তদবির ছাড়াই ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেল মিহাদ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২:৪৪ অপরাহ্ন, ১৯শে মার্চ ২০২৪


তদবির ছাড়াই ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেল মিহাদ
মো. মিহাদ খান অর্পন - ছবি: প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কোনো রকম তদবির ও টাকা পয়সা (ঘুষ) ছাড়া নিজ যোগ্যতায় সদ্য পুলিশ কনস্টেবলে চাকরি পেয়েছেন মো. মিহাদ খান অর্পন। মিহাদ আখাউড়া পৌরসভার মসজিদপাড়ার বাসিন্দা পুলিশ কনস্টেবল মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। 


মিহাদ বলেন, পুলিশে কর্মরত অবস্থায় আমার আব্বু মারা যায়। আব্বু মারা যাওয়ার পর আমাদের পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ হয়। আমি পুলিশের নিয়োগটা অনলাইনে দেখতে পেয়ে আবেদন করি। চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে মাঠে তিনদিনের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে লিখিত এবং ভাইবায় উত্তীর্ণ হয়েছি। পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ১২০ টাকায় চাকরিটা পেয়ে আমরা অনেক খুশি। চাকরিতে কোনো টাকা পয়সা লাগেনি, কারো তদবিরও লাগেনি।


আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে শিশু একাডেমিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচ


মিহাদের মা মোসা. শামীমা আক্তার বলেন, আমরা যেমন ঘুষ দিছি না,অবশ্যই বলবো ঘুষ ছাড়া চাকরি হয়, মানুষ বিশ্বাস করবে না তার পরেও বলবো এইবার সরকার প্রমাণ করেছে ঘুষ ছাড়া চাকরি হয়। 


তিনি আরও বলেন, গত বছর ২৩ অক্টোবর মিহাদের বাবা স্ট্রোক করে মারা যায়। তিনি মারা যাওয়ার পর পরিবারে উপার্জনক্ষম কোনো লোক না থাকায় অনেক কষ্ট করে জীবনযাপন করতে হয়। মিহাদের বাবার মৃত্যুর পর তার জমানো কিছু টাকা ছিল। সেই টাকা দিয়ে কিছুদিন জীবন যাপন করে। পরবর্তীতে তার বাবার রেখে যাওয়া একটি বাইক বিক্রি করে সংসারের খরচ চালান। তার পরে আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত দিনপাত করেছেন।


এবিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নূরে আলম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন স্যারের দিক নির্দেশনায় স্বচ্ছতার সাথে কোনো তদবির ও সুপারিশ ছাড়া পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ হয়। কারো সাথে কোনো আর্থিক লেনদেন যাতে না করে সেই বিষয়টি আমরা সাধারণ মানুষের কাছে প্রচার করি। সেই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধাপে পরীক্ষা শেষে আখাউড়া থেকে চারজন পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছে। তাদের প্রত্যেকের আর্থিক স্বচ্ছলতা তেমন নেই। তাদের নিজের যোগ্যতায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পুলিশ সুপার নিয়োগ দিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী গুটিদাড়া খেলা অনুষ্ঠিত


তিনি আরও বলেন, আখাউড়া পৌরসভার মসজিদপাড়ায় নিহাদ খান অর্পন নামে একজন টিকেছেন। তার বাবাও পুলিশে চাকরি করতেন। গত অক্টোবরে তার বাবা স্টোক করে মারা যাওয়ায় তার পরিবারে আর্থিক অনটন নেমে আসে। সার্কুলার পেয়ে সে পুলিশে এপ্লাই করে সকল ধাপে উত্তীর্ণ হয়ে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে। এখানে যতজনের চাকরি হয়েছে প্রত্যেককেই তাদের নিজের যোগ্যতায় মেধার ভিত্তিতে পুলিশ সুপার স্যার চাকরি দিয়েছেন। এই ছেলেটি চাকরি পাওয়ার পরে তারা যে আর্থিক অনটনে পড়েছিল এখন তারা আর্থিক স্বচ্ছলতায় ফিরে আসায় এখন তারা অনেক খুশি।


আখাউড়াবাসীর উদ্দেশ্যে ওসি মো: নূরে আলম বলেন, আগামীতে যখন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ হবে আপনারা কোনো প্রতারকের আশ্রয় নেবেন না৷ কারো সুপারিশেরও প্রয়োজন নেই। আপনারা যারা প্রার্থী হবেন আমি আশ্বস্ত করছি আপনাদের নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে আমাদের পুলিশে চাকরি হবে।


জেবি/এসবি