বিএনপিকে বুঝতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন ডেড ইস্যু: কাদের
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নেতাদের বুঝতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন একটি ডেড ইস্যু
এবং পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড চ্যাপ্টার।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) গণমাধ্যমে
পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দকে
বুঝতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি এখন একটি ডেড ইস্যু, এটি একটি অতীত এবং বন্ধ
অধ্যায়। জল বহু দূর গড়িয়ে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে সেই একই জায়গায় হাবুডুবু খেতে
থাকলে বিএনপিকে গভীর জলে ডুবে মরতে হবে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নৌকা
বহুদূর এগিয়ে গেছে, তাতে উঠতে হলে অনেকটা পথ সাঁতরে পাড়ি দিতে হবে। এখনো সময় আছে, বিএনপিকে
সংবিধান ও আইনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে গণতান্ত্রিক রাজনীতির সঠিক ধারায় পথ চলার
আহ্বান জানাচ্ছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে
বিশ্বাস করি, সংবিধান হলো দেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষা কবচ। সংবিধান
অনুযায়ীই এ দেশের সকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সংবিধানসম্মতভাবে
নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে এবং যথা সময়েই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হবে।
আগামী নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ
ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বিএনপি যদি তথাকথিত
আন্দোলনের নামে এদেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং আবারও
২০১৩ থেকে ১৫ ও ২০১৮ সালের মতো অগ্নি সন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সংঘটিত করতে
চায় তাহলে তাদেরকে ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে
দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম
আলমগীরসহ বিএনপি নেতারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছেন! অথচ বিএনপিই তত্ত্বাবধায়ক
সরকার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে এবং পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা
দখলের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে বিএনপি বারবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে
ব্যবহার করেছে। বিএনপিকে পঞ্চম সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রশ্নে সংবিধান সংশোধনের
বিল উত্থাপনের দাবি জানানো হলে দলটির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, নিরপেক্ষ কে?
পাগল আর শিশু ছাড়া নাকি কেউ নিরপেক্ষ হতে পারে না! যদি প্রশ্ন করি তাহলে এখন কেন পাগল
(তাদের ভাষায়) আর শিশুদের প্রতি আস্থা রাখতে চান? তাহলে কী জবাব দেবে। বিএনপি এখন তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের জন্য মায়া কান্না করে।
বিএনপি নেতাদের সংবিধান ও আইনের
প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তত্ত্বাবধায়ক
সরকারকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ ঘোষণা করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় ও পবিত্র সংবিধান
লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে যে, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি
ব্যতীত সংবিধান অনুযায়ী কেউ দেশ শাসনের যোগ্য নয়, তাই অনির্বাচিত গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতা
হস্তান্তর করা যায় না।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে এক মুহূর্তের
জন্যও পরিত্যাগ করা যায় না, কারণ এটি সংবিধানের একটি মৌলিক স্তম্ভ। বাংলাদেশ একটি প্রজাতন্ত্র,
এর রাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য গণতান্ত্রিক; জনগণই এই প্রজাতন্ত্রের মালিক। এগুলো সবই সংবিধানের
মৌলিক স্তম্ভ। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে আরও বলা হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার এক ধরনের
স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সরকার ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছে যা গণতান্ত্রিক আদর্শের পরিপন্থী।
ওআ/