ইতালি গিয়ে ৭ মাস বেকার, অবশেষে যুবকের আত্মহত্যা!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৪ অপরাহ্ন, ২৮শে জানুয়ারী ২০২৪
ইতালির রাজধানী রোমের তুসকোলানা জুলিও আগ্রিকোলা পার্কে একটি গির্জার পেছন থেকে ইতালি প্রবাসী সুমন মিয়া (২৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।। পুলিশ ও দূতাবাসের ধারণা ২৩ জানুয়ারি রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে এক পথচারী তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ও দূতাবাসের ধারণা মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: ৬০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো ইউরোপ
জানা গেছে, সুমন মিয়ার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার নীলখী পরবোর হোমনা চম্পক নগরে। তার বাবার নাম বারিক।
এ নিয়ে কুমিল্লার মুরাদ মহিবুর নামে এক ইতালি প্রবাসী স্ট্যাটাস দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
হায়!!রে!! ইউরোপ!!স্বপ্নের ইউরোপ!!স্বপ্নের ইতালি!! এক বুক স্বপ্ন নিয়ে প্রিয় জেলা কুমিল্লার সুমন মিয়া সাত মাস আগে ইতালির রোম শহরে এসেছে, মাত্র ২৩ বছরের এক টগবগে যুবক, এসেছে ইউরোপের উন্নত দেশ ইতালিতে সোনার হরিণ ধরতে !! এই উন্নত দেশে নিজকে এবং নিজ পরিবারকে প্রতিষ্ঠিত করতে, স্বপ্ন আর বাস্তব বড়ই কঠিন, দীর্ঘ সাত মাস বেকার থেকে কোন কাজ না পেয়ে এক নিষ্ঠুর আত্মসমর্পণ ,গলায় ফাঁস দিয়ে তরতাজা জীবনটাকে শেষ করে দিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে !! ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহির রাজিউন !! আমি তার এমন মৃত্যুতে অত্যান্ত মর্মহত এবং শোকাহত !! এমন নির্মম মৃত্যু কারোই কাম্য নয়, আশা করি নতুন করে যারা আসবেন কিংবা আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন,তাদের উদ্দেশ্যে বলি যদি কেউ আসতে চান অবশ্যই লিগ্যাল ওয়েতে Sponsor ভিসায় আসবেন, Agriculture ভিসায় এসে এইখানে তেমন কোন কাজ নেই, তাই একান্ত কোন নিজেস্ব আপনজন না থাকলে আমি বলি না আসাটাই ভালো, কারণ এগ্রিকালচার ভিসায় এসে কোন কাজ পাওয়া যায় না, অনেক কষ্ট করতে হয়, এর মাঝে বাসা ভাড়া এবং নিজের ব্যক্তিগত খরচ বাবদ প্রতি মাসে নুন্নতম ৪০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় 50,000 পঞ্চাশ হাজার টাকার মতো খরচ বহন করতে হয় !!নতুন এসে এই টাকা টা ইনকাম করাটা ও অনেকটা কষ্ট দায়ক, হয়তো আপনাকে ও এই সুমন মিয়ার মতো একটা কাজের আশায় আশায় ছয়,সাত,মাস অপেক্ষা করতে হবে,পাশাপাশি খাওয়া খরচ এবং বাসা ভাড়া বাবদ ঐ ইউরো গুলো বহন করতে হবে,এটাই চিরন্তন সত্য,যা কেউ বলতে চায় না,আর নতুন এসে ইতালিতে কাজ পাওয়া অনেকটা ভাগ্যের ব্যাপার!!ভাগ্য সহায় না হলে কাজ পাওয়া অনেক কষ্ট দায়ক,নতুনরা কাজ না পাওয়ার দুটো কারণ আছে,প্রথমত ভাষা জনিত সমস্যা,দ্বিতীয়ত ডুকোমেন্ট সমস্যা,তাই অবশ্যই অবশ্যই ভেবে চিন্তে আসবেন, এগ্রিকালচার ভিসায় না এসে চেষ্টা করবেন লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসতে,লিগ্যাল ওয়েতে আসলে অন্ততপক্ষে একটা কাজ এবং একটা ডকুমেন্টের আশা করা যায়,যা থাকলে অনেকটা হতাশামুক্ত হওয়া যায় এবং একটা কাজ পাওয়ার আশা করা যায়!টাকা আপনার চিন্তা ও আপনার অবশ্যই ভেবে চিন্তে কাজ করবেন,ইউরোপ এ আসা মানে এই নয় যে আপনি প্রথম মাস থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করবেন, এটা একদম মিথ্যে এবং বড় ধরণের মিথ্যে আশা,অনেকটা আশার গুঁড়ো বালি,তাই বলি নতুন কেউ আসলে দেশ থেকে ব্যাংক লোন কিংবা সুদ কিস্তি নিয়ে দয়া করে আসবেন না!যা আপনার মানসিক পীড়া দায়কের কারণ হতে পারে!এবং হিতে বিপরীত ও হতে পারে!! পরিশেষে এটাই বলি দূর থেকে স্বপ্নে দেখে অনুমান করা,আর বাস্তবে অনেক কঠিন ইউরোপের জীবন!!বিশ্বাস করুন বা না করুন একান্ত আপনার বিষয়!!
আরও পড়ুন: সৌদিতে এক সপ্তাহে ১৯ হাজারের বেশি অভিবাসী গ্রেফতার
রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের সচিব (শ্রম ও কল্যাণ) আসিফ আনাম সিদ্দিকী জানান, আত্মহত্যার ঘটনাটি তারা জেনেছেন। এ ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার সত্যতা পেয়েছে। কিন্তু পুলিশের ক্লিয়ারেন্স না পাওয়া পর্যন্ত দূতাবাস কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। তবে দূতাবাস ইতোমধ্যে ওই যুবকের পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী দেশে যোগাযোগ করেছে। পুলিশের তদন্ত শেষ হলে দূতাবাস পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আরএক্স/