বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী ঘানিশিল্প
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:০২ অপরাহ্ন, ৩০শে অক্টোবর ২০২৩
সল্প ব্যায়ে কম খরচে বাড়িতে তৈরী করা হত খাঁটি সরিষার তৈল। বর্তমান প্রযুক্তির কাছে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারায় এ শিল্প এখন বিলুপ্ত প্রায়।
গ্রাম বাংলার সেই শিল্প এখন আর তেমন দেখা যায় না। হাতে গোনা দু একটা গ্রামে এ শিল্প টিকে আছে। তাই বর্তমান প্রজন্মের কাছে এ শিল্প রহস্য বলে মনে হয়। এখন আর ঘানিতে ঘুরান খাঁটি সরিষার তৈল পাওয়া অনেকটা কস্টসাধ্য। ঘূর্ণন যন্ত্র দারা ঘানিতে গরুর সাহায্যে এ সরিষা জাতীয় তৈল বীজ থেকে বের করা হয় তেল ।
ঘানি টানার জন্য গরুকে চোখ বেধে টানানো হয়। যে যন্ত্রেও সাহায্যে কোন তৈলবীজকে নিষ্পেষন করে তেল বের করা হয় তাহাকে ঘানি বলে। তৈল নিষ্পেষন একটি প্রাচীন জীবিকা এই পেশার লোকদের কে কলু বলা হয়। ঘানি টানা খুব পরিশ্রমের কাজ তাই আগেকার দিনে কারাদ-প্রাপ্ত লোকদের দিয়ে ঘানি ঘোরানো হত।
তাই প্রবাদে আছে জেলে যাওয়াকেই অনেক সময় জেলের ঘানি ঘোরানো বলা হত। বর্তমান প্রযুক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে ঘানি। কারণ খাঁটি ঘানির তেলের দাম ৪শ টাকা কিন্তু সে তুলনায় মেশিনের তেল ১৮০টাকা। নতুন প্রযুক্তির কাছে ঘানি হার মানতে বাধ্য হচ্ছে ফলে এ শিল্প টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
পাটকেলঘাটা বাজার সংলগ্ন দাই পাড়াতে পুরান ঐতিহ্য ঘানি শিল্প টিকে আছে গতকাল কথা হয় বিদেশ প্রবাসী ইয়াছিন সরদারের পুত্র অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আব্দুল্লাহ সরদারের সাথে সে জানায় আমার দাদাদের আমলের এ শিল্প প্রায় বিলিন হওয়ার পথে কোন রকমে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এখন এ ঘানি আঠারাে মাইল বেতা গ্রাম আমার নানা আহম্মদ আলী গাজী ও পাটকেলঘাটায় আমাদের এছাড়া এলাকায় কোন ঘানি নাই।এ শিল্পে লোকবল কম লাগে,কম খরচে প্রাচীন আমলের সেই ঘানির মাধ্যমে খাঁটি তেল বের করা হয়। প্রতিদিন ঘানিতে ৪ থেকে ৬ কেজি তেল বের করা হয়।
পাটকেলঘাটা পশ্চিম পাড়া গ্রামের আবুল কালাম গাজী সাথে কথা হলে তিনি জানান অনেক আগে থেকেই আমরা এ পেশা ছেড়ে দিয়েছি, আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহারের সাথে এ শিল্প টিকে থাকতে পারেনা, তাছাড়া এ পেশা লাভ জনক না, বর্তমানে আমরা ব্যবসা বানিজ্য করে ভাল আছি।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া শারমিন বলেন যেহেতু গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের সাথে জড়িত ঘানি শিল্প সেহেতু এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব বিষযটি খোজ খবর নিয়ে দেখবো সরকারের কোন দপ্তর এটার সাথে সংশ্লিষ্ট অবশ্যই ব্যবস্থা নিব যাতে এ শিল্প টিকে থাকে।
আরএক্স/