জাবির প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের জন্য প্রশাসন দায়ী: শারমিন আক্তার


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, ২১শে নভেম্বর ২০২৩


জাবির প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের জন্য প্রশাসন দায়ী: শারমিন আক্তার
ছবি: জনবাণী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পরিবেশ ধ্বংস করে যত্রতত্র গাছ কেটে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমসহ অন্যান্য সংকট নিরসনে দ্রুত মাস্টারপ্লান প্রণয়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। 


মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত্বর থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) নির্মাণাধীন ভবন নির্মাণের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মানববন্ধনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।


মানববন্ধনে তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তারা অবিলম্বে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবি জানান। এ সময় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিহা বলেন, "  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা গাছপালা উজাড় করে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কে প্রকল্পের আস্তানা বানাতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয়েকে মরুভূমি বানাতে চায় এই প্রশাসন। ভোগবাদীরা কেবল অর্থ ও টাকা পয়সা ভোগ করে ক্ষান্ত হয় না তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রান প্রকৃতি ধংস করে দিতে চায়। ভোগবাদীদের ভোগ কখনো শেষ হয় না।এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারপ্লান প্রয়োগ করে  প্রাণ-প্রকৃতির সবচেয়ে কম ক্ষতি করে উন্নয় চাই আমরা। মাস্টারপ্লানের দিকে প্রশাসনের কোন মাথা ব্যথা নাই, প্রশাসনের  মাথা ব্যাথা শুধু পকেট ভারী করার দিকে।" 


সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সদস্য শারমিন আক্তার  বলেন, "মানুষখেকো কিছু দানব আছে যারা মানুষ খয় না বটে কিন্তু মানুষের বসবাসের উপযোগী প্রাণ-প্রকৃতি তারা ধংস করে থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রাণ-প্রকৃতি ধংস করা হচ্ছে তার জন্য প্রশাসন দায়ী। বিভিন্ন সময় প্রশাসন বন ধংস করে আর নানা অজুহাত দাঁড় করায়। এভাবে যদি চলতে  থাকে আমরা সবাই কে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। " 


ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, "আজকে এ সময় আমাদের ক্লাসে থাকার কথা কিন্তু  আমাদের দূর্ভাগ্য  আমাদেরকে ক্লাস পরীক্ষা বাদ দিয়ে এখানে দাঁড়াতে হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ দাবি করে আসছি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাস্টারপ্লান প্রণয়নের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টারপ্লান এর অধীনে ভবন হবে, উন্নয় হবে, ক্লাস রুম সংকট নিরসন হবে তা আমরা চাই।কিন্তু অপরিকল্পিত উন্নয়ন আমরা চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসাশনের প্রধান কাজ শিক্ষার মান উন্নয় করা তারা  তাদের সেই  দায়িত্ব পালন করতে না পারলেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে ধারাবাহিক ভাবে প্রতারনা কে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে তাদের অবরুদ্ধ করা হয়েছিল। তখন তারা আমাদেরকে বলেছিল তদন্ত কমিটি গঠন  করে আইবিএ ও আইআইটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিন্তু নামে তদন্ত কমিটি গঠন করলেও কোন সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই আইআইটি তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।আমরা মানব বন্ধের মাধ্যেমে জানিয়ে দিতে চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতির ধংস করে কোন উন্নয় চাই না। " 


সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সাবেক সাধারন সম্পাদক  কনোজ কান্তি রায় বলেন, "কয়েক দিন আগে চোরের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গাছ কেটেছে। আমরা ২০১৯ সাল থেকে দেখে আসছি প্রসাশন তাদের চৌর্যবৃত্তি জারি রেখেছে। আইবিএ ও আইআইটি চোরের মতো যে গাছ কেটেছিল তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। আজকে আইবিএর কাজ বন্ধ থাকলেও আইআইটির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন আইবিএর সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ করছে আর আইআইটিকে মাথায় তুলে নাচার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আমাদের মনে হয়  এখানে একধরনের অর্থনৈতিক লেনদেন আছে। বিশ্ববিদ্যালয় যে  প্রসাশন ফ্যাসিবাদী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে এর  জবাব দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই যথেষ্ট।"


আরএক্স/