মাস্টার গ্রুপের প্রধানসহ ১০ ডাকাত গ্রেফতার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:৪৮ অপরাহ্ন, ২রা জানুয়ারী ২০২৪


মাস্টার গ্রুপের প্রধানসহ ১০ ডাকাত গ্রেফতার
ছবি: জনবাণী

ঢাকার কেরানীগঞ্জে নির্জন বাড়ি টার্গেট করে ডাকাতি চালায় দুর্ধর্ষ ডাকাত দল মাস্টার গ্রুপ। ডাকাতির ঘটনায় তারা চক বা খোলা বিলের পাশে নির্জন বাড়িকে টার্গেট করতো। ডাকাতি করার সময় পুলিশের চোখ ফাঁকি দেয়ার জন্য মাছ ধরার জাল সাথে রাখতো তারা। কোথাও পুলিশ টহলটিম বা চেকপোস্টে ধরা পড়লে তারা পেশায় জেলে এবং রাতে মাছ ধরতে যাচ্ছে বলে জানাতো। এই দুর্ধর্ষ ডাকাত দলটির প্রধান ইলিয়াস মাস্টারসহ ১০ জনকে গ্রেফতা করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ।


মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান।


গ্রেফতার হওয়া ডাকাত দলের অপর সদস্যরা হলেন- শাহিন ওরফে ভাগিনা, সোহেল, বাবুল, আসাদ, রাশেদুল ওরফে বিটু, ওহাব ওরফে নানা, সামাদ, দীপু ও মকবুল ওরফে মঙ্গল।


আসাদুজ্জামান বলেন, শীতের তীব্রতা ও কুয়াশা বাড়ার সাথে সাথে গত কয়েক সপ্তাহে দূর্ধর্ষ ডাকাত দলটি কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন বলসুতা ও অভ্রখোলা এবং দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন বাস্তা ইউনিয়নের বিভিন্ন নির্জন এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি বাড়িতে সিরিজ ডাকাতি করে আসছিল। সশস্ত্র এই ডাকাতদল গভীর রাতে বাড়ির গ্রিল কেটে ঢুকে পড়তো এবং দেশীয় অস্ত্রের মুখে বাড়ির সকলকে জিম্মি করে ফেলতো। বাড়ির পুরুষ সদস্যদের হাত-পা, চোখ-মুখ বেধে ফেলে এবং মহিলাদের চোখ-মুখ বেধে ফেলতো। তারপর ডাকাতদলের অন্য সদস্যরা মুহুর্তের মধ্যে বাড়ির আলমিরা, শোকেজসহ সবকিছু ভেঙে তছনছ করে মূল্যবান স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও দামি কাপড়-চোপড় এমনকি টেলিভিশন পর্যন্ত খুলে নিয়ে যেত। ডাকাতরা বাড়ির সবার মোবাইল কেড়ে নিয়ে চলে যাবার সময় বাইরে ফেলে দিয়ে যায়। কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় ডাকাতদল ডাকাতি করে ফেরার সময় স্থানীয় কারো বাধাঁর সম্মুখীন হলে একের পর এক ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। দুর্ধর্ষ এইসব ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেয় ডাকাত দলের সর্দার যাকে ডাকাত দলের সদস্যরা 'মাস্টার' বলে সম্মোধন করতো। ডাকাতির জন্যই তাকে এ উপাধি দেয়া হতো। এসব ঘটনায় কেরাণীগঞ্জ মডেল থানায় ১ টি এবং দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় ৩ টি ডাকাতির মামলা হয়।


আরও পড়ুন: ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ


তিনি আরও বলেন, মামলার পর ঢাকা জেলা পুলিশের একটি চৌকস তদন্ত দল দুর্ধর্ষ ডাকাত মাস্টার গ্রুপকে গ্রেফতারের জন্য কাজ শুরু করে। তদন্ত টিম প্রতিটি ডাকাতির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে এবং ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয় যে, ডাকাত সর্দার 'মাস্টার' এর নেতৃত্বে একটি ভয়ংকর ডাকাতদল সবগুলো ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। একপর্যায়ে তদন্ত দল তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত দুর্ধর্ষ এই ডাকাতচক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে মাস্টার গ্রুপের প্রধান ইলিয়াসসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানকালে ডাকাতদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ডাকাত দলের পলাতক অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত অন্যান্য মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।


জেবি/এসবি