জেঁকে বসেছে শীত, গরম কাপড়ের খোঁজে ফুটপাতে ভিড়


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:২৪ অপরাহ্ন, ১৪ই জানুয়ারী ২০২৪


জেঁকে বসেছে শীত, গরম কাপড়ের খোঁজে ফুটপাতে ভিড়
গরম কাপড়ের খোঁজে ফুটপাতে ভিড়। ছবি: জনবাণী

আল জুবায়ের: রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই জেঁকে বসেছে শীত। একটু উষ্ণতার জন্য মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মানুষ ছুটছে গরম পোশাক কিনতে। দিনভর রাজধানী আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাতে ক্রেতার ভিড় লেগেই আছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর নিউমার্কেট, সাইন্সল্যাব,এলিফ্যান্ট রোড সহ  আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে শীতের পোশাক বিক্রি। ক্রেতার চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী বিভিন্ন দামে মিলছে শীতের নানা পোশাক।


আরও পড়ুন: শৈত্য প্রবাহে পাবনায় জনজীবন বিপর্যস্ত


রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চন্দ্রিমা মার্কেট, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্স, নূর ম্যানশন এবং নিউমার্কেটে রাস্তার দু'পাশের ফুটপাতে শীতের কাপড়-চোপড় কেনাকাটায় ভীষণ ব্যস্ত ক্রেতারা। এসময় হকারদের বলতে শোনা যায় "দেইখ্যা লন বাইছা লন,এক দাম ২০০" কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতে নতুন কাপড়-চোপড় কিনতেই তারা নিউমার্কেটে এসেছেন। কম মূল্যেই আরামদায়কভাবে কেনা-কাটা করা যাচ্ছে। পুরুষদের হুডি, জ্যাকেট, ফুল হাতা টি-শার্ট কিনতে বেশি দেখা গেছে। মেয়েরা সোয়েটার, চাদর, হুডি কিনতে ব্যস্ত। এছাড়া, শিশুদের জন্য জাম্পার, গেঞ্জি, টুপি, কাপড়ের জুতা কিনতে দেখা যায় অনেক নারী ক্রেতাকে।


ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রতিটি হুডি ২৫০-৩৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। টি-শার্ট ১৫০-২০০ টাকা, সোয়েটার ৩০০- ৪০০ টাকা আবার কিছু জায়গায় ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও, শীতের টুপি ১০০-১৫০ টাকা, চাদর ২৫০-৪০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। কাপড়ের জুতা পাওয়া যাচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়, জ্যাকেট প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০০, ৫০০ থেকে ৬০০- ৮০০ এর মধ্যে। দোকানগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশুদের শীতবস্ত্র।


ফুটপাতের দোকানে কাপড় কিনতে আসা রবিন মিয়া বলেন, শীত নিবারণের জন্য প্রয়োজন গরম কাপড়। মার্কেটে কাপড়ের দাম বেশি। ফুটপাতে নতুন ও পুরোনো কাপড়ের দাম তুলনামূলক কম, আর দেখতেও খুব ভালো। তাই ফুটপাতের কাপড়ের দোকানে কিনতে এসেছি। যে চাদর ও সোয়েটার আমি এখান থেকে চার শ’ টাকা দিয়ে কিনেছি, সেটা মার্কেটের দোকানে গেলে হাজার-বার শ’ টাকা লাগতো। গরিবের জন্য এই দোকানগুলো অনেক উপকারের।  


ভ্যানে ফেরি করে শীতের কাপড় বিক্রি করা কয়েকজন দোকানদার বলেন, এসব কাপড় আমরা বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করে বিভিন্ন রাস্তায় অলি-গলিতে বিক্রি করি। দাম কম হওয়ায় বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। শীত যত বাড়বে এই কাপড়ের চাহিদাও তত বাড়বে।


নিউমার্কেট এলাকার হকার ইউসুফ মিয়া জানান, এবারের শীত মৌসুমে তিনি দেড় লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। 'আমি প্রতি বান্ডিল ১০ হাজার টাকায় ১৫ বান্ডিল গরম কাপড় কিনেছি। প্রতি বান্ডিল পোশাক বিক্রি করে ৩-৪  হাজার টাকা লাভ হয়'


তিনি বলেন, প্রতিটি বান্ডিলে উলের ক্যাপ, স্কার্ফ, গ্লাভসসহ আট প্রকারের পণ্য রয়েছে। মানভেদে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে সোয়েটার বিক্রি করছি।


আরও পড়ুন: শীতের দাপটে কাঁপছে দেশ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রিতে


এই এলাকার আরেক ভাসমান ব্যবসায়ী আব্দুল গণি জানান, তিনি ৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দামের উলের তৈরি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন। ঠান্ডা বাড়তে থাকায় তার দোকানে বিক্রিও বেড়েছে।


ফুটপাতে ব্যবসা সম্পর্কে জানতে চাইলে এক হকার বলেন, ফুটপাতে ব্যবসা করার জন্য তাদের বিভিন্ন প্রভাবশালীদের কাছে দৈনিক ১০০-২০০ টাকা দিতে হয়। তবে 'প্রভাবশালীদের' সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। ক্রেতাদের অভিযোগ শীত বেশি পড়ায় দোকানীরা বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন।তবে দোকানীরা বলছেন জিনিসদ্রব্যের দাম বেশি হওয়ায় তাদেরকে সবকিছু বেশি দিয়ে আনতে হয়, ফলে দাম একটু বেশিই পড়ছে। 


আরএক্স/