Logo

গোপন অডিও বার্তায় পুরো বর্ণনা দিলেন নাবিক

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৩ মার্চ, ২০২৪, ২১:২৯
190Shares
গোপন অডিও বার্তায় পুরো বর্ণনা দিলেন নাবিক
ছবি: সংগৃহীত

তিন মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের পাঠানো অডিও বার্তায় জলদস্যুদের কবলে পড়ার পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’ সোমালিয়া জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। জাহাজটির  প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খান জাহাজের মালিকপক্ষের কাছে একটি গোপন অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। সেই অডিও বার্তায় তিনি জলদস্যুদের ভয়াবহ আক্রমণের বর্ণনা দেন। কেউ হতাহত না হলেও ভীতি ছড়াতে জলদস্যুরা জাহাজে ওঠেই গুলাগুলি করেছেন বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়। 

তিন মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের পাঠানো অডিও বার্তায় জলদস্যুদের কবলে পড়ার পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। একইসাথে জানিয়েছেন জাহাজ ও তাদের পরিস্থিতিও। মো. আতিক উল্লাহ তার অডিও বার্তায় জানিয়েছেন, জাহাজটিতে খাবার পানির পরিমাণ কম। আবার যেসব কার্গো রয়েছে সেগুলোও বিপজ্জনক। রয়েছে অগ্নিঝুঁকিও। সোমালিয়ান জলদস্যুরা জাহাজে ওঠার পর কার সঙ্গে কী আচরণ করেছে তাও তুলে ধরেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

তার অডিও বার্তাটি হুবহু তুলে ধরা হলো : 

“আসসালামু আলাইকুম, আমি চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান বলছি। আজকে সকালে জাহাজের সময় আনুমানিক সাড়ে ১০টার সময় একটা হাইস্পিড বোট আমাদের দিকে আসছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা এলার্ম দিয়ে ব্রিজে গেলাম। ওখান থেকে পরে সিটে চলে গেলাম। ক্যাপ্টেন স্যার ও সেকেন্ড অফিসার ব্রিজে ছিলেন। আমরা ঝিকঝাক কোর্স করলাম। তারপর এএসএস-এ করলাম। ইউকে এমটিকেও ট্রাই করলাম। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেনি। এর মধ্যে জলদস্যুরা চলে আসলো। চলে আসার পর ওরা ক্যাপ্টেন স্যার ও সেকেন্ড অফিসারকে জিম্মি করে। আমাদের ডাকল। আমরা সবাই আসলাম। আমাদের ডেকে কিছু গোলাগুলি করল। আমরা একটু ভয় পেয়েছি। সবাই ব্রিজে বসেছিলাম। কারো গায়ে হাত তোলেনি। শুধু সেকেন্ড অফিসারকে একটু মারধর করেছে। তারপর আরেকটি স্পিডবোটে করে আরও কয়েকজন চলে আসল। এভাবে মুহূর্তেই প্রায় ১৫-২০ জন চলে আসে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এর কিছুক্ষণ পরে একটি বড় ইরানিয়ান ফিশিং বোট নিয়ে আরও জলদস্যু চলে আসে। ইরানিয়ান ওই ফিশিং বোটটি এক মাস আগে তারা জিম্মি করেছিল। এটি দিয়ে তারা এক মাস ধরে নতুন কোনো জাহাজ জিম্মি করার জন্য সাগরে ঘোরাঘুরি করছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সামনে পড়ে গেলাম। এই ফিশিং বোটের তেল শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের জাহাজে থাকা পাম্প দিয়ে কিছু ডিজেল নিয়ে ওই বোটে দিয়েছে তারা। তেল দেয়ার পর আমাদের জাহাজে উঠে জিম্মি করা ফিশিং বোটটিকে ছেড়ে দেয়। তারপর ওরা আমাদের সেকেন্ড ও থার্ড অফিসারকে নিয়ে জাহাজের ইঞ্জিন রুমে যায়। তাদের নিয়ে গিয়ে জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে কারো কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। জাহাজের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমাদেরও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে সবাই ভয়ে আছি। ওরা খুব ভয় দেখাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আমাদের জাহাজে ২০-২৫ দিনের খাবার পানি আছে। সবাইকে বলেছি, এগুলো একটু সাবধানে ব্যবহার করতে। শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়ব আমরা। তবে, একটা সমস্যা হচ্ছে আমাদের জাহাজে কিছু কোল্ড কার্গো আছে। প্রায় ৫৫ হাজার টন। এগুলো একটু ডেঞ্জারাসও। ফায়ারেরও ঝুঁকি আছে। মিথেন বাড়ে। লাস্ট যখন অক্সিজেন মেপেছি তখন ৯-১০ শতাংশ লেভেল পেয়েছি। এটি নিয়মিত মনিটরিং করতে হয়। কোনো কারণে অক্সিজেন লেভেল বেড়ে গেলে বিশেষজ্ঞের মতামত নিতে হবে। এটার একটু ব্যবস্থা করবেন, স্যার। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমাদের পরিবারকে একটু দেখবেন। সান্ত্বনা জানাবেন। আসসালামু আলাইকুম।”

বিজ্ঞাপন

জেবি/এসবি

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD