কুবি উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলন: পাল্টাপাল্টি অভিযোগ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯:৩৯ অপরাহ্ন, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪


কুবি উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলন: পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
ছবি: প্রতিনিধি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি-ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যকার ত্রিমুখী সংঘর্ষের পর উপাচার্য ড. এফএফএম আবদুল মঈন এবং শিক্ষক সমিতির নেতারা আলাদা আলাদা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন।


রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে সংঘর্ষের পর বিকাল ৫টার দিকে উপাচার্য এবং সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিক্ষক সমিতি সংবাদ সম্মেলন করে।


এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী নির্বাচিত হয়ে তারা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসে এবং সেখানে আমার সাথে তারা উচ্চবাচ্য করে, হুমকি-দামকি করে, গালিগালাজ করে। আমি তাদেরকে বারবার বলেছি, আপনারা আসুন, আলোচনা করি। উনারা কোন রেসপন্স করে নাই। আমি উনাদের দাবির প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট ডেকে কমিটি গঠন করেছি, কিন্তু উনারা সেটি মানলো না। উনাদের সাতটি দাবির চারটি পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু তারা কি করলো? ভিসি, আমার ট্রেজারারকে, আমার প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলো। ট্রেজারার স্যারকে রাত ৮টা অব্দি গেইটে রেখেছে। দপ্তরগুলোতে তালা দিয়েছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাকে এখানে নিয়োগ দিয়েছে, তারা আমাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কিভাবে?


তিনি আরো বলেন, আজকে আমি প্রবেশ করতে গেলে উনারা (শিক্ষক সমিতি) আমার উপর আক্রমণ করেন। বিশেষ করে সেক্রেটারি মেহেদী হাসান, প্রত্নতত্ত্বের মোর্শেদ রায়হান আরেকজন হলো মার্কেটিংয়ের একজন জুনিয়র শিক্ষক মাহফুজ। এই মাহফুজ ছেলেটা আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিতে চেয়েছিলো। উনারা কিভাবে একজন ভিসির গায়ে হাত তুলেন এটা আমার জানা নেই। আমিতো ভিসি ছাড়াও একজন সিনিয়র শিক্ষক!


আরও পড়ুন: কুবিতে উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি-ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষ: আহত অনেকেই


পরবর্তীতে শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, 'আমাদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে যে তিনটি দপ্তর তালাবদ্ধ ছিল সেগুলো প্রক্টরের নেতৃত্বে অছাত্র-বহিরাগত, বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার আসামিদের দ্বারা তালা ভেঙে ফেলেছে। কিন্তু আমরা কোন সংঘর্ষে যাইনি। উনি আসার সময় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম, উনি(উপাচার্য) আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলেন, মোর্শেদ রায়হান স্যারকে কনুই দিয়ে আহত করেন, মাহফুজুর স্যারকে ঘুষি মারেন। সকল অছাত্ররা তখন আমাদের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়েছেন। কিন্তু আমরা কেউ সেখানে যাইনি। শান্তিপূর্ণভাবে এখানে অবস্থান করেছি। অথচ কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টরের মদদে অছাত্র, সন্ত্রাসীরা শিক্ষক সমিতির অফিসে লাথি মারে এবং তালা ভাঙার চেষ্টা করেন।


তিনি  আরো বলে, পরবর্তীতে ঐ সন্ত্রাসীরা আবারো আমাদের উপর হামলা করে, সাবেক সভাপতি শামিমুল স্যার লাথি দিয়ে নিচে ফেলে মারধর করে। শুধু তারাই নয়, উপাচার্য নিজে সন্ত্রাসী স্বরূপ হয়ে হামলা করেছেন, শিক্ষকদেরকে কিল-ঘুষি মেরে তিনি কার্যালয়ে গিয়েছেন।


এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ-প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দপ্তরে তালা দেয় শিক্ষক সমিতি। পরবর্তীতে (২৭ এপ্রিল) কোষাধ্যক্ষকে গাড়িসহ অবরুদ্ধ করে রাত সাড়ে ১২টা অব্দি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান করেন।


রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে প্রক্টরের নেতৃত্বে দপ্তরের তালা ভাঙার খানিকবাদে উপাচার্য নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে প্রবেশ পথে উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি-ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উপাচার্য কার্যালয়ে যাওয়ার পরে শিক্ষক সমিতি এবং ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের মাঝে কয়েকদফা হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। সেখানে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ ছাত্রলীগেরও কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।


এমএল/