অপহরণ সহ সকল অপরাধ বন্ধে পুলিশ-জনতার ঐক্য চান কক্সবাজারের এসপি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫:৪৬ অপরাহ্ন, ৩রা এপ্রিল ২০২৪
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ কেন্দ্রিক অপহরণ সহ সকল অপরাধ বন্ধে পুলিশ-জনতার ঐক্য চান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ২ শত করে ৪ ইউনিয়ন থেকে ৮ শত মানুষ এক হয়ে এগিয়ে আসুন। এই ৮ শত স্থানীয় জনতাকে সাথে নিয়ে টেকনাফ-উখিয়ার পাহাড়ে-পাহাড়ে পরিচালিত হবে সাঁড়াশি অভিযান। অপহরণকারি দূর্বৃত্তদের শেকড় কেটে দেয়া হবে। কোনভাবেই আর একটি মানুষও অপহরণ দেখতে চাই না পুলিশ।
পুলিশ পাহাড়ে উঠা বা পাহাড়ি পথ সম্পর্কে জ্ঞাত নন মন্তব্য করে পুলিশ সুপার বলেন, আপনাদের পরিবারের সন্তান অপহরণ হচ্ছে। আপনারা চুপ থাকবেন না। এগিয়ে আসুন, পুলিশকে পথ চিনতে সহযোগিতা করুণ। পুলিশ আপনাদের পাশেই রয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে টেকনাফের রঙ্গিখালী মাদ্রাসায় অপরাধ প্রতিরোধ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ডাকাতি: বান্দরবানের সব উপজেলায় বন্ধ সোনালী ব্যাংক
টেকনাফের পাহাড় কেন্দ্রিক একের পর এক অপহরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে টেকনাফ উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের উদ্যোগে টেকনাফ-উখিয়ার জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে আয়োজন করা হয় এই সভা।
সভায় উপস্থিত জনপ্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে এই জনপদ এক সময় শান্তি-শৃঙ্খলার জনপদ ছিল। ২০১৭ সালে বাস্তুচ্যূত মিয়ানমারের নাগরিক আসার পর অশান্ত হয়ে উঠেছে এমন কথা পুলিশ আমলে নিয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার সকলকে নিয়ে প্রতিরোধ করার আহবান জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আইন আইনের গতিতে চলবে। এখন আপনারা রোহিঙ্গাদের বাড়ি ভাড়া দেয়া বন্ধ করুণ। আপনারাই বলেছেন রোহিঙ্গারা অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। অশান্তি সৃষ্টি করছে। এ পরিস্থিতিতে এখন থেকে কোন ভাড়া বাসায় রোহিঙ্গা পাওয়া গেলে মামলা করা হবে। একই মামলায় আসামি করা হবে মালিককেও। আইনে অবৈধ লোকজনকে বাড়ি ভাড়া দেয়ার নিয়ম নেই। এখন থেকে উখিয়া টেকনাফের পুলিশ বিষয়টি কঠোরভাবে দেখবে। যাদের বাংলাদেশী জাতীয়তা পরিচয়পত্র নাই তাদের বাড়ি ভাড়া দেয়া অপরাধ। এটার জন্য পুলিশ কঠোর হবে। না হলে অপহরণ, চোরাচালান, মাদকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। এটা আমাদেরকে বন্ধ করতে হবে।
অপরাধে জড়িত দূর্বৃত্তদের সম্পর্কে এসপি বলেন, আপনারা যত বড় শক্তিশালী বা ক্ষমতাধর হন না কেন আইনের হাত তার চেয়ে অনেক বড়। কোন ভাবেই পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আপনি যেভাবে রঙ পরিবর্তন করবেন আপনার সমাজের মানুষই আমাকে জানিয়ে দেব। তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: অপহরণের ১৫ ঘন্টায়ও খোঁজ মেলেনি বান্দরবানের সেই ব্যাংক ম্যানেজারের
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী, হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১৮ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬০ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের তথ্য বলছে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫২ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
এমএল/