জাবি প্রেসক্লাবের সফলতার এক যুগপূর্তি


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:৩১ অপরাহ্ন, ২১শে জানুয়ারী ২০২৪


জাবি প্রেসক্লাবের সফলতার এক যুগপূর্তি
ছবি: জনবাণী

বর্ণাঢ্য আয়োজনে এক যুগপূর্তি উৎসব উদ্‌যাপন করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব (জাবি প্রেসক্লাব)। সাবেক ও বর্তমান ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে জাবি অঙ্গন।


রবিবার (২১ জানুয়ারি) বেলা দশটায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, শিক্ষক লাউঞ্জে যুগপূর্তি অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হয়।


আরও পড়ুন: জাবিতে সিনেট থেকে সিন্ডিকেটে দুজন সদস্য মনোনয়ন দাবি


আলোচনা সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি শিহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হাসিব সোহেল এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম। প্রধান আলোচক ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক জনাব শ্যামল দত্ত।


অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক শেখ মো: মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), অধ্যাপক রাশেদা আখতার (কোষাধ্যক্ষ), অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক উপদেষ্টা, জাবি প্রেসক্লাব।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম বলেন,পড়াশোনার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করলেও জাবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের লেখনীতে মনে হয় তারা যেন জাতীয় পর্যায়ের পেশাদার সাংবাদিক। গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সত্য প্রকাশের স্বার্থে যেকোন প্রয়োজনে আমাদের কাছে তথ্য জানতে চাইবেন। 


বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বৃদ্ধিতে সাংবাদিকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নত করতে। ইতোমধ্যে আমরা বায়োডাইভারসিটি মাস্টারপ্ল্যান করার উদ্যোগ নিয়েছি। দীর্ঘ ৫৪ বছর পর আমরা বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছি। অনুষদভিত্তিক বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছে সমাজবিজ্ঞান এবং গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ। বিশ্ববিদ্যালয় যাতে শিক্ষা গবেষণায় আরও এগিয়ে যায় সেজন্য সাফল্যগুলো আপনারা পত্রিকায় তুলে ধরবেন। 


আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে দৈনিক ভোরের কাগজ সম্পাদক জনাব শ্যামল দত্ত বলেন, আমরা সাংবাদিকতা কেন করব এটি জানা জরুরি। বর্তমান জেনারেশনের কেউ পত্রিকা পড়েনা। বই পড়ে না, অডিওবুক শুনে। দশ বছর পর পত্রিকা বলতে কিছু থাকবে না বিশ বছর পর হয়তো টেলিভিশন বলতে কিছু থাকবে না। আমাদের জেনারেশনের বেশ কিছু মানুষের এখনো পত্রিকা পড়ার অভ্যাস রয়ে গেছে। এরপরেও যারা সাংবাদিক পেশায় আসতে চান তাদেরকে প্রচুর পড়তে হবে, জানতে হবে। ক্লাসিক সাহিত্য যেমন রবীন্দ্রনাথ, তারাশঙ্কর, জীবনানন্দকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে। ভালো মুভি দেখতে হবে।‌ গান শুনতে হবে। সাংবাদিক হই না হই, নিজেকে একজন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।"


অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের এক যুগ পূর্তি উৎসব উপলক্ষে জাবি প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব এক যুগ পার করেছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে জাবি প্রেসক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একজন সংবাদ কর্মী অনেক তথ্য-উপাত্ত যাচাই বাছাই করে গবেষণার মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে। প্রেসক্লাবের সকল কর্মীকে হলুদ সাংবাদিকতা থেকে দূরে থাকতে হবে, ভুল তথ্য যেন ছড়িয়ে না পরে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই যাত্রা অব্যাহত থাকলে একদিন জাবি প্রেসক্লাব দেশ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।"


সমাপনী বক্তব্যে জাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি শিহাব উদ্দিন বলেন, ২০১২ সাল থেকে হাটি হাটি পা পা করে সকলের প্রচেষ্টায় আজ এক যুগ পূর্ণ করলো জাবি প্রেসক্লাব। প্রেসক্লাব সদস্যরা বাংলাদেশে প্রথম সারির দৈনিকগুলোতে কাজ করছে। ১৫টি প্রিন্ট পত্রিকাসহ ২০ টির অধিক অনলাইন ও অন্যান্য পত্রিকায় কর্মরত ২৭ জন সদস্য এবং ১৫ জন সহযোগী সদস্যের এক বিশাল পরিবার এটি। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গত এক যুগে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এই সাংবাদিক সংগঠনটি স্বমহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছে।


এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, অনুষদের ডিন, হল প্রভোষ্ট, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরসহ ক্লাবটির সাবেক সভাপতি-সম্পাদক এবং বর্তমান কার্যকারী সদস্যবৃন্দ।


আরও পড়ুন: জাবিতে শিক্ষক সমিতি নিবার্চনে দুই প্যানেলের লড়াই


দুর্ভিক সাহসী কিছু উদ্যমী তরুণ ক্যাম্পাস সাংবাদিক ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব নামের যে চারা রোপণ করেছিলেন আজ তা মহীরুহে পরিণত হয়েছে। সত্য প্রকাশে নির্ভীক  সব বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে এক যুগ অতিক্রম করল ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন।


আরএক্স/