প্রাণিসম্পদ খাতে চলছে অস্থিরতা


Janobani

মো. রুবেল হোসেন

প্রকাশ: ০৮:০৭ অপরাহ্ন, ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৩


প্রাণিসম্পদ খাতে চলছে অস্থিরতা
ফাইল ছবি।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে জোরালো ভূমিকা রাখতে কাজ করছে সরকার। প্রাণিসম্পদ খাতের উপর গুরুত্বারোপও লক্ষনীয়। আমাদের দেশে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির বলয় তৈরি করতে হলে এ খাতের ভূমিকা রয়েছে অতুলনীয়। 


অন্যান সেক্টরের মত কৃষি ও মৎস্য সম্পদ খাত এগিয়ে গেলেও প্রাণিসম্পদ খাত এখনো রয়েছে পিছিয়ে। এর কারণ হিসেবে যে বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হচ্ছে, তা হলো সংশ্লিষ্ট শিক্ষার গ্র্যাজুয়েটদের দ্বিধাবিভক্তি। সম্প্রতি অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন বাতিলের জন্য সারাদেশের ১৪টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশন (বিভিএ) এর নেতৃবৃন্দরা। 


আরও পড়ুন: জলবায়ু উপযোগী প্রাণিসম্পদ উৎপাদনে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন


বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মূল ভবনের সামনে অবস্থা নেয় বিভিএ'র নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী অনেকে এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা লাগাতার অবস্থান নেবেন বলে জানা যায়। 


মঙ্গলবার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদার সমাবেশে এসে তার অবস্থান ব্যাখা করেছেন। বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশন (বিভিএ) এর নেতৃবৃন্দের দাবি অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি আইন নিয়ে তারা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাহিদ রশীদের সাথে বসতে প্রস্তুত। 


তিনি ডাকা মাত্র  তারা হাজির হবেন। তারা চান আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান হোক। সমাধান না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের একীভূত ডিগ্রির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪১তম বিসিএসে লাইভস্টক ক্যাডারে ৭৬ পদের বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ হয়। বিসিএসে ডিভিএম ডিগ্রিধারীদের জন্য ৫৯ পদ এবং এএইচ ডিগ্রিধারীদের জন্য ১৭ পদ দেওয়া হয়। কিন্তু সমন্বিত ডিগ্রিধারীদের জন্য সব পদেই আবেদন করার সুযোগ রয়েছে; পৃথক দুটি ডিগ্রিধরী গ্র্যাজুয়েটরা পরেছেন সমস্যায়। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি নির্দিষ্ট সময় পরে মেকআপ কোর্স প্রদান বন্ধ হয়ে গেলে এ দুটি পৃথক ডিগ্রির গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সরকারি ক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যাবে। তাই দেশব্যাপী অভিন্ন কোর্স-কারিকুলামে একক ডিগ্রি সিস্টেম চালু করা প্রয়োজন। 


প্রাণিসম্পদে শিক্ষা, গবেষণা ও সেবাকে এক ছাতায় নিয়ে আসার জন্য সরকার ও মন্ত্রণালয় যেখানে কাজ করে যাচ্ছে, সেখানে সবার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা একান্তই কাম্য। জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেশাগত উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সমৃদ্ধির জন্য যুগোপযোগী ডিগ্রি চালু করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এগিয়ে আসে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থা উল্টো। 


ডিগ্রি স্টেকহোল্ডারদের বা দেশের চাহিদা পূরণের জন্য। ডিগ্রিধারীরা যাতে চাকরি পায় ও খামারি বা উদ্যোগক্তারা যেন স্বল্পমূল্যে তাদের সেবা পেতে পারে সেদিকেই লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন। আমাদের দেশে একই কাজের জন্য দুইধরনের ডিগ্রি তৈরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে সরকারের শত শত কোটি টাকা অপচয় হচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক বা খামারিরা।


আরও পড়ুন:শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর শোক



মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাহিদ রশীদ বলেন, অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি কাউন্সিল আইন করতে মাত্র একটি সভা হয়েছে। অনেক সংগঠন এ আইনের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। তারা আরও স্টেকহোল্ডারের মতামত নেবেন। 


কৃষক-খামারিদের চাহিদা ও সম্ভাবনাময় প্রাণিসম্পদ খাতকে এগিয়ে নিতে এবং জনগণের আমিষের জোগান নিশ্চিত করতে হবে।


আরএক্স/