ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের বাধা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:১০ অপরাহ্ন, ১৬ই নভেম্বর ২০২৩
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণাকে একপাক্ষিক দাবি করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলের যাত্রা শুরু করেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। মিশিলের প্রাথমিক পর্যায়েই পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্ট শিক্ষার্থীরা। তবে তার পূর্বে থেকেই জাবির প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল এবং জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশ সদস্যদের সাথে শিক্ষার্থীদের বাকবিতন্ডার শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ তাদেরকে মিশিল না করতে হুমকি দেয় বলে দাবি করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিক্ষোভ মিছিল করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায়ের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এসময় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আশাও করা যায় না। যেটা ১৯৯৬ সালেও হয়নি এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও হয়নি। তাই আমরা মনে করি আগামী নির্বাচনও এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আমরা জনগণ কে আহ্বান জানাই এই দেশে কোন স্বৈরাচারই টিকতে পারিনি। আইয়ুব-এরশাদ চলে গেছে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারও একদিন চলে যাবে।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ বলেন, ‘গতকাল নির্বাচন কমিশন এই সরকারের আন্ডারে আরেকটা নির্বাচনের জন্য তফশিল ঘোষণা করেছে। আমরা এই তফসিলের বিরোধিতা করছি। এই অবৈধ তফশিলের মধ্য দিয়ে এদেশে হাসিনা সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবেনা। জনগণ সেটা মানেনা। এটি আবারো একটি একদলীয় নির্বাচন ব্যবস্থা হতে যাচ্ছে। সরকার যেভাবে বাকরুদ্ধ করছে, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি হচ্ছে, নিপীড়ন করছে তাতে সরকার আর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার রাখেনা।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সংগঠক সোহাগি সামিয়া বলেন, ‘আজকে শিক্ষার্থীরা মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারছে না। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করে এমন এক স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। গুটিকয়েক মানুষ ভোটের অধিকারের জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছে। আজকের ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়ে যায় এ বাংলাদেশে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
সাভার শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি জীবন আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে। সামনে অগ্রসর না হতে দিয়ে এখানে থামিয়ে দিয়েছে। জনগণকে আর থামানো যাবে না। গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এটা তার বাঁচার লড়াই, ভোটাধিকার আদায়ের লড়াই। ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, শ্রমজীবী মানুষের বাঁচানোর তাগিদে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন এবং দিতে হবে।’
সাভার-আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ আমরা প্রতিদিনের মতো আজকেও টহলের অংশ হিসেবে এখানে এসেছি যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’ তবে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ বাঁধা প্রদানের কারণ জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরএক্স/