‘আমাকে নিয়া যা’ বলে আকুতি করা বয়োবৃদ্ধা মায়ের মৃত্যু
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৩৯ অপরাহ্ন, ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪
কক্সবাজার সরকারি কলেজের সামনে রাস্তার পাশে হামাগুড়ি দিয়ে আকুতি করতে ছিলেন এক বয়োবৃদ্ধা মা। বারবার বলেছিলেন, ‘আমাকে নিয়া যা, আমাকে নিয়া যা..”। আশে পাশের লোকজন আকুতি শুনে দেখেন রোগাক্রান্ত ৮০ উর্ধ্ব এক মাকে।
পবিত্র শবে বরাতের রাত, রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) লোকজন এই মাকে নিয়ে এনে রাত ১১-১২ টার দিকে ভর্তি করে দেন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের ৯৫ সীমান্তরক্ষী আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে
ঘটনার পর থেকে ছবি সহ ফেসবুকে ঘুর বেড়াচ্ছে একটি লেখা। যেখানে অসংখ্য জন লেখেছেন, “আফসোস! যে রাতে কেউ জান্নাত খুঁজে সে রাতে আবার কেউ জান্নাত ফেলে দেয়! হৃদয়টা ভেঙে যাওয়ার মত ঘটনা, যে রাতে সন্তান তার মা বাবার জন্য দোয়া করতেছে সে রাতে শবে বরাতের পবিত্র রাতে কক্সবাজার সরকারি কলেজের সামনে সিএনজিতে এনে বয়োবৃদ্ধা, রোগাক্রান্ত একজন মহিলাকে কে বা কারা ফেলে চলে যায়। একটু দূরত্বে থাকা কিছু মানুষ কান্নার শব্দ শুনে এসে দেখে বৃদ্ধা রোগ যন্ত্রণায় ছটফট করছে আর বারবার বলছে আমাকে নিয়ে যা আমাকে নিয়া যা। বর্তমানে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চতুর্থ তলায় চিকিৎসাধীন আছে। কোনো নাম, ঠিকানা বলতে পারছে না।”
এ বিষয়টি কক্সবাজার সরকারি কলেজ সংলগ্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি, ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম বাহাদুর জানান, রাতে তিনি নিজ বাড়ির পাশের মসজিদে ছিলেন। স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন একটি অটোরিকশা (সিএনজি) যোগে কে বা কারা অন্ধকারে রাস্তার পাশে এই বৃদ্ধাকে রেখে চলে যান। তখন ‘আমাকে নিয়া যা’ বলে আকুতি শুনে কিছু মানুষ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। নাম, পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে জীপ গাড়ি খাদে পড়ে ২ নারী পর্যটক নিহত
এদিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন অবস্থায় সোমবার ভোরে এই মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান। তিনি জানান, হাসপাতালে আনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা হয়। শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন ছিলনা। চিকিৎসাকালিন সময় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য নাজমুল জানিয়েছেন, অজ্ঞাত পরিচয় বৃদ্ধার মরদেহ মর্গে রয়েছে। এখনও পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সিআইডি সদস্যরা এসে আঙ্গুলের নিয়ে গেছে। পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে।
আরএক্স/