টেকনাফের অপহৃত শিশু উদ্ধার, গ্রেফতার ৫


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:০০ অপরাহ্ন, ১লা মে ২০২৪


টেকনাফের অপহৃত শিশু উদ্ধার, গ্রেফতার ৫
ছবি: জনবাণী

কক্সবাজারের টেকনাফে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের দুইদিন পর মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব; এসময় ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


বুধবার (১ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন, র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের আওতাধীন টেকনাফ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর হাসান শিথিল।


আরও পড়ুন: টেকনাফে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ৪০০ কেজি ওজনের তলোয়ার মাছ


উদ্ধার হওয়া শিশু মো. সাইফ (৯) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোছনের ছেলে। সে স্থানীয় জাদিমুরা রহমানিয়া হোসাইনিয়া মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র।


গ্রেফতাররা হল, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার নুর আলমের ছেলে মো. সাব্বির (১৭), একই এলাকার ছৈয়দ হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (১৬), আবুল কালামের ছেলে আকতার কামাল (২৬) ও নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-৫ ব্লকের বাসিন্দা আবুল ফয়েজ ওরফে মাঝির ছেলে হাসান বশর (১৯) এবং সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার মৃত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. সেলিম (৪৭)।


গ্রেফতারদের স্বীকারোক্তির বরাতে র‌্যাব জানিয়েছে, মাদ্রাসা থেকে ক্লাশ শেষে ফেরার পথে টাকার লোভ দেখিয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যরা মো. সাইফকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। স্থানীয় ও রোহিঙ্গা ১২/১৫ জনের কম বয়সি কিশোর মিলে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তোলে অপহরণসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল।


রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া নয়াপাড়া শালবাগান রাস্তার মাথা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে এ ঘটনায় ওই ছাত্রকে উদ্ধারের জন্য এক মামা বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।


সংবাদ সম্মেলনে তানভীর হাসান শিথিল বলেন, গত ২৮ এপ্রিল বিকালে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করা হয়। প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসা ছুটি হয়ে রাত হলেও ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা তাকে খুঁজতে বের হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। মঙ্গলবার সকালে একটি মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে কল করে সাইফকে পেতে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলবে হুমকি দিয়ে মোবাইল কলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।


“ ঘটনার ব্যাপারে অপহৃত শিশুর স্বজনরা থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি পরে র্যাব অবহিত হয়। এরপর থেকে শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও অভিযান শুরু করে।”


আরও পড়ুন: মিয়ানমারের নৌবাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে টেকনাফের ২ জেলে আহত


র‌্যাবের এ কোম্পানী অধিনায়ক বলেন, “ অভিযানের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার বিকালে র্যাব খবর পায় অপহৃত মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীসহ অপহরণকারিরা টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়ায় অবস্থান করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে জনৈক মো. সেলিমের আস্তানা থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া দিয়ে অপহরণ ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”


গ্রেফতারদের টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর হাসান শিথিল।


এর আগে গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের পরিবারের তথ্য বলছে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।



আরএক্স/