আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৩৮ অপরাহ্ন, ১৮ই নভেম্বর ২০২৩


আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি
ছবি: জনবাণী

দেশের গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি বিলজুড়ে এখন বিপুল পরিমাণ আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে আনন্দের হাসি ফুটেছে। বর্ষার শুরুতেই কৃষক আমন ধান রোপণ করেছিলেন। এখন বর্ষার পানি নেমে যাওয়ায় আমন ধান পাকতে শুরু করছে। তাই এই ধানগুলো ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।


 দৈনিক জনবাণীর বিশেষ প্রতিবেদকের একটি সরেজমিনে প্রতিবেদন, দেশের বিভিন্ন জেলার উপজেলাধীন বিলে ঘুরে দেখা গেছে খেত ভরা ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন কৃষকেরা। এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় মহাখুশি কৃষক। কৃষকের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণিরাও।


নারায়ণগঞ্জের আড়াই উপজেলার রংপুর বিলে কথা হয় কৃষক মহিম বেপারীর এর সঙ্গে। তিনি বলেন, এ বছর প্রায়  নয় একর জমিতে আমি আমন ধান রোপণ করেছি। এবছর আমার ধানের খুবই ভালো ফলন হয়েছে।


একই উপজেলার ফুলদি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা মাথায় করে বিপুল পরিমাণে ধান নিজ বাড়িতে তুলছেন। শেরপুর- জামালপুর হতে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা বলেন, এ বছর ধান ভালো হয়েছে। আমরা সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৬০০ টাকা করে শ্রম বিক্রি করছি। আগের তুলনায় এবছর মুজুরীও বেশি পাচ্ছি।


মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার লতব্দী বিলে ধান কাটারত কৃষক সোহেল বলেন, এ বছর ১৩০ শতাংশ জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলাম। এতে যে ফলন হয়েছে আমার পরিবারের সারাবছর এ ধানে সংসার ভালো করেই কাটবে।


 উপজেলার সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সিরাজদিখান উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ২ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ৬৮০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এ উপজেলার বিল জুড়ে দেখা গেছে, ধানের সোনালী ছড়ায় ভরে গেছে ফসলের মাঠ।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারনে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বর্ত মানে বাজারে চালের দাম বেশি হওয়ায় ধানের দামও বেশি আশা করছেন কৃষক।


এদিকে গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া গ্রামে আবু সুফিয়ান নামের কৃষক বলেন, এছর আবহাওয়া পুরো অনুকূলে ছিল। এছাড়া পোকামাকড়ের আক্রমণও হয়নি। যে কারণে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এবার আনুমানিক ৭০ শতাংশ জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম, আমার ধান অনেক ভালো হয়েছে। চালের দাম যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে যদি ধানের দামও মেলে তবে আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে ধান চাষ করব।


এবিষয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে তিনি বলেন, উপজেলা জুড়েই আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষক উৎসবমুখর পরিবেশে নিজ নিজ জমি থেকে ধান কেটে বাড়ি নিচ্ছেন। রোপা আমনের ফলন ভালো হলেও বোনা আমনের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বর্ষা মৌসুমে অনেক জমিতে পানি না থাকাকে দায়ী করেন তিনি। এ কর্মকর্তা আরও বলেন, রোপা আমনের ফলন খুব ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারনে কৃষক হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ৫ টন ধান পাবেন।


এ ব্যাপারে বিভিন্ন জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকরা বলেন, এ বছর রোপা এবং বোপা উভয় প্রকার আমনের ফলন ভালো হয়েছে। এবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় ফলন খুব ভালো হয়েছে।  বর্ষা মৌসুমে পানি কম হওয়ায় দিন দিন রোপা আমন ধানের আবাদ বাড়ছে। এ বছর রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন রোপা আমন ধানের  আবাদ হয়েছে, ফলনেও বাম্পার আর কৃষকের মুখে আনন্দের মহাখুশির হাসি ফুঠেছে।


আরএক্স/