ঢাকা কলেজের নতুন ভবনের বাথরুমের দরজা ভাঙা, উধাও লুকিং গ্লাস
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৪৫ অপরাহ্ন, ৩রা নভেম্বর ২০২৩
আল জুবায়ের: উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজ রাজধানীর বুকে ঠাঁই করে নিয়েছে সেই ১৮৪১ সাল থেকে। কলেজটি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াও বেশ সুনামের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দিয়ে আসছে বহুকাল থেকেই। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বর্তমানে ২০টি বিভিন্ন বিষয়ে ডিগ্রি দেওয়া হয়ে থাকে।
আগে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকলেও ২০১৭ সাল থেকে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। বর্তমানে প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থী কলেজটিতে অধ্যয়নরত।
প্রতিষ্ঠার পরপর থেকেই নানামুখী সংকট দেখা যায় কলেজটিতে।তবে সংকট উত্তরণে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হলেও শৌচাগারের বেহাল দশা সংষ্কারে কলেজ কর্তৃপক্ষের নেই দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ। শিক্ষার্থী অনুপাতে পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই।মূল একাডেমিক ভবন,লে.শেখ জামাল ভবন সহ হল ও মসজিদের শৌচাগারের বেহাল দশা।
২ নভেম্বর সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লে.শেখ জামাল একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় শৌচাগারের দরজা ভাঙ্গা, ঐ অবস্থাতেই পড়ে আছে দরজা, বেসিনের পানির কল নষ্ট ও লুকিং গ্লাস এর মধ্যে উধাও। এছাড়াও একই ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ তলায় হাই কমোড টয়লেটগুলো দীর্ঘদিন নষ্ট হয়ে আছে। তৃতীয় তলায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য শৌচাগারের দরজা বিকল অবস্থায় রয়েছে।
ঢাকা কলেজের মূল একাডেমিক ভবনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগার ও স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা অপ্রতুল। কলেজের মসজিদ রয়েছে ব্যবহার উপযোগী মাত্র দুটি শৌচাগার। হলের শৌচাগার অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে বেশিরভাগ সময়। দূর্গন্ধ ও স্যাঁতসেতে ফ্লোরের কারণে আবাসিক শিক্ষার্থীরা নানাবিধ ভোগান্তিতে পড়ছে।
এছাড়াও, কলেজের বিভিন্ন ভবন ও হলের শৌচাগারগুলো সরেজমিনে দেখা যায়, বেশিরভাগ শৌচাগারেই সাবান ও টিস্যুর ব্যবস্থা নেই। এমনকি টিস্যু ফেলার পর্যাপ্ত ঝুড়িও রাখা হয়নি।
সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় কলেজে পরীক্ষা দিতে আসা নারী শিক্ষার্থীদের। ঢাকা কলেজ কেন্দ্রে বিভিন্ন বর্ষের যে পরীক্ষা হয়, তার সবগুলোই ইডেন কলেজের। তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা শিমু বলেন, ‘ঢাকা কলেজে পরীক্ষা দিতে এসে বেশি বেগ পোহাতে হয় টয়লেটের।টয়লেটের ছিটকানি ভাঙা, দরজা ভাঙা,ফ্লাস কল অনেকটায় নষ্ট ফলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের।
শেখ জামাল ভবনে ক্লাস করতে আসা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ১ম বর্ষ শিক্ষার্থী তুষার আব্দুল্লাহ বলেন ওয়াসরুমের হাইকমোড নষ্ট, বাধ্য হয়ে একটি টয়লেট ব্যবহার করতে হয় সকলের। ওয়াসরুমের দরজা ভেতর থেকে আটকানো যায় না এজন্য ওয়াসরুমে যেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় আমাদের। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ওয়াসরুমগুলো সংষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন ওয়াসরুমের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। শেখ জামাল একাডেমিক ভবনে অতি শীঘ্রই লিফট স্থাপনের করা হবে। ওয়াসরুম সংষ্কারের বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছি। লিফট স্থাপন করা হয়ে গেলেই সংষ্কারের কাজ শুরু হবে।আমরা পরিবেশ ক্লাস গঠনের কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছি। পরিবেশ ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কলেজের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন হতে পারবে এবং পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
আরএক্স/