খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে, ক্ষুদার্থ মুখ পোড়া হনুমান


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, ৭ই নভেম্বর ২০২৩


খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে, ক্ষুদার্থ মুখ পোড়া হনুমান
ছবি: জনবাণী

বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃকোলে ,প্রবাদ বাক্যটি থাকলেও আজ পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বন্য প্রাণী। হারাচ্ছে তাদের স্বাভাবিক সৌন্দর্য। প্রাকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাবের কারণে বনের প্রানিরা তাদের নিজেদের অস্তিত্ব হারাচ্ছে। চরম সংকটে পড়েছে খাদ্যের।  আর তাইতো খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে দেখা মিলছে দলছুট মুখ পোড়া হুলুমানের। বনজঙ্গল কমে আসায় এ সকল বন্য প্রাণীরা খাদ্যের সন্ধানে চলে আসছে লোকালয়ে।


মাগুরার শালিখার লোকালয়ে দুটি মুখপোড়া হনুমান দেখা গেছে। যাদের একটি পূর্ণবয়স্ক এবং অন্যটি অপেক্ষাকৃত ছোট। দলচ্যুত  হয়ে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। 


সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কখনো উঁচু গাছে, কখনো লোকালয়ে, কখনো আবার উঠে পড়ছে করো বাসা-বাড়ির ছাদ বা টিনের চালের উপর। গত এক সপ্তাহ ধরে বন্যপ্রাণী দুটি শালিখার বিভিন্ন এলাকায় বিচরণ করছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 


তবে এখনো পর্যন্ত কোনো মানুষের উপর আক্রমণ করে নাই প্রাণী দুটি। হনুমান দুটিকে দেখতে ঘটনাস্থলে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। হনুমানগুলো যেখানে যাচ্ছে তার পিছু পিছু ছুটছে ছোট-বড়সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। মাঝে মাঝে প্রাণীগুলোকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ছেন তারা। 


এছাড়াও বিভিন্ন এলাকার কুকুরের আক্রমনের শিকার হচ্ছে হনুমান দুটি। ফলে প্রাণভয়ে বারবার স্থান পরিবর্তন করছে ক্ষুধার্ত এ বন্যপ্রাণী দুটি। মানুষের দেওয়া পাউরুটি,কলা , বিস্কিট ,কেক গাছের পাতা খেয়ে কোনো রকমে জীবন বাঁচছে তাদের। মুখপোড়া হনুমান মূলত প্রাইমেট প্রজাতির একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। গাছের পাতা খেয়ে জীবনধারণ করায় এদের পাতা বানরও বলা হয়। 


বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, চীন, ভারত এবং মিয়ানমারে এদের দেখতে পাওয়া যায়। এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হচ্ছে ক্রান্তিয় ও নিরক্ষীয় শুষ্ক বনভূমি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, শিল্পায়ন ও কৃষিক্ষেত্র সম্প্রসারনের কারণে বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করছে।


বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুসারে হনুমান দুটিকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ পূর্বক যথা স্থানে অবমুক্তকরণ করলে জনসাধারণের নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। আড়পাড়া ইউনিয়নের কুমারকোটা গ্রামের শরিফুল ইসলাম ও শ্রীহট্ট গ্রামের নান্নূ মুন্সি বলেন, আজ তিন-চার দিন ধরে হনুমান দুটি আমাদের এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। 


বন্যপ্রাণীদুটি রক্ষার্থে কোনো ব্যবস্থা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শালিখা উপজেলা বন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, বন্যপ্রাণী রক্ষার্থে আমাদের দপ্তর থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না এবং তাদের কোনো খাবারও দেয় হয় না তবে যে এলাকায় দেখা যায় সেই এলাকার লোকগুলো যেন বন্যপ্রাণীদেরকে উৎপাত না করে সে ব্যাপারে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়।


আরএক্স/