কুড়িগ্রামের ১৬ নদীর চরে জনপ্রিয় হচ্ছে ভেড়া পালন


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:২৫ অপরাহ্ন, ১৪ই নভেম্বর ২০২৩


কুড়িগ্রামের ১৬ নদীর চরে জনপ্রিয় হচ্ছে ভেড়া পালন
চরের নারীরা পালন করছেন ভেড়া। ছবি: জনবাণী

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে ভেড়া পালন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিস্তীর্ণ চারণ ভূমি আর স্বল্প পুঁজিতেই অধিক লাভবান হওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন এই ভেড়া পালনে।

 

কুড়িগ্রামের ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার বিস্তীর্ন চরাঞ্চলে ভেড়া পালন দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে চরের নারীরা পালন করছেন এই ভেড়া। পরিবারের আয় বৃদ্ধিতে খুশি চরের নারী কৃষকরা।


চরবাসী লোকজন জানায়, একটি ভেড়া ক্রয় করছেন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। পরবর্তীতে প্রতি ৬ মাস পরপর ভেড়া বাচ্চা দিচ্ছে ২ থেকে ৪টি। তুলনামূলক রোগবালাইও কম। বৃদ্ধি পাচ্ছে চরবাসীর পরিবারের আয়।


অপরদিকে ভেড়া পালনে আরও উৎসাহী করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংগঠন ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশন ফান্ড প্রকল্প ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার ২৫টি চরের ৭৫০টি পরিবারকে উপহার দিয়েছে ভেড়া। সেই সাথে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ ভেড়া পালনে বিভিন্ন সময়ে দিচ্ছেন প্রশিক্ষন।


মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ধরলা নদীর অববাহিকায় চর কায়েম বড়াইবাড়ি গ্রামে গেলে অহেতন বেগম (৩৬), রমিছা খাতুন (৩৪), আজিজার রহমান (৪৫) ও আব্দুল জলিল (৪১)সহ অনেকেই জানান, ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্প থেকে আমাকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা দিয়ে একটি ভেড়া দিয়েছে এবং সেটি থেকে ৩টি বাচ্চা হয়েছে। এখন তার চারটি ভেড়া; যার বাজারমূল্য ২৮হাজার টাকা।


“ফ্রেন্ডশিপ” এর ট্রান্সজিশনাল ফান্ড (এএসডি) প্রজেক্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার কৃষিবিদ মোঃ আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গ এর সহায়তায় সদস্যদের আয় রোজগার নিয়মিতকরণের জন্য ভেড়া প্রদানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্ন্য়ন, সুশাসন এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নে কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী এবং রৌমারী উপজেলার মোট ২৪টি চরে ৭২০ জন সদস্যকে প্রকল্প সহায়তা প্রদান করে আসছে।


জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: মোনাক্কা আলী জানান, কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী এবং রৌমারী উপজেলায় ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্পের মাধ্যমে ৭২০টি পরিবারকে ভেড়া প্রদান করেছে এবং জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে; ফলে পরিবারগুলোর ভেড়া পালনের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যেকটি ভেড়াকে টিকা এবং কৃমিনাশক বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। চর এলাকা ভেড়া পালনের জন্য উপযুক্ত তাই ভেড়া পালনের মাধ্যমে চরাঞ্চলের মানুষ স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।


এছাড়াও চর উন্নয়নে যারা কাজ করছেন তারা জানান, প্রান্তিক জেলা কুড়িগ্রামের ১৬ নদীর চরাঞ্চলে ভেড়া পালন অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। সরকারি ও বেসরকারী পৃষ্টপোষকতা বাড়ানো গেলে চরবাসী পরিবারদের আয় যেমন বাড়বে তেমনি বাড়বে তাদের জীবনমান।


আরএক্স/