স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দুর্নীতি দমনের সহায়ক শক্তি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা দুর্নীতি দমনের সহায়ক শক্তি

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দুর্নীতির কম-বেশি বিস্তৃতি লক্ষ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি কনভেনশন বা রেজল্যুশন পাস হয়। দুই হাজার তিন সালের একত্রিশ অক্টোবর গৃহীত এ রেজল্যুশন (আটান্ন বাই চার) দুই হাজার পাঁচ সালের ডিসেম্বরে কার্যকর হয়। এ সনদ কার্যকর হওয়ার তারিখ অর্থাৎ ৯ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন দিবস হিসেবে পালিত হয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে শুদ্ধতা, নৈতিকতা, সত্যবাদিতা এবং স্বাভাবিক সততা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা এ দিবস পালনের উদ্দেশ্য।পৃথিবীর সব দেশেই কম-বেশি দুর্নীতি রয়েছে। লোভ ও অতিরিক্ত ভোগের আকাঙ্ক্ষা থেকেই দুর্নীতির উত্পত্তি হয়। সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের মতে, ব্যক্তিগত লাভের জন্য সরকারি দায়িত্ব পালনের বিধিবিধান ও কর্তব্য থেকে বিচ্যুত হয়ে কাউকে কোনো সুবিধা দেয়া হলো দুর্নীতি। দুর্নীতি শুধু সরকারি অফিসে সীমাবদ্ধ নেই। সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে। কেবল অভাবের তাড়নায় মানুষ দুর্নীতি করে—এটি সত্য নয়। বিত্তশালী কর্মকর্তা বা ব্যক্তি আরো অর্থ সম্পদের জন্য দুর্নীতি করে। মানুষের মধ্যে নীতি-নৈতিকতার ঘাটতি হলেই দুর্নীতি জেঁকে বসে।বাংলাদেশে প্রচলিত দুর্নীতির ব্যাপকতা পর্যালোচনা করলে সত্যিই হতাশ হতে হয়। দেশের রাজনীতিবিদ, আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি থেকে শুরু করে প্রতিটি পেশায় জড়িত ব্যক্তিরা এবং সাধারণ জনতার মধ্যেও কম-বেশি দুর্নীতি রয়েছে। যত দিন যাচ্ছে, দুর্নীতির ব্যাপকতা ততই বাড়ছে।বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী সংগ্রামী ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অধিকারী। এরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, বাংলা ভাষার মর্যাদার জন্য রক্ত দিয়েছে।আবার ধর্মপ্রাণ,পরোপকারী, অতিথিপরায়ণ ও সহজ-সরল মানুষ হিসেবে দেশ-বিদেশে সুনামও রয়েছে। 

একই সঙ্গে রয়েছে মিথ্যাচার, প্রতারণা, পরনিন্দা, স্বার্থপরতা, পরশ্রীকাতরতা ও অসততার দুর্নাম। এছাড়া লোকমুখে যেসব অভিযোগ সচরাচর শোনা যায় সেগুলো হলো সরকারি অফিসে তদবির না করলে কাজ হয় না। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা অতিমুনাফাখোর, বিশেষ বিশেষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় কোনো কার্যোপলক্ষে টাকা না দিলে ন্যায্য কাজ তো হবেই না, বরং অহেতুক হয়রানির সম্মুখীন হতে হয় ইত্যাদি।দেশে দুর্নীতির ব্যাপ্তি দেখে স্বাভাবিকভাবেই ধারণা হতে পারে, আমাদের গোড়ায় গলদ রয়েছে। আমরা বিদেশী ঔপনিবেশিক শাসন, স্বৈরাচার, একনায়ক কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শাসিত হয়েছি। নীতি-নৈতিকতার শিক্ষায় আমাদের রয়েছে বিরাট ঘাটতি। কি পরিবার, কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,কি সমাজ কোথাও সততা ও নীতি-নৈতিকতাকে এক নম্বর অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনায় নেয়া হয় না। ব্যক্তিস্বার্থকে আমরা জনস্বার্থ বা সমষ্টিগত স্বার্থের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিই। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ন্যায়-অন্যায় বিচার করি না। যেসব সংস্থা দুর্নীতি বিষয়ে গবেষণা ও রিপোর্ট করে তাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, সরকারি যেসব অফিসে সরাসরি জনসাধারণের কার্যোপলক্ষে যাতায়াত রয়েছে সেসব অফিসে দুর্নীতি বেশি হয়। যেমন ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস, পানি বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধের অফিস, হিসাবরক্ষণ অফিস, আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টম-শুল্ক পরিশোধের অফিস, থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, রাজউক, মিউনিসিপ্যাল ট্যাক্স অফিস ইত্যাদি। যেখানে দুর্নীতি হয় সেখানে সেবাদাতা ও গ্রহীতা উভয়েই দুর্নীতির দোষে দুষ্ট।শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পল্লী উন্নয়ন, পিডব্লিউডি, হিসাব ও নিরীক্ষা প্রভৃতি অফিসের প্রকল্পের কাজসহ নানা বিল পরিশোধেও বড় রকমের ঘুষ দুর্নীতির কথা শোনা যায়। এভাবে তালিকাভুক্ত না করেও বলা যায়, যেখানে অর্থ খরচ কিংবা কোনো অনুমোদন প্রক্রিয়া রয়েছে, সেখানেই কমবেশি ঘুষ-দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে। 

