২০২৩ সালে উপাচার্য-শিক্ষার্থীসহ যাদের হারিয়েছে জবি


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন, ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৩


২০২৩ সালে উপাচার্য-শিক্ষার্থীসহ যাদের হারিয়েছে জবি
ফাইল ছবি।

মিজান উদ্দিন মাসুদ: এ প্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, খাদ্য বিষক্রিয়া, গ্যাস বিস্ফোরণসহ অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চলতি বছর প্রাণ হারিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রায় পাঁচ শিক্ষার্থী। মারা যাওয়া শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।


শিক্ষার্থী ছাড়াও এবছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক মৃত্যুবরণ করেছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর চলতি বছরের ১১ নভেম্বর রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পৃথিবীর মায়া কাটান তিনি।


আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে যা ভাবছেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা


এ বছরের শুরুর দিকে ২৯ এপ্রিল সদ্য ভর্তি হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু ইসলামের খিচুনি হয়ে মৃত্যু হয়, পরবর্তীতে তার পরিবার এতে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে জানায়। এর এক মাস পর ৬ মে সকালে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাওন নামের আরেক শিক্ষার্থী মৃত্যুবরণ করেন। শাওন পুরান ঢাকার ধূপখোলাবাজারে গ্যাসলাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন৷


এরপর ৪ আগষ্ট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রুদ্র সরকার নামে আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়৷ রুদ্র সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নে। ওই ঘটনার পর ১০ অক্টোবর খাদ্যে বিষক্রিয়ার (ফুড পয়জনিং) প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. সোহেল রানা নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন৷ চলতি বছরের ২৪ নভেম্বর অ্যাপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া (অবর্ধক রক্তশূন্যতা) রোগে আক্রান্ত হয়ে শিহাব নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।


শিহাবের সহপাঠীরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছিলেন, বেঁচে থাকলে হয়তো বন্ধুদের আড্ডায় হই হুল্লোড় করে ঘুরে বেড়াতো। কিন্তু মৃত্যু সে সুযোগ আর দেয়নি। মেধাবীদের মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিবারই শোক জানিয়েছে৷ অকাল মৃত্যুতে পরপারে ভালো থাকুক সবাই এটাই কামনা।


আরও পড়ুন: জবি ছাত্রদলের মিছিলে পুলিশের বাধা


চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের ক্যান্সার ধরা পরে। উন্নত চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক ১২ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে যান। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি ১২ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন। দীর্ঘদিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকার পর চলতি বছরের ১১ নভেম্বর ভোর ৫ ঘটিকায় রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, শিক্ষার্থীদের অকাল মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। আমরা ভবিষ্যৎ জাতি গড়ার এক ঝাঁক কারিগরদের হারিয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার তাদের বিদেহী শিক্ষার্থীদের আত্মার শান্তি ও মাগফেরাত কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার বর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে।


আরএক্স/