রাজধানীর ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ দোকানে পিঠা বিক্রির ধুম


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০৬ অপরাহ্ন, ১৩ই ডিসেম্বর ২০২৩


রাজধানীর ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ দোকানে পিঠা বিক্রির ধুম
ছবি: শাহাদাৎ হোসেন লাভলু।

শাহাদাৎ হোসেন লাভলু: শীতের শুরুতে পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে রাজধানীর  ওলি-গলি ও ফুটপাতগুলোতে। হরেক রকমের ভর্তা দিয়ে সাড়া/চিতই পিঠা খেতে ভিড় করছেন ভোজন রসিকেরা। বিকেল হলেই ভিড় করছেন তাঁরা রাজধানীর ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকানগুলোতে।


রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল, ফার্মগেট, মহাখালী, রাজলক্ষ্মী, জসীমউদ্দীন, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, বনানী, গুলশান, নিকেতন, কাওরান বাজার, বাংলা মোটর, মগবাজার, রামপুর, বাড্ডা, মালিবাগ রেলগেট, শান্তিনগর, মুগদা, শাহাবাগ, পল্টন, গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া সাইনবোর্ড এলাকা ঘুরে দেখা মিলেছে রাস্তার পাশে কয়েক হাজার ভ্রাম্যমান পিঠের দোকান রয়েছে। যার অধিকাংশ দোকানিই নিম্ন আয়ের  মানুষ।


আরো পড়ুন: ধামরাইয়ে মোড়ে মোড়ে শীতের পিঠা বিক্রি


শীতের সন্ধ্যায় সেখানে পিঠা খেতে ভিড় জমিয়েছে নানা বয়সী মানুষ। পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা।


দোকানগুলোতে গ্যাসে সিলিন্ডার দিয়ে জ্বলছে ৪ থেকে ৮ টি করে চুলা। ৪টি চুলাতে তৈরি করা হচ্ছে সাড়া/চিতই পিঠা ২ টি তে মাটির খোলা তৈরি করা হচ্ছে ভাপা পিঠা, অন্য দুইটিতে পাকান/ তেল পিঠা তৈরি করা হচ্ছে। পাতিল বসানো। পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়া নিয়ে তার ওপর গুড়, নারিকেল ছিটিয়ে দিয়ে ভাপে দিচ্ছিলেন দোকানিরা। খোলায় বানানো হচ্ছিল সাড়া/চিতই পিঠা এবং চালের গুড়া , লবণ পানি ও খেজুরের গুড় মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পাকান/ তেল পিঠা। 


তৈরি হতেই গরম-গরম ধোঁয়া উঠছে পিঠায়। সাড়া/ চিতই পিঠা ক্রেতাদের জন্য ধনেপাতা, কালোজিরা, সরিষা, মরিচ, ডাউল, শুঁটকিসহ নানান ধরনের ভর্তা করে রেখেছেন ছোট্ট ছোট্ট পাতিলের ভিতরে সাড়া/ চিতই পিঠা সাথে এই ভর্তা দিয়ে থাকছে দোকানিরা। গরম পিঠা আর ভর্তা খেতে কার না ভালো লাগে।


পিঠা খেতে আসা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখন আর আগের মতো গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয় না। তাই বলে শীত এলে পিঠা খাব না, তা তো হবে না। সে জন্য ছোট মেয়েকে নিয়ে ফুটপাতের দোকানে পিঠা খেতে এসেছি। বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে গরম-গরম সাড়া/চিতই পিঠা খেতে ভালোই লাগে।’


রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘চিতই পিঠা ভিজিয়ে খেতে ছেলেমেয়েরা খুবই পছন্দ করে। চাকরিজীবী হওয়ায় পিঠা তৈরির সময় পাই না। তাই মাঝেমধ্যে ফুটপাত থেকে পিঠা কিনে নিয়ে যাই।’

 

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় দিনই বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে পিঠা খেতে আসি। বিশেষ করে চিতই পিঠা বিভিন্ন ধরনের ভর্তা দিয়ে খেতে খুব ভালো লাগে।’


মানিক মিয়া বলেন, আমি আমার কন্যা সাথে করে ফার্মগেট মার্কেট করতে এসেছিলাম সামনে দেখি পিঠা বিক্রয় করছে আর অন্যেরা দাঁড়িয়ে আছে এখানে পিঠা খেয়েছে আমিও মেয়ের সাথে করে চলে এসেছি পিঠা খেতে, আমি মারফত ভাইয়ের দোকান থেকেই ভাপা পিঠা নিয়ে এসে মেয়েকে সাথে করে খাব, শীতের সময় ভাপা পিঠা খেতে খুব ভালো লাগে।


আরও পড়ুন: বেরোবিতে জমে উঠেছে পিঠা উৎসব


পিঠা বিক্রেতা হাবিব হোসেন, এখন শুধু চিতই পিঠা বিক্রি করছেন। বেলা ৪ থেকে রাত ৯টার মধ্যে প্রায় ২০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হচ্ছে। এ সময় কেউ এখানে বসে গরম-গরম খাচ্ছে, আবার অনেকে পার্সেল করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছে। গরম পিঠার সঙ্গে আমি ৫ ধরনের ভর্তা দিয়ে থাকি। আমি প্রতিটি পিঠার মূল্য ১০ টাকা করে নিচ্ছি।


গত সপ্তাহে থেকে শীত একটু বেশি পড়ছে তাই এখন পূর্বে তুলনায় প্রায় ৩০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হবে।


আরেক পিঠা বিক্রেতা মারফত  উল্লাহ বলেন শীত যত বেশি করে ততই আমাদের বিক্রিও বেশি হয়, শীত বাড়ার সাথে সাথে আমাদের এই দোকানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এসে গরম গরম পিঠা খেতে ভালোবাসে আর তাই আমাদেরও বেচা-কিনা একটু বেশি হয়ে থাকে, তবে আমাদের এই ব্যবসাটা তো শুধু শীতের সময় হয়ে থাকে তবে এখন আমরা মোটামুটি ভালো বেচা বিক্রি করছি, আমি সাধারণত তিন ধরনের পিঠা তৈরি করে এখানে বসে বিক্রি করি।


আরএক্স/