আলুর আশানুরূপ ফলনের আশায় ক্ষেতে কৃষকদের বাড়তি যত্ন
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৪৩ অপরাহ্ন, ৩০শে জানুয়ারী ২০২৪
শ্রীনগরে নানা চ্যালেঞ্জ সর্তেও লাভ লোকসানের হিসেব কষে আলুর অশানুরূপ ফলন পাওয়ার লক্ষ্যে আবাদি জমির বাড়তি পরিচর্যা ও যত্ন নিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এর আগে ঝূর্ণিঝড় মিকজাউমের প্রভাবে আলুর বীজ বপণকৃত জমি আক্রান্ত হয়ে অতিরিক্ত খরচে পুনরায় জমিতে আলুবীজ বপণ করতে হয়েছে ভুক্তভোগীদের। এতে জমিতে আলুর কাঙ্খিত ফলন না পাওয়া গেলে এ চাষে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। মাথায় দুশ্চিন্তা নিয়ে প্রান্তিক কৃষক আলু জমির সার্বিক যত্ন নিচ্ছেন। এরই মধ্যে জমিতে পানি সেচ, কীটনাশক স্প্রে ও প্রয়োজনীয় নিড়ি দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২৩শত’ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষকের খামারে গিয়ে সাইলেজ তৈরি শিখাচ্ছে প্রকল্প কর্মকর্তা
উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরতারা, কুকুটিয়া, তন্তর, আটপাড়া ও ষোলঘর ইউনিয়নে পুর্ব এলাকার খৈয়াগাঁও-পুর্ব দেউলভোগ চকে ব্যাপক আলু চাষ করা হচ্ছে। তবে প্রথম দিকে টানা বৃষ্টিতে প্রায় ৫শত’ হেক্টর আলু জমি আক্রান্ত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা অতিরিক্ত দামে আলুর বীজ, সার, জমি হালচাষ ও শ্রমিক মজুরী দিয়ে পুনরায় জমিতে আলু চাষ করেন।
স্থানীয়রা জানায়, কানি প্রতি আক্রান্ত জমিতে (১৪০ শতাংশ জমিতে) পুনরায় আলু চাষে ব্যয় ধরা হচ্ছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। সেই হিসেবে সমপরিমাণ জমিতে আলুর উৎপাদণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে অন্তত ৪শত’ মণ। এতে সব খরচ বাদে প্রতি মণ আলুর উৎপাদণের খরচ পড়বে প্রায় ৮শত’ টাকা।
বর্তমান আলুর পাইকারীর বাজারে ৩২ টাকা কেজি দরে আগাম আলুর মণ কেনাবেচা হচ্ছে ১ হাজার ২৮০ টাকা। খোলা বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা করে। আলুর ভরা মৌসুমে কাঙ্খিত বাজার মূল্য পাওয়া না গেলে আলু চাষীরা লোকসানে মুখে পড়বে। এমনটাই ভাবছেন স্থানীয় আলু চাষীরাও।
তারা বলছেন, খুচরা বাজারে আলুর দাম চড়া। এখন পাইকারীর বাজারও ভালো যাচ্ছে। তবে সামনে পাইকারীর আলুর বাজারের ধারাবাহিকতা থাকবে কিনা এনিয়ে তারা চিন্তিত। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আলু ক্ষেতের আগাছা-জঙ্গল অপসারণ, কীটনাশক স্প্রে ও পানি সেচ কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন শ্রমিকরা। উত্তরগাঁও, পানিয়া, পাঁচলদিয়া, আটপাড়া, বীরতারা এলাকায় আবুল হোসেন নীলচান, মো. জয়নাল, দেলোয়ার শেখ, জসিমসহ কয়েকজন বলেন, কানি প্রতি আলু ক্ষেতে পানি সেচ করার বিনীময় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা মজুরী নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ২ কোটি ২৭ লাখ কৃষক পরিবার স্মার্ট কৃষি কার্ডের আওতায় আসবে
এছাড়া শহিদুল নামে একজন জানান, জমিতে কীটনাশক স্প্রে করার জন্য (২০ লিটার পানির ট্যাংকি) প্রতি ট্যাংকির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। কল্লিগাঁও এলাকার আলাউদ্দিন বলেন, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে জমিতে পুনরায় আলু চাষ করছি। আলুর কঙ্খিত ফলন ও বাজার মূল্য পাওয়া না গেলে লোকসান হবে।
বিবন্দীর আলম হোসেন বলেন, ৬ কানি জমিতে আলু চাষ করেছি। এ চাষের প্রথম দিকে বৃষ্টিতে জমি নষ্ট হয়ে যায়। পুনরায় ১ কানি জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ৩ লাখ টাকা। এখন ফসলের কাঙ্খিত ফলনের আশায় আলু ক্ষেতের যত্ন করে যাচ্ছি।
আরএক্স/