শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে এগিয়ে এল বিএসইসি
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের
আস্থা ফেরাতে এগিয়ে এল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃপক্ষ।
বিনিয়োগকারীদের মুলধন রক্ষায় একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল শেয়ারবাজারে লক্ষ্যে বিনিয়োগবান্ধব
বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাজার স্থিতিশীলতার জন্য স্টক
মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড থেকে শত কোটি টাকা বিনিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা
ইতোমধ্যে কার্যকর শুরু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ লেনদেনে শেয়ার দরের নিম্ন সীমা নির্ধারণ করেছে।
এই সিদ্ধান্তের কারণে গতকালই ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে শেয়ারবাজার সূচক। যেখানে গত কয়েকদিন
ধরে টানা দরপতনের মুখে পড়েছে। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব
সূচক বেড়েছে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে
টানা দরপতনের মুখে পড়ে শেয়ারবাজার। এতে মূলধন হারিয়ে অনেক বিনিয়োগকারী দিশেহারা। ক্ষুদ্র
বিনিয়োগকারীর রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে কার্যকর ভুমিকা রাখতে কর্তৃপক্ষ শেয়ার দর পতনের
নতুন সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। লেনদেনে প্রতিটি শেয়ারের দুই শতাংশে বেশি কমার ওপর
সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের ক্লোজিং প্রাইসের
(দর) উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারবে।
বুধবার (৯ মার্চ) থেকে দুই
স্টক এক্সচেঞ্জে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এছাড়া স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বা স্থিতিশীলতা
তহবিল থেকে একশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে শেয়ারবাজারে। দর বৃদ্ধির সীমা আগের মতই দশ
শতাংশ থাকবে।
মঙ্গলবার বিএসইসির কমিশনার
ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এতে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক
ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।
শেখ শামসুদ্দিন বলেন, শেয়ার
দর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশের নির্দেশনাটি পূর্বের দিনের ক্লোজিং প্রাইসের সঙ্গে
কার্যকর হবে। তবে শেয়ার দর বাড়ার সীমা অপরিবর্তিত থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে। আগের ন্যায় দীর্ঘমেয়াদি হবে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দুই শতাংশ সীমা
তুলে নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সেকেন্টারি মার্কেটে
তারল্য প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে
আরও ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যা আজ থেকেই বাস্তবায়ন শুরু
হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীদের
সুরক্ষা দেওয়া আমাদের মৌলিক ও প্রধান কাজ। এজন্য আমরা নানাবিধ চেষ্টা করে থাকি। যার
ধারাবাহিকতায় দর পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১০০ কোটি
টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধাবস্থা ও বাংলাদেশ
শিপিং কর্পোরেশনের একটি জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা নিয়ে যারা বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে এ জাতীয়
৩৫ জন গুজবকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোর
২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল ব্যবহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক। কিন্তু এখনো অনেক ব্যাংক
ওই ফান্ড গঠন করেনি। এছাড়া কেউ কেউ ফান্ড গঠন করলেও তা ব্যবহার করেনি। শেয়ারবাজারে
লেনদেনের গতি বাড়াতে ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কমিশন টি+১ সেটেলমেন্ট চালুর
উদ্যোগ নিয়েছে। তবে চালুর আগে শেয়ারবাজারে টি+১ সেটেলমেন্টের প্রকৃত অর্থে ইতিবাচক
প্রভাব পড়বে কিনা, তা যাচাই করো হবে। কোন ইতিবাচক ফলাফল ছাড়া চালু করতে চাই না।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে ইনভেস্টমেন্ট
কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ভূমিকাটা যেমন হওয়া দরকার ছিল, তা কোম্পানিটির বর্তমান
ম্যানেজমেন্ট উপলব্ধি করছেন। আশা করি এই বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানটি আগামিতে শেয়ারবাজারে
সঠিক ভূমিকা রাখতে পারবে। আমাদের দেশে মার্কেট মেকারের আইন আছে। কিন্তু মার্কেট মেকার
নেই। যদি দেশে বড় বড় মার্কেট মেকার থাকত, তাহলে বর্তমানের এই পরিস্থিতি কাটানো যেতে।
এটি শেয়ারবাজারের জন্য খুবই কার্যকর।
ওআ/