‘সরকারের কর্মপরিকল্পনায় রফতানিতে ২য় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পাটখাত’
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
পাট বাঙালির ইতিহাসের নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে যা জাতি সত্ত্বার পরিচয়বাহী সংস্কৃতির অন্যতম উপকরণ। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। সরকারের কর্মপরিকল্পনায় পাটখাত রফতানি বাণিজ্যে চামড়াকে ছাড়িয়ে দেশের ২য় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখছে।
রবিবার (৬ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাট দিবসের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাট শিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পাটখাতে সরকারের নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে এখাতটি অসামান্য অবদান রাখছে। যদিও কালের পরিক্রমায় কৃত্রিম তন্তু (পলিথিন)-এর ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকারের চলমান পৃষ্ঠপোষকতার কারণে পাটখাতের হৃত ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার এবং অধিক সমৃদ্ধশালী করা সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পাট শিল্পের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারকল্পে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে ফলে অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রতিবছর পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাটখাত ও পাট শিল্পকে সুসংহত করার লক্ষ্যে ‘পাট আইন, ২০১৭’ ও ‘জাতীয় পাটনীতি, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখার পাশাপাশি কৃষককে অন্যান্য উপকরণ সহায়তার কারণে সম্প্রতিক বছরগুলোতে পাটের উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলশ্রুতিতে পাটকলসমূহ নিরবচ্ছিন্নভাবে পাট সংগ্রহ করতে পারছে যা রফতানি আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে – কৃষকরাও পাটের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন।
তিনি বলেন,বাংলাদেশে ৩৪-৪০টি চারকোল উৎপাদন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫-২০ হাজার লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে চারকোল রফতানি করে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বৈদেশিক মূদ্রা অর্জিত হয়। চীন বাংলাদেশের উৎপাদিত চারকোলের বড় বাজার।
উল্লেখ উল্লেখ্য পাটের সঙ্গে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি বিবেচনায় ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ মার্চ জাতীয়ভাবে পাট দিবস ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে।
বস্ত্র ও পাট সচিব মো: আব্দুর রউফ সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান। অনুষ্ঠানে পাট উৎপাদন ও ব্যবসার সাথে জড়িত বিভিন্ন অংশীজনের প্রতিনিধিরা পাট ও পাটশিল্পের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১১জনকে জাতীয় পাট পুরস্কার প্রদান করা হয়। এর আগে সকালে জাতীয় পাট দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হয় । র্যালীতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী,বীরপ্রতীক,এমপি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুর রউফ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম, এনডিসি, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমান বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান,পাটখাতের সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের প্রতিনিধিসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এসএ/