বটতলায় ভ্রাম্যমাণ তারুণ্য লাইব্রেরি


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:২৫ অপরাহ্ন, ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৩


বটতলায় ভ্রাম্যমাণ তারুণ্য লাইব্রেরি
ভ্রাম্যমাণ তারুণ্য লাইব্রেরি।

মংক্যচিং মারমা, ইবি প্রতিনিধি: মাঝারি আকারের কাঠের তাকে সাজিয়ে আছে সারি সারি বই। পাশেই জটলা পাকিয়ে হাতে বই নিয়ে বসে আছে কিছু শিক্ষার্থী। বসার জায়গা না পেয়ে কেউ কেউবা দাঁড়িয়ে আছেন পাশে। যেনো একটু ফাঁকা জায়গা পেলেই বই নিয়ে বসে যেতে পারবে। সবারই একটা উদ্দেশ্য মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিয়ে বই পড়ার। বই পড়ার ফাঁকে ফাঁকেও জমে উঠছে আড্ডা। 


এভাবেই সপ্তাহের প্রতি বুধবার বই আড্ডায় জমে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের বইতলা প্রাঙ্গণ। শিল্প-সাহিত্য সহজলভ্যকরণ এবং তরুণ-তরণীদের মধ্যে পাঠ্যভাস গড়ে তুলতে এই অভিনব উদ্যেগ গ্রহণ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী ও অরাজনৈতিক সংগঠন ‘তারুণ্য’।


আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে যা ভাবছেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা


জানা যায়, গত ২০১৯ সালের ২০ মার্চ 'ভ্রাম্যমাণ তারুণ্য লাইব্রেরি' নামে এই উদ্যেগটি গ্রহণ করেছিলো সংগঠনটির সদস্যরা। সপ্তাহের প্রতি বুধবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত লাইব্রেরিটি সংগঠনটির সদস্য ছাড়াও সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। ফলে শিক্ষার্থীরা সহজেই নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করে সহজেই বই আদান-প্রদান করতে পারে। 


এছাড়াও রয়েছে বটতলায় বসে বই পড়ার সুযোগও। এভাবে বই প্রেমিকদের সমাগমে বটতলা ছাড়াও পুরো ক্যাম্পাসেও যেনো উৎসবমুখর পরিবেশে মেতে উঠে।


লাইব্রেরিতে প্রতিনিয়ত বই পড়া তাহসিন রাইসা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, তারুণ্যের এই উদ্যেগের ফলে ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষার্থীরা জানতে পারবে যে একাডেমিক পড়াশোনার পাশেও আরও পড়াশোনা করা যায় যে যার ফলে আমাদের আত্মার শান্তি আসবে। আমি নিজেও বই পাগল। ক্লাস না থাকলে বাইরে বাইরে ঘুরাঘুরিও আমার তেমন ভালো লাগে না। বটতলা লাইব্রেরির কল্যাণে তো আমি এখন এখানেই কাটায় দেয় এক, দুই ঘন্টা।


তানিসা তামান্না নামের আরেক বই প্রেমিক বলেন, আমার অনেক না পড়া বই আমি এখানে এসে পেয়েছি। আর এখানে প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে বসে পড়াটাও যেনো অন্যরকম এক ফিল।


আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে উপাচার্য-শিক্ষার্থীসহ যাদের হারিয়েছে জবি


সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রিফাত মাশরাফি প্রত্যয় বলেন, ক্যাম্পাসে যতগুলো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে তন্মধ্যে 'তারুণ্য' অন্যতম। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মননে স্বেচ্ছাসেবী মনোভাব ও নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্য করে তুলি।এই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কর্মসূচি হাতে নেওয়ার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বইমুখী হতে সাহায্য করছে বলে মনে করি। 


শিক্ষার্থীদের পাঠ্যভাস গড়ে তুলতেই এই অভিনব উদ্যেগ গ্রহণ করা হয় বলে জানান সংগঠনটি সভাপতি মোঃ মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে অন্যান্য বই পড়ায় অনাগ্রহ দেখা যায় বই পড়ার জন্য বটতলাও বেস্ট একটি জায়গা। আমাদের লাইব্রেরিতে বর্তমানে হাজারের বেশি বই রয়েছে। প্রতি বুধবার ২০ থেকে ৩০ টা বই আদান-প্রদান হয়ে থাকে। এছাড়াও সদস্যদের বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতে প্রতি মাসে সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করা হয় সংগঠন থেকে। সব চেয়ে বেশি বই রিভিউকারীকে পুরস্কারও দেওয়া হয়। আমরা চাই এর মাধ্যমে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণায় বইয়ের আলো ছড়িয়ে পড়ুক।


আরএক্স/