বিট কর্মকর্তার উদাসীনতা
বনের জায়গায় বাড়ীঘর নির্মাণের মহোৎসব
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪
রংপুরের বদরগঞ্জে লোহানীপাড়া বনবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট কর্মকর্তা মোর্শেদ আলমের উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে দিনের পর দিন বেদখল হয়ে যাচ্ছে শতশত একর সরকারী সম্পত্তি। বছরের পর বছর ধরে বেদখল হওয়া এ সব সরকারী সম্পত্তিতে প্রকাশ্যে পাকা বাড়ীঘর, দোকানপাট ও ক্লাব সংঘ স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও যেন দেখার কেউ নেই।
বনবিভাগের সরকারী সম্পত্তি দখলের মহোৎসব যেন কোনভাবেই থামছেনা। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিট কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম ও অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত জয়নাল আবেদীনের নীরব সম্মতিতে প্রতিনিয়ত বনের জমিতে গড়ে উঠছে নতুন নতুন বাড়ীঘর ও অন্যান্য স্থাপনা। নিত্য নৈমত্তিক এমন ঘটনায় লোহানীপাড়ার সচেতন মহল রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও শাল্টিগোপালপুর রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অবগত করার পরেও কোন ফল প্রসু হয়নি। তার কারন হচ্ছে সুচতুর বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন মহলে অভিযোগ করা হলে তিনি প্রতিবারেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কাজটি খুব ভালভাবেই করতে পেরেছেন। যার ফলে তিনি শত অপকর্ম করার পরও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গেলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, অতি সম্প্রতিকালে লোহানীপাড়া বনবিভাগের সন্নিকটে সাজানো গ্রামের হামিদুল ইসলাম, কামারপাড়া গ্রামের মতি কবিরাজ, কোদাল ধোয়া এলাকার হারেছ আলী, আছান, আজাদ, সামাদ, রেজ্জাক এবং লোহানীপাড়া কোদাল ধোয়া সমবায় সমিতি সহ চিহিৃত ভুমিদস্যুরা সরকারী বনের জায়গা দখল করে প্রকাশ্য দিবালোকে পাকা বাড়ীঘর, দোকানপাট ও ক্লাব সংঘ স্থাপনা নির্মাণ করেছে। আর এই সুযোগে সংশ্লিষ্ট বিটের দায়িত্বপ্রাপÍ মোর্শেদ আলম ও জয়নাল আবেদীন ওই সব ভুমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের সাথে সক্ষতা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা সুবিধা নিয়ে বিষয়গুলো ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তাদের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে, গত শনিবার (১৭ফেব্রুয়ারী) দুপুরে কামারপাড়া এলাকায় বনের জায়গায় পাকা বাড়ীঘর নির্মানের খবর পেয়ে লোহানীপাড়া বনবিট কর্মকর্তা সহ পুরো স্টাফ ভুমিদস্যু মতির বাড়ীতে উপস্থিত হয়। এ সময় তারা নির্মাণকাজে কাজে বাধা প্রদান কিংবা ভুমিদস্যুর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে তার বাড়ীতে দুপুরে ভুরিভোজ শেষে তারা চলে আসেন।
শুধু তাই নয়, দুর্নীতিবাজ বিট কর্মকর্তা মোর্শেদ আলম ও জয়নাল আবেদীন এর আগেও সাজানো গ্রামের আনিছুল হক, মোঃ সৈয়দ আলী নামে দুইজন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদেরকে বনের জায়গায় পাকা বাড়ীঘর স্থাপনা নির্মাণ করতে সার্বিক সহযোগীতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে লোহানীপাড়া বনের জায়গায় একের পর এক নতুন স্থাপনা নির্মাণের ফলে বনের ভিতর যেন শোভা পাচ্ছে ডজনে ডজনে পাকা বাড়ীঘর। এবিষয়ে লোহানীপাড়া বিট কর্মকর্তা মোর্শেদ আলমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকের ফোন রিসিভট করেননি। ফলে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রংপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি দ্রুত দেখা হবে। ভুমিদস্যু এবং এদের সহযোগীদের কারোর ছাড় নেই।