এমনকি ব্যবসা-বাণিজ্যে ওজনে কম দেয়া, অতিমুনাফা খোরি, খাদ্য ও ব্যবহূত দ্রব্যাদিতে ভেজাল দেয়া, কর ও ভ্যাট ফাঁকি তো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সঠিকভাবে পাঠদান না করানো, হাসপাতালে অতিরিক্ত ফি আদায় বা অপ্রয়োজনীয় ও ভুল চিকিৎসা, ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ব্যাংকঋণ গ্রহণ, মানি লন্ডারিং করে বিদেশে অর্থ প্রেরণ প্রভৃতি অন্যায়-অপরাধের কথা হরহামেশাই শোনা যায়। ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাউকে লাভবান এবং কারো ক্ষতি করা, কোর্ট বা যেকোনো তদন্তে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন প্রভৃতি আরো উচ্চমানের দুর্নীতি।আমাদের দেশের দুর্নীতির ধরন অনেকটা ছোঁয়াচে রোগের মতো। একজনের মধ্য থেকে অন্যজনের মধ্যেও সংক্রমিত হচ্ছে। বিশেষ করে সামর্থ্যবান, ধনী, শিক্ষিত, ক্ষমতাশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনুসরণে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাবান, কম শিক্ষিত লোকরাও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে ওঠে। আবার কোথাও দুর্নীতি হয় সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে। কোনো ব্যক্তি বা চাকরিজীবী স্বাভাবিক অবস্থায় দুর্নীতি না করলেও সুযোগ পেলে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে, অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক ও পরিবেশের কারণেও মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়। প্রভাবশালীরা দুর্নীতি করে যদি পার পেয়ে যায় তবে অন্যরাও দুর্নীতি করবে।দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলা-পাক-ভারত উপমহাদেশের দুর্নীতির প্রকোপ আগে থেকেই তুলনামূলকভাবে বেশি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ সাল থেকেই দুর্নীতি বিস্তার লাভ করতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে দেয়া বিভিন্ন বক্তৃতায় দেশের দুর্নীতি, অতিমুনাফাখোরি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, কালোবাজারি প্রভৃতির বিরুদ্ধে কষ্ট ও হতাশা ফুটে ওঠে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুঃখজনক মৃত্যুর পর সামরিক সরকার ও পরবর্তী সময়ের সরকার দেশ শাসনের ফলে দুর্নীতি আরো ডালপালা বিস্তার করে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের প্রভূত অগ্রগতি হলেও দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি। আমাদের দুর্নীতি দমন কমিশন তেমন কার্যকর নয়। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। তবে সত্য কথা হলো, দুদকের পক্ষে সারা দেশের সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব নয়। তাছাড়া সারা দেশের দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণও দুদকের কাছে নেই। সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য ১৯৫৩ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরো সৃষ্টি হলেও পরবর্তী সময়ে কমিশনের জন্য প্রণীত আইনে দুদকের অধিক্ষেত্র বিস্তৃত হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় জনবল ও অফিস বিস্তৃতি হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকলেই কেবল দুদক কাজ করতে পারে।দুর্নীতির কারণে মানুষের নীতি-নৈতিকতা নষ্ট হয়। শুধু তা-ই নয়, দুর্নীতি দেশের সামাজিক পরিবেশ, রাজনীতি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নষ্ট করে। দেশে বৈষম্য বাড়ে। সব ক্ষেত্রে ক্ষমতাশালীদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে আমজনতা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্নীতিবাজরা নির্দ্বিধায় দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে অর্থ পাচার করছে। দেশের ভবিষ্যতের জন্য এসবই অশুভ লক্ষণ। বাংলা দেশের অব্যাহত অগ্রগতি সারা বিশ্বের বিস্ময়।স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হয়েছে তার পেছনে রয়েছে সরকারের নানা নীতিসহায়তা, উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীদের শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান, সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও জনগণের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান। উন্নয়নের এ পর্যায়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রচ্ছন্ন দুর্নীতির কারণে খরচ বেড়ে যাচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজের মান খারাপ হচ্ছে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিষয় যেমন বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে, তেমনি দুর্নীতির বিষয়টিও কারো অজানা নয়। 
দেশে দুর্নীতির প্রকোপ এতটা বেশি যে বর্তমানে মানুষের চিন্তা-চেতনায়ও এটি সংক্রমিত হচ্ছে, অথচ এ দেশে এরূপ বেপরোয়া দুর্নীতি মোটেও কাম্য নয়। 

