ইফতার ও সেহরির সময় যা খাবেন, যা খাবেন না


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০২:৪৪ অপরাহ্ন, ১৭ই মার্চ ২০২৪


ইফতার ও সেহরির সময় যা খাবেন, যা খাবেন না
ফাইল ছবি

সারাদিন রোজা থেকে ইফতারের সময় অবশ্যই সতর্কতার সহিত খাবার বাছাই করতে হবে। আবার রোজা রাখতে সেহরিতে যেটা খেলে শরীর ক্লান্ত না হয়ে পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক, ইফতার ও সেহরিতে কি খাবেন, কি খাবেন না।


সেহরির সময় যা খাবেন: সেহরি থেকে ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙার আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় খাবার না খেয়ে থাকতে হয়। তাই সেহরি হতে হবে স্বাস্থ্যকর ও পরিকল্পিত। কেননা সারা দিন যেন রোজা রাখার শক্তি পাওয়া যায় এমন খাবার বেছে নিতে হবে। সেহরির খাবার এমন হতে হবে যেন তা সারা দিনের দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে। আবার খাবার অতিরিক্ত খাওয়াও উচিত হবে না। ভাত–রুটি, ঢেঁকিছাঁটা চালের ভাত, লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি– এই খাবারগুলোতে অনেক পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই সেহরির খাদ্য তালিকার একটা বড় অংশজুড়ে এসব খাবার রাখলে তা আপনাকে রোজার সময়ও সারা দিন সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখবে।


এছাড়াও সেহরিতে আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকলে তা দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারাদিন শক্তি জোগাতেও অনেক সাহায্য করবে। মাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, ডাল প্রভৃতি খাবার প্রোটিনের বেশ ভালো উৎস। এ ছাড়াও এসব খাবারে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, আয়রন প্রভৃতি পুষ্টি উপাদানও প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকে, যা হাড়ের সুস্থতার জন্য অনেক জরুরি। সেহরিতে দুধ গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার হতে পারে। লো ফ্যাট দুধ রক্তের কোলেস্টেরল বজায় রাখতে বেশ সাহায্য করে। এ ছাড়া দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার যেমন ঘরে বানানো দই, ছানা প্রভৃতি কিংবা কলা ও আমসহ দুধভাত শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগান দিতে সাহায্য করে। মাছ বা মাংসের বদলে সেহরির খাবারের সময় ডিম থাকলেও তা প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা পূরণ করতে পারে।


আরও পড়ুন: মাহে রমজানে পুষ্টি এবং শক্তি পাবেন যেসব খাবারে


পাশাপাশি ভিটামিন শরীরের জন্য খুবই উপকারি একটি পুষ্টকর উপাদান। তাজা শাকসবজি দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের নির্ভরযোগ্য উৎস। তাই সেহরিতে নিয়মিত সবজি খাওয়া উচিত। তবে রাতের খাবারে অতিরিক্ত আঁশযুক্ত সবজি খাওয়া ভালো না। কারণ অতিরিক্ত ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি হজমের তারতম্য করতে পারে। তার বদলে সেহরিতে মাঝারি আঁশের সবজি যেমন ঝিঙে, চিচিংগা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর প্রভৃতি খাওয়াটা বেশি স্বাস্থ্যসম্মত হবে।


সেহরির সময় যেসব খাবার খাওয়া যাবে না : সেহরির সময় অনেক বেশি তৈলাক্ত, মসলাদার এবং ঝাল খাবার খাওয়া ভালো না। সে ক্ষেত্রে সেহরির খাদ্য তালিকা থেকে  পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারি প্রভৃতি ভারি ধরনের খাবার বাদ দিতে পারেন। সেহরিতে এসব খাবার এড়িয়ে চলাই উ। পানিশূন্যতা বাড়ায় বলে সেহরির সময় অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। দেহে পানিশূন্যতা যাতে না হয়, সেদিকে বেশি নজর রাখতে হবে।


ইফতারের সময় যা খাবেন: ইফতার শুরু করতে হয় খেজুর বা খোরমা দিয়ে। সবজি এবং ফল খেতে হবে। ইফতারের সময় আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ জাতীয় খাবার খেতে হবে। ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরি। কেননা সারাদিন না খেয়ে থাকার কারণে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আবার হজমেরও সমস্যা হতে পারে। তাই ইফতারের পর সবারই পরিমাণমত পানি পান করতে হবে।


আরও পড়ুন: যে কারণে এড়িয়ে চলবেন মসলাদার ভাজা খাবার


এছাড়াও আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে লাল আটা, বিনস, বাদাম, ডাল, ছোলা ইত্যাদি খেতে হবে। কলা খেতে পারেন। কেননা প্রতিটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালরি রয়েছে। রোজার শেষে শরীর, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে কলা তাৎক্ষণিক শক্তির জোগানে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।


ইফতারের সময় যা খবেন না: অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভাল হবে। তবে খেতে হলে পরিমাণে কম খেতে হবে। সম্ভব হলে এই তালিকা থেকে পেঁয়াজু, ছোলা ভুনা, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি ইত্যাদি সববাদ দিয়ে দিতে  হবে। এর পাশাপাশি চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। তবে দুর্বলতা কাটাতে ডাবের পানি বা স্যালাইনও খাওয়া যেতে পারে।


এমএল/