মোংলা স্মার্ট বন্দর হিসেবে বিশ্বের বুকে সমুন্নত হবে: সিটি মেয়র খালেক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:২১ অপরাহ্ন, ১লা ডিসেম্বর ২০২৩


মোংলা স্মার্ট বন্দর হিসেবে বিশ্বের বুকে সমুন্নত হবে: সিটি মেয়র খালেক
ছবি: জনবাণী

মোংলা বন্দরের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে উদযাপন করা হয়। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, আগামী দিনে মোংলা বন্দর আরও কর্মচঞ্চল ও স্মার্ট বন্দর হিসেবে বিশ্বের বুকে সমুন্নত হবে। 


শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) মোংলা বন্দরের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর মোংলা বন্দর উন্নয়নের অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়। বন্দরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে কাজ শুরু করে সরকার। ফলে ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হতে থাকে, যার কারণে প্রতি বছর বিদেশি জাহাজ, কার্গো হ্যান্ডেলিং, গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। 


মেয়র আব্দুল খালেক আরও বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার,মোটর গাড়ি, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদা মাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে। আগামী দিনে মোংলা বন্দর আরও কর্মচঞ্চল ও স্মার্ট বন্দর হিসেবে বিশ্বের বুকে সমুন্নত হবে। 


মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, মোংলা বন্দরের চলমান ড্রেজিংয়ের ফলে সম্প্রতি ৬০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বন্দরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি মানা সরাসরি মোংলা বন্দরে আগমন করে। এ ছাড়াও প্রথমবারের মতো বন্দর জেটিতে ৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বন্দরে ৮২৭টি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে এবং ৯৯ দশমিক শূন্য ৫ লাখ মেট্রিক টন কার্গো, ২৬ হাজার ৫৮৩টি কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং, ১৩ হাজার ৫৭৬টি গাড়ি আমদানি এবং ৩০ হাজার ২৪১ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হয়েছে। 


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে খুলনা সিটি করপোরেশন মেয়র ও বন্দর উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক ও বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী ছাড়াও বিভাগীয় প্রধানসহ ব্যবসায়ীনেতারা উপস্থিত ছিলেন। 


অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলামান রয়েছে। এ ছাড়া বন্দর চ্যানেলের নাব্যতা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ, কার্গো ও কন্টেইনার সংরক্ষণের সুবিধাদি বৃদ্ধি এবং আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহসহ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করা হবে। 


এ ছাড়া আধুনিক কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডেলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জয়মনিরঘোলে কার ইয়ার্ড নির্মাণ, জয়মনিরঘোলে মাল্টি-পারপাস জেটি নির্মাণ, আকরাম পয়েন্টে ভাসমান জেটি নির্মাণ (সমীক্ষায় সুপারিশকৃত হলে), হিরণ পয়েন্ট পাইলট স্টেশনের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং জ্যাফর্ড পয়েন্টে লাইট হাউজ ও ভবন নির্মাণ, যাবতীয় সুবিধাদিসহ হেলিপ্যাড ও হ্যাঙ্গার নির্মাণ ও হেলিকপটার ক্রয়, উদ্ধারকারী জলযান সংগ্রহ করা হবে। 


অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন (জিটুজি প্রকল্প) মোংলা বন্দর চ্যানেলে পাঁচ বছর মেয়াদি সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প, পশুর চ্যানেলে নদী শাসন এবং মোংলা বন্দরের আরও সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প। 


এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দরের চ্যানেলে ৮ দশমিক ৫ সিডি গভীরতা অর্জিত হবে। এতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দরে হ্যান্ডেলিং করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া মোংলা বন্দরে বার্ষিক প্রায় আট লাখ টিইউজ কন্টেইনার চার কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডেলিংয়ের সক্ষমতা সৃষ্টি হবে। ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। 


১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি অ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি গঠন করা হয়।


আরএক্স/