ইউরিয়া মিশ্রিত মুড়ি উৎপদনের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:০১ অপরাহ্ন, ১৩ই মার্চ ২০২৪


ইউরিয়া মিশ্রিত মুড়ি উৎপদনের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা
ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদন ও বাজারজাতের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে কয়েকজন সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নওপাড়া বাজারস্থ মুড়ির মিলে উপস্থিত হলে তাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। 


বছরের যে কোন সময়ের তুলনায় রমজান মাসে বাজারে মুড়ির চাহিদা থাকে অনেক বেশী। সেই চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ীরা এই সময়ে নানা ধরণের রাসায়নিক ব্যবহার করে অধিক পরিমান সাদা ধবধবে মুড়ি উৎপাদন ও বাজারজাত করে থাকে। 


তেমনিভাবে উপজেলার নওপাড়া বাজারে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে এসে জনৈক মো. ঈশারত মোল্যা মায়ের দোয়া মুড়ি ও চিড়া অটো মিল নামক প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। 


মঙ্গলবার (১৩ মার্চ)  বিকেল সাড়ে ৫ ঘটিকায় দৈনিক কালবেলার ফরিদপুর জেলা প্রতিবেদক তন্ময় উদ্দৌলা, নাগরিক বার্তার স্টাফ রির্পোর্টার এনামুল খন্দকার ও মুক্ত খবর স্টাফ রিপোর্টার আরিফুজ্জামান চাকলাদার (আপেল) ইউরিয়া সার মিশ্রিত মুড়ি উৎপাদনের দৃশ্য ধারণকালে প্রতিষ্ঠানের মালিক তাদের উপর চড়াও হন। এসময় তারা নিজেদের পরিচয় দিলে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং মিলে কর্মরত কর্মচারীদের নিয়ে তাদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার চেষ্টাসহ তাদের উপর হামলার পাশাপাশি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এক পর্যায়ে মিল মালিক তাদেরকে মিল থেকে বের করে পাশের অফিসে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবরুদ্ধ করে রাখেন।


আরও পড়ুন: ফরিদপুরে উন্নত জাতের ঘাস চাষ প্রকল্প পরিদর্শন


সংবাদকর্মীরা বিষয়টি মোবাইল ফোনে মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এবং থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশের উপস্থিতির বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদেরকে ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা মধুখালী থানায় উপস্থিত হয়ে তাদের উপর হামলার বিবরণ তুলে ধরে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মধুখালী থানা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। 


সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়ে দৈনিক ভোরের কাগজের মধুখালি প্রতিবেদক সাংবাদিক অঞ্জন সাহা রানা বলেন, মুড়িতে ইউরিয়া মিশিয়ে উৎপাদন ভীষণ অন্যায় যা মানুষকে বিষ খাওয়ানো। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিন সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে ভেজাল মুড়ি উৎপাদকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। 


সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেন ক্যামেরার সামনে কথা বলতে না চাইলেও ঘটনার বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন।


আরও পড়ুন: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চিরকুট লিখে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা


এ বিষয়ে মধুখালি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, 'বিকালে নাগরিক বার্তার একজন সাংবাদিক আমাকে ফোন করে জানান তারা সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে খারাপ আচারণের স্বীকার হয়েছে। তার কিছু সময় পরে কালবেলার নিজেস্ব অফিস থেকে ফোন আসে তাদের জেলা প্রতিনিধি অবরুদ্ধ। তৎক্ষনাৎ আমি ওসিকে ফোর্স দিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠাতে বলি। এ বিষয়ে ভিডিও ফুটেজ পেলে আমি অবশ্যই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব। 


সরেজমিনে জানা যায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও একটি দুষ্টু চক্রকে খুশি করেই দীর্ঘদিন যাবৎ এই অপকর্মটি করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. ঈশারত মোল্যা। হামলার ঘটনার পর থেকে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।


জেবি/এসবি