অস্ত্রধারী ২২ রোহিঙ্গার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:০৩ অপরাহ্ন, ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে অস্ত্র সহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারি ২৩ রোহিঙ্গার মধ্যে ২২ জনকে ৩ দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গ্যা শুনানী শেষে ২২ জনের ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গ্রেপ্তারের পর কারাগারে থাকা মো. সাদেক নামের এক রোহিঙ্গা অসুস্থ হওয়ায় তার রিমান্ডের অনুমতি প্রদান করেননি বিচারক।
আরও পড়ুন: ঘুমধুম থেকে ১০০জন বিজিপি সদস্যকে টেকনাফে স্থানান্তর
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উখিয়ার থানার পরিদর্শক তদন্ত নাছির উদ্দিন মজুমদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে দায়ের করা অস্ত্র মামলায় ২৩ জনকে শনিবার বিকাল ৩ টার দিকে আদালতে আনা হয়েছিল। এসময় আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলেও রিমান্ড শুনানী হয়েছে সোমবার দুপুরে। বিচারক যে ২২ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে কক্সবাজার কারাগার থেকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
তিনি জানান, মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশকালে অস্ত্রসহ গ্রেফতার এই ২৩ জন সকলেই রোহিঙ্গা। যারা উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং এর বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা। স্বাভাবিক কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে এসব রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের যাওয়ার কথা না। কিন্তু কি কারণে মিয়ানমারে গেল আর তাদের হাতে অস্ত্র কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া জরুরি। রিমান্ডে এসব প্রশ্নের উত্তর বের করার চেষ্টা করা হবে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যের পাশাপাশি অস্ত্রধারী এসব রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছিল। পরে ৯ ফেব্রুয়ারি বিজিবি বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করে এদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
আরও পড়ুন: নাফনদী দিয়ে ২ রোহিঙ্গা নারীকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়নি বিজিবি
গ্রেফতার ২৩ জন কারা?
বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে দায়ের করা অস্ত্র মামলার এজাহারে ২৩ জনের নাম, ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। এজাহারে উল্লেখিত তথ্য মতে গ্রেপ্তার ২৩ জন হলেন, উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্পের মৃত কবির আহমদের ছেলে মো. হোসেন আহমদ (৩০), একই ক্যাম্পের মো. ইউনুসের ছেলে মো. রফিক (২৩), আ. রাজ্জাকের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩০), ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিকের ছেলে মো. জুনাইদ (১৯), একই ক্যাম্পের নুর কালামের ছেলে মো. হারুন (২৩), সমসের আলমের ছেলে মো. কায়সার (১৯), রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের (১৯), ১০ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছেলে ওসামা (১৯), একই ক্যাম্পের জাফর আলমের ছেলে ওমর ফারুক (১৯), মো. তোহার ছেলে মো. সাদেক (১৯), মকবুল আহমদের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৪), হামিদ হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৯), দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল (১৯), মো. হোসেনের ছেলে মো. রহিম (১৯), ১১ নম্বর ক্যাম্পের আতা উল্লাহর ছেলে নজু মোল্লা (৩৮), ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. সৈয়দের ছেলে সৈয়দ উল্লাহ (১৯), একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আহমেদ (১৯), ২০ নম্বর ক্যাম্পের মো. রশিদের ছেলে মো. জোবায়ের (১৯), কুতুপালং এলাকার ৬ নম্বর ক্যাম্পের ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ (২০), একই এলাকার ৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসেমের ছেলে এনামুল হাসান (২২), ২ ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে মো. রফিক (২৪), একই ক্যাম্পের মৃত আবুল কালামের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম (২৪), ৭ নম্বর ক্যাম্পের মৃত মো. জলিলের ছেলে মো. আরমান (২১)।
উদ্ধার ১২ অস্ত্র ও ৮ শতাধিক রাউন্ড গুলি:
এ ঘটনায় উদ্ধার হয়েছে ১২ টি অস্ত্র। যেখানে রয়েছে, এসএমজি ৫টি, জি-৩ রাইফেল ১টি, পিস্তল ২টি, রিভলভার ৪টি। গুলির মধ্যে রয়েছে এসএমজি গুলি ১৯৮ রাউন্ড, এমজি গুলি ৯৮ রাউন্ড, রাইফেলের গুলি ২৭৬ রাউন্ড, জি-৩ রাইফেলের গুলি ১০৩ রাউন্ড, পিস্তলের গুলি ১৯৩ রাউন্ড, পিস্তলের ব্যাংক কার্তুজ ২৫ রাউন্ড, রাইফেলের গ্রেনেড ফিউজ ৫ রাউন্ড, এসএমজি ম্যাগাজিন ৬টি, এলএমজি ম্যাগাজিন ৪টি, জি-৩ ম্যাগাজিন ১টি, পিস্তল ম্যাগাজিন ২টি।
আরএক্স/