কুবি প্রশাসন-শিক্ষক সমিতির পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:০৯ অপরাহ্ন, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪


কুবি প্রশাসন-শিক্ষক সমিতির পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ
ছবি: প্রতিনিধি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক সমিতির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকদের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টরের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলে ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে শিক্ষক সমিতি। অপরদিকে শিক্ষক সমিতির নেতারা উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টরকে শারীরিক হেনস্থা করেছেন উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


শিক্ষক সমিতির পক্ষ হতে বাদী হয়ে সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার সাদেক হোসেন মজুমদার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।


বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান, প্রত্নতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোরশেদ রায়হান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামিমুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাহফুজুর রহমানকে বিবাদী করেন।


তাছাড়া অভিযোগের সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ রাখেন, কোষাধ্যক্ষ ড. মোঃ আসাদুজ্জামান, প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী, শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাহেদুর রহমান, সহকারী প্রক্টর মো. জাহিদ হাসান, সহকারী প্রক্টর মো. মোশারফ হোসাইন।


অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির তার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈন, কোষাধ্যক্ষ ড. মো. আসাদুজ্জামান, প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী সহ আমিনুর রহমান বিশ্বাস, রেজা-ই-এলাহী, মাসুদ আলম, ইকবাল হোসাইন খান, পার্থ সরকার, বিপ্লব চন্দ্র দাস, ইমরান হোসাইন, মুশফিকুর রহমান খান তানিম, রকিবুল হাসান রকি, মেহেদী হৃদয়, ফয়সাল হাসান, এম নুর উদ্দিন হোসাইন, অনুপম দাস বাঁধন, আরিফুল হাসান খান বাপ্পী, ইমাম হোসাইন মাসুম। এছাড়া বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে  রাকিব হোসেন এবং দ্বীপ চৌধুরীকে বিবাদী করেছেন।


আরও পড়ুন: কুবি উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ-প্রক্টরসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ


শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু তাহের তার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, নিজ কার্যালয়ে প্রবেশের সময় উপাচার্য এএফএম আবদুল মঈন সহকারী অধ্যাপক মোঃ মুর্শেদ রায়হান এর পেটে ঘুষি মারেন এবং পেছন দিক থেকে কনুই দিয়ে আঘাত করেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা সন্ত্রাসীরা মুর্শেদ রায়হান এর পেটে ঘুষি মেরে প্রশাসনিক ভবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। একই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মোকাদ্দেস উল ইসলাম এর মুখে সজোরে ঘুষি মারেন। এরপর তারা সকলে মিলে মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে শারীরিক আঘাত করে। এ সময় আরো অন্তত ২০জন শিক্ষক হামলার শিকার হন। উপাচার্য কার্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান উক্ত বহিরাগত সন্ত্রাসীদেরকে শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে হামলা ও তালা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।


অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, পরবর্তী সময়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা শিক্ষক লাউঞ্জে হামলা করে এবং প্রশাসনিক ভবনের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষকদের উপর পুনরায় হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা এ পর্যায়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ শামিমুল ইসলামকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং উপর্যুপরি শারীরিক হামলা করে। পরবর্তী সময়ে অধ্যাপক শামিমুল ইসলামসহ লোকপ্রশাসন বিভাগের জান্নাতুল ফেরদৌস, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুল করিম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা গ্রহণের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা পুনরায় তাদের উপর শারীরিক হামলা করে। এ সময় প্রক্টোরিয়াল বডি ও কতিপয় শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের নানাভাবে হুমকিধামকি প্রদান করেন।


আরও পড়ুন: জাবির অনুষদ ভিত্তিক ডিন নির্বাচন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে ৩০ জন


অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ হতে সাদেক হোসেন মজুমদার অভিযোগ পত্রে বলেন, 'শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন দাবী এর বিষয় নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বিবাদীদের মত বিরোধ চলমান ছিলো। সে বিরোধকে কেন্দ্র করে বিবাদীরা উপাচার্যসহ অভিযোগপত্রে বর্নিত সাক্ষীদের উপর চড়াও হয়ে গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকের সামনে দাঙ্গা হাঙ্গামার উদ্দেশ্যে সমবেত হন। ঐ সময় উপাচার্যসহ বর্নিত সাক্ষীগণ তাদের নিজ নিজ কর্মস্থল কক্ষে প্রবেশের সময় বাধা দেন এবং সম্মানহানি করে।


অভিযোগ পত্রে আরো বলেন, ঐ সময় বিবাদীরা বর্নিত সাক্ষীদেরকে এলোপাথারী কিলঘুষি মেরে জখম করে। উপাচার্যসহ সাক্ষীদের কাজে বাধা প্রদান করে তাদের সরকারী কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকসহ লোকজন এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উপাচার্যসহ বর্নিত সাক্ষীদেরকে উদ্ধার করেন। বিবাদীরা প্রকাশ্যে উপাচার্যসহ বর্ণিত সাক্ষীদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।'


জেবি/এসবি