৫৯ বছর পর চালু হচ্ছে রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথ


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:২৭ অপরাহ্ন, ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪


৫৯ বছর পর চালু হচ্ছে রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ নৌপথ
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ আন্তর্জাতিক নৌপথ উদ্বোধন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে এই বন্দরের উদ্বোধন করবেন। 


১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আগ পর্যন্ত সুলতানগঞ্জ-ময়া ও গোদাগাড়ী- লালগোলা নৌপথে বাণিজ্য চালু ছিল। 


বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বে রাজশাহী থেকে নৌপথে পণ্য পারাপার হতো। ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘী থানার ময়া নামক এলাকা থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত পণ্য পারাপার হতো। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হতো পাট ও মাছ। ভারত থেকে আমদানি হতো বিভিন্ন পণ্য।  আবারও দীর্ঘ ৫৯ বছর পরে চালু হচ্ছে এ নৌপথ। 


নৌপ্রটোকল চুক্তির আওতায় এই নৌবন্দর আবারও চালু হবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর উদ্বোধনের বিষয়টি চুড়ান্ত করেছে।


আরও পড়ুন:  নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা নেতাদের কাশ্মীরি শাল উপহার দিলেন নৌপ্রতিমন্ত্রী


রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ নদী বন্দর উদ্বোধনের পর ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার ময়া নদী বন্দরের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু হবে। 


প্রাথমিক অবস্থায় এই পথে ভারত থেকে সিমেন্ট তৈরি কাঁচামাল, পথর, মার্বেল, খনিজ বালুসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী আমদানি হবে। বাংলাদেশ থেকে বস্ত্র, মাছ, পাট ও পাটজাত পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য ভারতে রপ্তানি হবে। এ রুটে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সময় ও খরচ কমে যাবে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, বছরে এই নৌপথে দুই দেশের মধ্যে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে।


নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেয় হয়, প্রথমে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ান নৌপথে বাণিজ্য চালুর। 


রাজশাহী থেকে ধুলিয়ান নৌপথের দূরত্ব ৭৮ কিলোমিটার নৌপথের অনুমোদন থাকলেও পদ্মার নাব্যতা সংকটের কারণে তা আর কার্যকর হয়নি।


পরে নৌপথটি সংক্ষিপ্ত করে রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ থেকে ভারতের মুর্শিদাবাদের ময়া নৌবন্দর পর্যন্ত আড়াআড়িভাবে ২০ কিলোমিটার পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে বাণিজ্য সম্পাদন হবে।


আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানায়, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজের জন্য প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পাকুড় ব্র্যান্ডের পাথর ও খনিজ বালুর প্রয়োজন হয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও যমুনা রেল সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্পে ব্যবহার হচ্ছে ঝাড়খণ্ডের পাকুড় ব্র্যান্ডের পাথর। যা সড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে দেশে আসছে। তবে সড়ক পথে এসব পণ্য আমদানিতে সময় ও খরচ বেশি লাগে। নৌপথে এসব পণ্য আমদানি করা হলে পরিবহন খরচ অনেক কমে যাবে। 


আরও পড়ুন: জাতির পিতার সমাধিতে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর শ্রদ্ধা


নতুন এই নদী বন্দর প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশ-ভারত নৌপ্রটোকলের আওতায় নদী পথে দুই দেশের মধ্যে কম খরচে বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবণা রয়েছে। সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌবন্দর চালু হলে নদী পথে বাণিজ্য শুরু হবে।  


তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত এই দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। সুলতানগঞ্জ-ময়া একটি লাভজনক ও চমৎকার নৌরুট হতে পারে। দুই পাড়েই অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে সুলতানগঞ্জ নদী বন্দর চালু হলে তা ঠিক হয়ে যাবে। ময়া ঘাটও প্রস্তুত করেছে। উদ্বোধন হলে পণ্য আনা নেয়া শুরু হবে।


জেবি/এসবি