এমনকি সরকারি চাকুরেদের উচ্চপদে নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি প্রভৃতিতে অন্য কোনো বিষয়ে প্রাধান্য বাদ দিয়ে সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠার মূল্যায়ন করতে হবে। সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। তাদের জনগণ ও স্টেকহোল্ডারদের অভাব-অভিযোগ শুনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে তত্পর হতে হবে। চাকরির প্রথম দিকের প্রশিক্ষণগুলোতে সততা, নৈতিকতা, দেশপ্রেমের ওপর প্রাধান্য দিয়ে সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। দেশের রাজনীতির ক্ষেত্রেও সন্ত্রাসী, লোভী ও অসৎ ব্যক্তিদের বয়কট করতে হবে। দেশে লাগামহীন দুর্নীতি যেমন হয়, তার বিপরীতে সৎ, দেশপ্রেমিক ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিরাও রয়েছেন। সমাজের ও দেশের জন্য তারা উদাহরণস্বরূপ ও অনুসরণযোগ্য। দেশ এগিয়ে যাওয়ার পেছনে তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। গত ৫০ বছরে আমাদের সবচেয়ে বড় ঘাটতি হলো, আমরা দুর্নীতি রোধ করতে পারিনি। দুর্নীতির পরিসর বেড়েছে। আগামীতে সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো কার্যকর করে তুলতে যোগ্যদের যথাস্থানে পদায়নের বিকল্প নেই। যেকোনো মূল্যে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন প্রতিহত করতে হবে। এর সঙ্গে সমাজের সর্বস্তরে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সৎ ও যোগ্যদের যথাস্থানে বসিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়ে সরকারকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান নিতে হবে। জনগণকেও এ ব্যাপারে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দুঃখ জনক হলেও সত্য, এই মহামারি করোনার সময়েও আমারা দুর্নীতির কবল থেকেও রক্ষা পায়নি মানুষ। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর দেখা গেল এই স্বাস্থ্য অধিদফতরের পুরোটাই দুর্নীতিতে আচ্ছন্ন। ২০২০ সালেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুর্নীতি নিয়ে দিনের পর দিন পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। চ্যানেলগুলোতে লাগাতার প্রতিবেদন, টকশো হয়েছে। 

সত্যি বলতে কি, দুর্নীতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। দুদক বড় দুর্নীতি নিয়ে কাজ করতে পারে না। পুলিশ, র‍্যাব বা সাংবাদিকরা যে বিষয়গুলো বের করে আনে সেগুলো নিয়ে দুদক কাজ করে।আইনের বাস্তবায়ন নেই বলে মানুষ দুর্নীতি করার সুযোগ পায়। এবং জনগণ তার আয়ের হিসাব বা করের তথ্য ঠিকভাবে দেয় না এবং এটা আদায়ে তেমন জোরদার ব্যবস্থা নেই ইত্যাদি। দুর্নীতি দমন করার মুল উপায়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। যেমন: রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে-এটা শুধু কাগজে কলমে থাকলে চলবে না এটা বাস্তবে থাকা প্রয়োজন। কারো প্রতি কোনো রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন না করে এটা থাকতে হবে। দেশের শীর্য পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে নিন্ম পর্যায় পর্যন্ত এর প্রয়োগ থাকতে হবে। আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে-এক্ষেত্রে যারা বিচারের আওতায় আসবে তাদেরকে আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আইন সকলের জন্য সমান হবে। কোনো রকম প্রভাব বা হস্তক্ষেপ ছাড়াই অপরাধীদের বিচার করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য থাকতে হবে- দুর্নীতি দমনে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান কাজ করছে সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা থাকতে হবে। যেমন জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন এবং দুদক যাদের উপর দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব রয়েছে, তাদেরকে সকল প্রকার প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে কাজ করতে হবে এবং সক্রিয় থাকতে হবে। তারা নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে থাকবে এবং কেউ তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। জাতীয় সংসদের যে কমিটিগুলো রয়েছে সেগুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে সক্রিয় থাকবে এবং তাদের জবাবদিহিতা থা