কৃষকের দামে তরমুজ কিনতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, ২৮শে মার্চ ২০২৪


কৃষকের দামে তরমুজ কিনতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়
ছবি: সংগৃহীত

‘কৃষকের পণ্য, কৃষকের দামে’ এ স্লোগান নিয়ে রাজধানীর পাঁচটি স্থানে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ অ্যাগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফা)।


বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর খামারবাড়ির বঙ্গবন্ধু চত্বরে এ কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ অ্যাগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন।


আরও পড়ুন: ঢাকায় কৃষকের দামে তরমুজ মিলবে বৃহস্পতিবার থেকে


কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রি শুরুর আগে থেকেই খামারবাড়িতে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। তরমুজ বিক্রি কার্যক্রম শুরুর পর সেই ভিড় আরও বেড়ে যায়। সাধারণ বাজার দরের তুলনায় অনেক কম দামে তরমুজ কিনতে পারায় তপ্ত রোদে তীব্র গরমেও লাইনে দাঁড়িয়েও খুশি ক্রেতারা।


বাফার এ কার্যক্রম থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে ১০ কেজির বেশি ওজনের একটি তরমুজ কিনেছেন মনিপুরিপাড়ার বাসিন্দা নাজমুল। তিনি বলেন, কষ্টটা সার্থক হয়েছে। তবে তরমুজের ভেতরে কেমন হবে সেটি বোঝা যাচ্ছে না। কেটে ও মেপে নিতে পারলে আরও ভালো হতো।


খামারবাড়িতে বাফার উদ্যোগে কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রির এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। 


উদ্বোধন শেষ তিনি বলেন, ফুলে ফলে ভরা আমাদের বাংলাদেশ। আমাদের প্রিয় ফল হচ্ছে তরমুজ। রমজান মাসে ইফতারের সময় তরমুজ খাওয়াটা খুবই তৃপ্তির, আনন্দের। এ তরমুজ যারা চাষ করে সেই কৃষকের উন্নতির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, দেশের মানুষ যাতে ফসল উৎপাদন করে খেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করার জন্য। এ কথা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাফা আমার সঙ্গে যখন পরামর্শ করতে এলো, তখন আমি তাদের বললাম, ভোক্তারা তরমুজ খেতে চায়, কিন্তু কিনতে পারছে না। আপনারা সংগ্রহ করুন। এরপর তারা বরিশালসহ দেশের অন্যান্য জায়গায় গেছে। এটি সিন্ডিকেট ভাঙার একটি বড় উদ্যোগ।


এ সময় তিনি সিন্ডিকেটের তথ্য গণমাধ্যমে তুলে ধরে সেটি ভাঙতে সহযোগিতা করার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।


বাফার মতো সরকারিভাবে তরমুজ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার তো জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ন্যায্যমূল্য পণ্য বিক্রির কার্যক্রম নেয়। কিন্তু সব উদ্যোগ সারা দেশে একসঙ্গে নেওয়ার মতো জনবল ও বিশেষজ্ঞ নেই। তারপরও আমরা জনগণের মঙ্গলের জন্য যতটুকু পারছি কাজ করে যাচ্ছি।


বাফার পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ২৭ রমজান পর্যন্ত রাজধানীর পাঁচটি স্থানে কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রি করা হবে। স্থানগুলো হলো- খামারবাড়িতে বঙ্গবন্ধু চত্বর, উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের জমজম টাওয়ার, সচিবালয়ের সামনে আব্দুল গণি রোড, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন এবং পুরান ঢাকার নয়াবাজার।


এসব স্থানে কৃষকের দামে ৫ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ১০০ টাকা, ৭ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ১৫০ টাকা, ৯ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২০০ টাকা, ১১ কেজির বেশি ওজনের তরমুজ ২৫০ টাকায় পিস হিসাবে বিক্রি করা হবে।


আরও পড়ুন: ম্যাজিস্ট্রেট দেখেই ৫০০ টাকার তরমুজ হয়ে গেল ২০০টাকা!


এ বিষয়ে বাফার সভাপতি এ কে এম নজিব উল্লাহ বলেন, কৃষকরা যে মূল্যে পণ্য উৎপাদন করে এবং বিক্রি করে ভোক্তারা সেই দামে পণ্য পায় না। ভোক্তারা কয়েকগুণ বেশি দামে সেই পণ্য কিনে। যার ফলে পণ্যের দামের তফাত অনেক বেশি দেখি। এটা সমন্বয় হওয়া দরকার। মধ্যস্বত্বভোগীরা লভ্যাংশটা খেয়ে ফেলে, তাদের আটকাতে হবে। এজন্য আমরা কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রির এ উদ্যোগটি নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা সারা দেশের মানুষকে দেখাতে চাই, তরমুজের দাম বেশি না। কিন্তু বেশি দামে এটি বিক্রি হচ্ছে।


তিনি বলেন, তরমুজের দামের সমন্বয় না হলে, তখন আমরা আমাদের এ কার্যক্রম বাড়াবো। শুধু তরমুজ নয়, যে পণ্য নিয়ে খেলা হবে, সেই পণ্য নিয়ে আমরা মাঠে থাকবো। কৃষক যাতে সব সময় লাভবান হয়, ভোক্তারাও যাতে ন্যায্য মূল্যে পণ্যটা পায় আমরা সেই চেষ্টা করবো।


জেবি/এজে