের চেইন খুলে নিয়ে ৩ দিন ধরে পালিয়ে ছিলো আমার জামাই বাপ্পি। 


এরপর ঘটনার দিন শনিবার আমার স্বামী মেয়ের সাথে কথা বলেছে। আমার মেয়ে তার সংসারের অশান্তির কথা তার বাবাকে বলেছে। মেয়ে তখন তার বাবাকে বলেছে বাপ্পি বাড়িতে এসেছে ঝামেলা চলছে আমার চাচা শ্বশুর হাবিব ও তার স্ত্রী এসেছে কথা বলছি পরে ফোন দিবো।  


এরপর যখন দুপুরে আমার স্বামী মেয়েকে ফোন দেয় মেয়ে আর ফোন ধরেনা। তখন মেয়ের বাবা প্রবাস থেকে আমাকে ফোন দিলে আমি আমার শ্বাশুরী(মেয়ের দাদিকে) দেখতে পাঠায় আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে। মেয়ের দাদি গিয়ে দেখে মেয়ের শ্বাশুরী আগে দেখে বাড়ির বাইরে পাহারা দিচ্ছে। আমার মেয়ের কথা জিজ্ঞাসা করলে তার শ্বাশুরী বলে আশেপাশের বাড়িতে ঘুরতে গেছে হয়তো। 


পরে তার দাদি বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখে আমার মেয়ে সুয়ে আছে আর তার স্বামী ও চাচা শ্বশুর হাবিব ও তার স্ত্রী মাথায় পানি ঢালছে। এই ঘটনাটা আড়াল করার জন্য তারা বলেছে আমার মেয়ে পাশের বাড়িতে ঘুরতে গেছে। পরে তারা তারাহুরা করে আমার মেয়েকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যায়। আমাদের কিছু না জানিয়েই। 


হাসপাতালে নেওয়ার পথেই আমার মেয়ে মারা যায়। তারা বলছে আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে৷ আর সে যেই ঘরে গলায় ফাঁস নেওয়ার কথা বলছে সেটা আমার মেয়ের শ্বাশুরীর ঘর। আমার মেয়ে যদি গলায় ফাঁস নেবে তাহলে আমার মেয়ের ঘরে নিতো তার শ্বাশুরীর ঘরেনা। 


আর তারা গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থা থেকে আমাদের এবং পুলিশে খবর না দিয়ে কিভাবে নামালো। তারা আমার মেয়ে পকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আর হত্যা যদি নাই করবে তাহলে আমার জামাই বাপ্পি পালালো কেনো। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই৷ 


এবিষয়ে কুষ্টিয়া কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেয়দ আশিকুর রহমানের সাথে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। নিহতের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসলেই আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 


আরএক্স/