হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:২৭ অপরাহ্ন, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২৪


হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত
ছবি: জনবাণী

মিয়ানমারের চলমান সংঘর্ষে হেলিকপ্টার থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা হামলা চালাচ্ছে দেশটির সামরিক বাহিনী। 


ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪ টার পর থেকে একাধিকবার হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা গেছে। এসময় হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে নজরুল ইসলাম টিটু (২৬) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছে।


আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সংঘাত: থমথমে ঘুমধুম সীমান্ত


ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু পশ্চিমকুল এলাকার যুবক নিজের ঘরের সামনে অবস্থান করছিল। এসময় হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলি এসে তার পায়ে লেগেছে। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


রবিবার সকাল ১০টার দিকে বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন প্রবীর চন্দ্র ধর। তিনি ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা। তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।


ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে তুমুল সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘুমধুম সীমান্তে একাধিক গুলি, মর্টার শেল এসে পড়েছে। এতে কমপক্ষে ৩ টি বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রাতে এই তুমুল সংঘর্ষের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বাইশফাঁড়ি এলাকার প্রবাসি নুরুল কবীরের বাড়িতে বারুদ এসে পড়ে। এসে ওই ঘরটি আগুন পুঁড়ে গেছে। এর আগে শনিবার বিকালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি গুলি অটোরিকশায় এসে লাগে। এতে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও অটোরিকশার সামনের গ্যাস ভেঙে গেছে।


তিনি বলেন, ‘এতে আতঙ্কে বিরাজ করছে থমথমে পরিবেশ। লোকজনের চলাচল সীমিত হয়েছে।’


এদিকে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কমপক্ষে ৫০ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধসহ আহত রয়েছেন।


রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টার দিকে আহত বিজিপি সদস্যরা কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পস্থ এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে এনেছে বিজিবি সদস্যরা। এব্যাপারে বিজিবির কোন বক্তব্য এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।


তবে হাসপাতাল সূত্র বলছে, বিজিপির আহত ১০ সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।


বিজিবির কক্সবাজারস্থ ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল আশরোকি মিয়ানমারের বিজিপির কত সদস্য পালিয়ে এসেছেন তা নিশ্চিত করেননি।


তিনি বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সাথে রাত থেকে তুমুল যুদ্ধের মধ্যে কয়েকজন বিজিপি সদস্য প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করেছে। এদের বিজিবির ঘুমধুম সীমান্ত বিওপিতে রাখা হয়েছে। বিজিপি সদস্যদের অস্ত্র ও গুলি বিজিবির কাছে জমা রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এ বিষয়ে ঘুমধুম সীমান্তে বিজিবির পক্ষে প্রেস বিফ্রিং করার কথা থাকলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬ টা) প্রেস বিফ্রিং করা সম্ভব হয়নি।


বিজিবি সূত্র জানিয়েছে এ মূহুর্তে সীমান্তের কাছা-কাছি তুমুল লড়াই চলছে। ওখানে বিস্ফোরিত গোলা-বারুদের শব্দের কারণে কাঁপছে সীমান্ত এলাকা। ফলে প্রেস বিফ্রিং বিলম্ব হচ্ছে।


আরও পড়ুন: মিয়ানমারের ১৪ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পে


বিজিবির পক্ষে কত সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তা এ পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ জন আশ্রয় নিয়েছে। এতে গুলিবিদ্ধ সহ আহতদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।


বান্দরবানের  জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি বিজিবি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।


আরএক্স/