ডায়াবেটিসে কি মধু খাওয়া যাবে?
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২
মধু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি
খাদ্য। প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মধু খাদ্য ও ঔষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে
আসছে। সর্দি-কাশিতে বা যাদের ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগে, তাদের জন্য মধু খুব উপকারী। তবে ডায়াবেটিস
রোগীদের ক্ষেত্রে মধু খাওয়া কতটা উপকারী তা নিয়ে মৃদু বিতর্ক আছে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের
প্রায়ই মিষ্টি খেতে নিষেধ করা হয়। তাহলে কি মধু খাওয়া ঠিক নয়, নাকি এতে কার্বোহাইড্রেটের
পরিমাণ বেশি হয়ে যায়? টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা সংস্করণ এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ
করে।
চলুন
জেনে নেওয়া যাক মধুর মধ্যে কী কী আছে-
এতে ৩৮ শতাংশ ফ্রুকটোজ (ফলশর্করা),
৩১ শতাংশ গ্লুকোজ, ১৭ শতাংশ পানি, ৭ শতাংশ ম্যালটোজ, ৪ শতাংশ শর্করা থাকে। মধুতে থাকা
শর্করাটুকুও রেচন প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত গ্লুকোজে পরিণত হয়। ফলে মধুর প্রায় ৭৫ শতাংশ
থেকে ৮০ শতাংশ গ্লুকোজে পরিণত হচ্ছে। সামান্য পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়।
ফলে মধু ঘন শর্করা জাতীয় একটি খাদ্য। অনেকেই বলে থাকেন মধু মিষ্টি জাতীয় খাদ্য হলেও ডায়াবিটিস রোগীরা তাদের ইচ্ছামাফিক মধু খেতে পারেন।
দোকানে বা সুপারশপে বিক্রি
হওয়া বেশির ভাগ মধুতে অনেক সময় ভেজাল তো থাকেই আবার পরিমাণ মতো শর্করাও রয়েছে। এক
চামচ মধুতে ৬৪ ক্যালরি থাকে এবং এতে ১৭ গ্রাম চিনি থাকে। এছাড়াও এক চামচ মধুতে ১৭
গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। এ ছাড়া মধুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ। তবে তাদের
পরিমাণ খুব কম।
আপনি যদি চিনির পরিবর্তে মধু
ব্যবহারের বিষয়ে কথা বলেন, তবে আপনাকে এই দুটি সম্পর্কে করা পরীক্ষাটি ব্যাখ্যা করতে
হবে। একটি জিনিস নিশ্চিত যে চিনি মধুর চেয়ে বেশি বিপজ্জনক, কারণ এতে কোনও ধরনের ভিটামিন
বা খনিজ থাকে না। তবে এর অর্থ এই নয় যে মধু খাওয়া ঠিক আছে।
সম্প্রতি, মধুর গ্লাইসেমিক
ইনডেক্স (জিআই) পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং দেখা গেছে যে মধুর জিআই স্কোর ৫৮ ছিল। একই
সময়ে, চিনি জিআই স্কোর দেখা গেছে ৬০।
এর অর্থ হলো আপনি যদি চিনি
খান তবে এটি আপনার রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। আর মধুতে কিছুটা কম হবে। এমনকি
যদি আপনি ইনসুলিনও নিয়ে থাকেন মধু আপনার পক্ষে সঠিক বিকল্প হবে না। এরপরেও আপনি চাইলে
মধু খেতে পারেন। তবে এর মান এবং পরিমাণ হিসাবে কয়েকটি বিষয় মনে রাখবেন।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের
জন্য বিশেষজ্ঞরা চিনি ব্যবহার হওয়া খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। যদিও কেউ কেউ বলে
যে মধু স্বল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। তবে আপনি যদি ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তবে আপনাকে
আপনার প্রতিদিনের কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণের দিকেও নজর রাখতে হবে, যাতে আপনার কী পরিমাণ
ইনসুলিন গ্রহণ করা উচিত তা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের
বুঝতে হবে যে তাদের কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবারের উপাদানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। নয়তো
রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে আপনি খুব সীমিত পরিমাণে মধু খেতে পারেন।
তবে এর জন্য আপনি আপনার চিকিৎসক এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।
ওআ/