সাজা শেষ হলেও দেশের কারাগারে বন্দি ১৫৭ বিদেশি, শুনানি ১০ মার্চ


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১:১৮ পূর্বাহ্ন, ২১শে জানুয়ারী ২০২৪


সাজা শেষ হলেও দেশের কারাগারে বন্দি ১৫৭ বিদেশি, শুনানি ১০ মার্চ
প্রতীকী ছবি

অপরাধের সাজা খাটা শেষ হলেও দেশের কারাগারগুলোতে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশি কারাবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের এবং একজন করে পাকিস্তান ও নেপালের নাগরিক রয়েছে। ১৫৭ জনের মধ্যে ১৯ জনের মতো নারী রয়েছেন।


১৫ জানুয়ারি (সোমবার) এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানির পর সাজা ভোগ শেষেও বাংলাদেশের কারাগারে রয়েছেন এমন বিদেশিদের তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। 


আরও পড়ুন: আমীর খসরুর শেষ ৪ মামলায় জামিন শুনানি আজ


এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) কারা অধিদপ্তর ১৫৭ বিদেশি বন্দির এই তালিকা আদালতে দাখিল করে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চে আগামী ১০ মার্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।


রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, সাজা খাটা হলেও অন্য দেশের নাগরিক হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে এসব ব্যক্তিদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হয়। সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের মুক্তি দেওয়াও সম্ভব নয়।


মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) গ্রেপ্তার আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।  


ওইদিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তার নামে মামলা করে বিজিবি। তদন্তের পর একই বছর ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৪২ ধারা ও দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। বিচার শেষে মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম মিজবাহ উর রহমান  দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় আদালত গোবিন্দ উড়িয়াকে ২ মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।  


রায়ে বলা হয়, সাজার মেয়াদের চেয়ে চারদিন বেশি সাজা ভোগ করে ফেলেছেন গোবিন্দ উড়িয়া। তাই তার প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। এ রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও প্রত্যাবাসন হয়নি গোবিন্দ উড়িয়ার। ফলে কারামুক্তিও ঘটেনি। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন করে একটি টেলিভিশন চ্যানেল।


ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তার প্রত্যাবাসনে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।


অন্তর্বর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়। আর  দণ্ড বা সাজাভোগ করার পরও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে।


আরও পড়ুন: বনজ কুমারের মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াসের বিচার শুরু


এরপর আদালতে দাখিলের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদপ্তর। কারাবন্দি এই বিদেশি নাগরিকদের সাধারণত অনুপ্রবেশের দায়ে দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২, পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় হয়েছে।  


ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত জানান, পরবর্তী ধার্য তারিখে এ প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হবে।


জেবি/এজে