২০০০ কোটি টাকা পাচার: ফরিদপুরের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১৪ অপরাহ্ন, ২২শে এপ্রিল ২০২৪
বহুল আলোচিত ২০০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ফরিদপুরের দুই ভাইসহ ৪৭ জনের নামে দেওয়া সম্পূরক চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার (২২ এপ্রিল) ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামস জগলুল হোসেন এ চার্জশিট গ্রহণ করেন ।
এদিন কারাগারে থাকা দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেল এবং এ এইচ এম ফুয়াদকে আদালতে হাজির করা হয়। অন্যদিকে জামিনে থাকা সাত আসামি আদালতে হাজির হন।
পলাতক বাকি ৩৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে রয়েছেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, খোন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর, এ এইচ এম ফুয়াদ, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, কামরুল হাসান ডেভিড, মুহাম্মদ আলি মিনার ও তারিকুল ইসলাম ওরফে নাসিম।
এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থনা মতে মৃত মাহবুবুর রহমান ওরফে খান মাহবুব, রেজাউল করিম পান্না, আব্দুস সাদেক মুকুল, রুবিয়া বেগম ও বিপুল ঘোষকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: দুই মামলায় ট্রান্সকম গ্রুপের তিন কর্মকর্তা রিমান্ডে
এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) উত্তম কুমার সাহা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। এরপর মামলাটি বদলি হয়ে বিশেষ জজ আদালত-৯ এ আসে। এ আদালতে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর চার্জশুনানির দিনে চার্জশিটে কিছু অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে সেই আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে আদেশ দেন।
সে অনুযায়ী গত বছর ২২ জুন মোট ৪৭ জনকে অভিযুক্ত করে নতুন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা-সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন। যেখানে শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ ১০ জনের সঙ্গে অধিকতর তদন্তে আরও ৩৭ জনের নাম আসে।
এরপর অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য গত বছর ৫ জুলাই এখতিয়ার সম্পন্ন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৬ জুন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা দায়ের করেন সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।
আরও পড়ুন: পার্সেল করে মদ নিতে না পারায় বোট ক্লাবে তান্ডব চালান পরিমনি
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফরিদপুরে এলজিইডি, বিআরটিএ, সড়ক বিভাগসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বরকত ও রুবেল। এছাড়া মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল করে অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তারা। ২৩টি বাস, ট্রাকসহ বিলাসবহুল গাড়ির মালিক হয়েছেন ওই দুই ভাই।
উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করেছেন তারা। রাজবাড়ীতে ১৯৯৪ সালের ২০ নভেম্বর এক আইনজীবী খুন হন। সেই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন বরকত ও রুবেল।
এজাহারে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের ১৮ জুন মিরাজ আল মাহমুদ তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, বরকত ও রুবেল অন্তত দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।
জেবি/এসবি